বঙ্গবন্ধুর গ্রাফিতি মুছে ধর্ষণ বিরোধী গ্রাফিতি অঙ্কনের ঘটনায় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংসদের দুই নেতাকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে মশাল মিছিল করেছে সংগঠনের নেতা কর্মিরা।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বর থেকে মশাল মিছিল শুরু হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নেয়।
এসময় বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সংগঠক সোমা ডুমরি বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্ট রুম, র্যাগ কালচার বন্ধ হয় না; বিচার হয় না৷ তিন বছর আগের মুছে যাওয়া প্রতিকৃতির জায়গায় ছাত্র ইউনিয়ন একটা গ্রাফিতি এঁকেছে। সেখানে এত দ্রুত তদন্ত কমিটি করে বহিষ্কার দিয়ে দিল। আমরা এ ঘটনায় ধিক্কার জানাই৷ তাদের বহিষ্কার বাতিল না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে৷
ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদিয়া মুন বলেন, প্রশাসন ভেবেছে তাদের বহিষ্কার দিয়ে দিলে সকল যৌক্তিক আন্দোলন রুখে দেয়া সম্ভব হবে। তাহলে গাছ কাটা যাবে, দালান তোলা যাবে, মাস্টারপ্ল্যান ছাড়াই; কোনো দায়বদ্ধতা ছাড়াই কাজ করা সহজ হবে। যারা ন্যায়ের পক্ষে কথা বলছে তাদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী প্রাপ্তি তাপসী বলেন, ক্যাম্পাসে যেখানে ধর্ষণ-সন্ত্রাস-মাদকের মত অভিযোগ আছে, সেখানে স্বৈরাচার থেকে আজাদি গ্রাফিতি আঁকার কারণে বহিষ্কার হয়ে যায়৷ একুশের চেতনা আমাদের বাকস্বাধীনতার কথা বলে৷ ধর্ষণের বিরুদ্ধে কথা বলায় সেখানে দুইজন ছাত্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলা করতে চায়। প্রশাসন কতটা অথর্ব তা এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়।
সহ- সভাপতি আশফার রহমান নবীন বলেন, এ অথর্ব প্রশাসন নিরমবহুর্ভুত ও অনায্যভাবে দু'জন বৈধ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে। এরচেয়ে অবিচার-জুলুম কমই ঘটেছে।সংবিধানের ৪(ক) ধারায় যে প্রতিকৃতির কথা বলা হয়েছে তা অফিসে সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে৷ মুছে যাওয়া গ্রাফিতির ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি৷
রাত সাড়ে আটটায় সেখানে আসেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম। এসময় উপ-উপাচার্যকে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাদের মামলার বিষিয়টি মানবিক বিবেচনার অনুরোধ জানান শিক্ষার্থীরা।
এসময় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজ বলেন, এটা আসলে উপাচার্যের একক সিদ্ধান্ত নয়৷ তদন্ত কমিটির সুপারিশের উপর ভিত্তি করে সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে অনুসারে রেজিস্ট্রার অফিস তা বাস্তবায়ন করবে৷ এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা করবে কিনা সেটা তাদের বিষয়। এসময় পরদিন রেজিস্ট্রার অফিসে এসে কথা বলার অনুরোধ করেন তিনি।
কিন্তু শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সাথে কথা বলতে চেয়ে উপাচার্যকে বাসভবনের বাইরে আসার অনুরোধ জানায়। পরে রাত নয়টায় উপাচার্যের সাথে দেখা করতে আন্দোলনকারীদের কয়েকজন ভিতরে যায়। তখন উপাচার্য তাদের আশ্বস্ত করে সকালে উপাচার্য অফিসে দেখা করে লিখিত আবেদন করতে বলেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মামলা করার বিষয়ে তাদের দাবি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিলে তারা ফিরে যায়।
আজকালের খবর/এসএইচ