![](https://ajkalerkhobor.net:443/2023/12/10/ak_1702212969.JPG)
সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৫ বছরের অধ্যাপনার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে তিনি কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে কানাডার ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটি থেকে দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে কমনওয়েলথ স্টাফ ফেলোশিপ নিয়ে যুক্তরাজ্যের বাথ ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্ট-ডক্টরেট সম্পন্ন করেন। অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী তথ্য কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য, শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সদস্য, সিনেট সদস্য এবং জাতীয় শিক্ষানীতি কমিটি-২০০৯-এর কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী। তিনি রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় হতে বিকম (অনার্স) এবং এমকম মার্কেটিং-এ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে জাপানের ইয়োকোহামা ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ভোক্তা আচরণে মার্কেটিং-এ এমবিএ এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করার পর তিনি রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপালন করেছেন। ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের পরিচালক, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের বোর্ড সদস্য, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রোফেশনালসের সিন্ডিকেট সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদের ডিন, সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা এবং দায়িত্ব পালন করেন।
অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ এবং প্রথম নারী উপাচার্য। ২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে গৃহীত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন বলে পূর্বতন জগন্নাথ কলেজের শিক্ষার্থীরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে গণ্য হয়। তাদের নিয়ে অল্প কয়েকটি বিভাগের মাধ্যমে বিশ^বিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম চালু হয়। পরবর্তীতে যুগোপযোগী অনেক বিভাগ খোলা হয়। ২০১২ সালের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় আইনের ২৭(৪) ধারা বাতিল হলে এটি একটি পরিপূর্ণ স্বায়ত্বশাসিত বিশ^বিদ্যালয় হিসেবে পথচলা শুরু করে। সঙ্গীত, চারুকলা, নাট্যকলা বিভাগ খোলার মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়কে পুরান ঢাকার সাংস্কৃতি কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে রূপান্তরিত করা হয়। পহেলা বৈশাখে পুরান ঢাকার প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে এ কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। স্বল্প সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি আন্তর্জাতিক সঙ্গীত উৎসব আয়োজন করে বিশ^বাসীর নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে। পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের বয়স বিশ^বিদ্যালয় হিসেবে ১৯ বছর হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বয়স দেড়শত বছরের উপরে। পুরান ঢাকার আদি কৃষ্টি, কালচার সম্পন্ন প্রতিষ্ঠানটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও অবকাঠামোগত স্বল্পতা রয়েছে। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরেই শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় পছন্দের তালিকায় রয়েছে জগাবাবুর পাঠশালা খ্যাত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার গুনগতমান, ভৌগোলিক অবস্থান এবং রাজধানী ঢাকার বুকে অবস্থিত হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলের পছন্দের তালিকার শীর্ষের দিকে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি অনুষদে ৩৬টি বিভাগ ও দুটি ইনস্টিটিউটে ১৫ হাজার ৯৬০ জন শিক্ষার্থী, ৬৭৮ জন শিক্ষক ও প্রায় ৭০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি মেধাবিকাশের জন্য রয়েছে সাংস্কৃতি কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদ, চলচিত্র সংসদ, ডিবেটিং সোসাইটি, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ফটোগ্রাফিক সোসাইটি, আইটি সোসাইটি, রঙ্গভূমি, সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি, ফিল্ম ক্লাব, ক্যারিয়ার ক্লাব, মাইম সোসাইটি। সেবামূলক সংগঠন হিসেবে রয়েছে বাঁধন, রোভার স্কাউটস, রেঞ্জার ইউনিট, বিএনসিসি। সবার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য রয়েছে সাংবাদিক সমিতি, রিপোর্টার্স ইউনিটি, প্রেসক্লাব সহ নানা মাধ্যম। বিশ্বের একমাত্র অনাবাসিক পাবলিক বিশ^বিদ্যালয় হিসেবে যাত্রাশুরুর ১৫ বছর পর ২০২০ সালে উদ্বোধন করা হয় বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। বর্তমান ক্যাম্পাসে জায়গার সংকুলন না হওয়ায় ঢাকার কেরানীগঞ্জে ২০০ একর জমির উপর নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের কাজ চলমান। ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন করে বর্তমানে উন্নয়ন প্রকল্প চলছে। ইতোমধ্যে দৃষ্টিনন্দন লেক খননের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
যোগদানকৃত উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরীর কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রয়েছে অনেক প্রত্যাশা। বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত অধিকাংশ সিনিয়র শিক্ষক-কর্মকর্তারা যোগদান করেছেন বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠান থেকে ফলে তাদের অতীত চাকরিকাল গণনা, পেনশন, ছুটি, বেতন স্কেল নির্ধারণ, বিভিন্ন ভাতা, সিনিয়রিটি সহ বিভিন্ন বিষয়ে নানা সময়ে জটিলতা দেখা দেয়। নবীন বিশ^বিদ্যালয় হিসেবে আপৎকালীন সময়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন আইন-কানুন, নিয়ম-নীতি আত্নীকরণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। নিজস্ব আইন-কানুন ও নিয়ম-নীতি তৈরী করার জন্য সবাই সচেষ্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইনস্টিটিউট, বিভাগ, দপ্তরের অনুকূলে বরাদ্ধকৃত পদগুলো বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে ছাড়করণের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণীতে অস্থায়ী, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকৃত শিক্ষকমণ্ডলীদেরকে স্থায়ীকরণের পাশাপাশি দৈনিক হাজিরাভিত্তিক বা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণের একটা দাবি রয়েছে সর্বত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সকলের মনের ইচ্ছা, উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ মহোদয় বিষয়গুলোর সমাধানের উদ্দ্যোগ গ্রহণ করবেন। শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবী নতুন ক্যাম্পাসের চলমান কাজকে গতিশীল করে যত দ্রুত সম্ভব নতুন ক্যাম্পাসে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করার একটা চ্যালেঞ্জ থাকবে যোগাদানকৃত উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ মহোদয়ের। ১৯ বছরের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হলেও দ্বিতীয় সমাবর্তনের অপেক্ষায় রয়েছেন শিক্ষাজীবন শেষ করা অসংখ্য শিক্ষার্থী। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) গঠনের দাবী জানিয়ে আসছে। বিশ^বিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির চর্চার প্রেক্ষাপট তৈরীর মাধ্যমে সরকার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে স্মার্ট ছাত্রনেতা এবং শিক্ষার্থী খুঁজে বের করার জন্য যা অপরিহার্য বলে মনে করেন অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা। বিশ^বিদ্যালয়ের একমাত্র খেলার মাঠ ধুপখোলা মাঠটি সম্প্রতি বেহাত হওয়ায় নতুন ক্যাম্পাসে খেলার মাঠ তৈরী করা সময়ের অন্যতম দাবী মনে করে তারা। ছাত্র রাজনীতির আতুরঘর খ্যাত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যাতে কোনো ধরনের অস্থিরতা তৈরী না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ মহোদয়কে। বাংলাদেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ^বিদ্যালয় থেকে একটু ভিন্ন ধরনের অবস্থা বিরাজ করে বিশ^বিদ্যালয়টিতে কারণ এটি নতুন বিশ^বিদ্যালয় হওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষকমণ্ডলী এবং কর্মকর্তারা এসেছেন দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় হতে। বর্তমানে বিশ^বিদ্যালয়টিতে প্রায় দেশের সনামধন্য সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন। ফলে সকলকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দেশের অন্যান্য পুরানো এবং প্রতিষ্ঠিত বিশ^বিদ্যালয়গুলোতে আঞ্চলিকতার বলয় তৈরী হলেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আঞ্চলিকতার পাশাপাশি নিয়োগকৃতদের পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আলাদা আলাদা বলয় রয়েছে। শিক্ষক (প্রভাষক) এবং কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত বলে মনে করে থাকেন অধিকাংশ সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হওয়ায় এ্যালামনাই গঠনের ক্ষেত্রে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে স্নায়ু-যুদ্ধ হয়ে থাকে তা প্রশমিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনকে। এ বিষয়ে একটি সুনির্দ্দিষ্ট নীতিমালা তৈরী বড় ধরণের কাজ হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষা থেকে শুরু করে যে কোনো চাকরির পরীক্ষায় প্রথম সারিতে অবস্থান করে থাকেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষার্থীরা। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও কৃতি শিক্ষার্থীরা তাদের লব্ধজ্ঞান প্রয়োগ করে বিশ্বের বিভিন্ন নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী হিসেবে সুযোগ করে নিয়েছেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি ক্রীড়া এবং সংস্কৃতি অঙ্গনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। জগন্নাথ কলেজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জগন্নাথ কলেজের শিক্ষার্থীদের ছিলো অগ্রণী ভূমিকা। ব্রিটিশ বিরোধী প্রথম নাটক মঞ্চস্থ করেছিলো জগন্নাথ কলেজের শিক্ষার্থীরা। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে শহীদ হন শিক্ষার্থী রফিক। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে জগন্নাথ কলেজের অনেক শিক্ষার্থী শাহাদৎ বরণ করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান বিজ্ঞান ভবনের সামনে ছিলো একাত্তরের পাক-হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্যটি দেশের একমাত্র ভাস্কর্য যেখানে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি এবং গণহত্যা ফুটে উঠেছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণা করলে তার পক্ষে ’৬৬ সালে সর্বপ্রথম মিছিল করেছিলেন তৎকালীন জগন্নাথ কলেজের শিক্ষার্থীরা। বাংলা সাহিত্যের প্রাণপুরুষ নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বাঙালি জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদধুলি পড়েছিলো দেড়শত বছরের পুরনো শিল্প সাহিত্য এবং রাজনীতির আতুরঘরখ্যাত এই জগন্নাথের ক্যাম্পাসে।
ছোট ক্যাম্পাস, জায়গার অপ্রতুলতা, নানা সীমাবদ্ধতা, গবেষণাগারের অভাব, ছাত্রহল বিহীন একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই চেষ্ঠা করে যাচ্ছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করার জন্য। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। আজকের শিক্ষার্থীদের হাত ধরে একদিন বিশ^মঞ্চে মাথা উচু করে দাড়াবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
বেশ কয়েকবছর যাবত জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় থেকে উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি দাবী পেশ করে আসছেন। বর্তমান উপাচার্য ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় এবং কোষাধ্যক্ষ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়োগ লাভ করেছেন ফলে তাদের দুজনের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় এবং সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্ঠায় প্রথম কাতারে শামিল হবে বলে সবাই বিশ্বাস করেন। যোগদানকৃত উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি মডেল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আগামীর পথে এগিয়ে যাবে সেশনজট মুক্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রত্যাশা রইল কারন তারা উভয়েই একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কাজে অত্যন্ত দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে আজকের অবস্থানে আসীন হয়েছেন।
হেদায়েত উল্লাহ তুর্কী : ডেপুটি রেজিস্ট্রার এবং সাবেক শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
আজকালের খবর/আরইউ