শনিবার ২১ জুন ২০২৫
ফেসবুকে অপপ্রচার দায়ে ইবির তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
রবিউল আলম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশ: শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫, ৩:১১ পিএম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থী অলিক কুমার সিকদারকে মানসিক ও শারিরীক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের নাম উল্লেখ করে ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়’ নাম সম্বলিত অনিবন্ধিত ভুয়া ফেসবুক পেইজে ভিডিও আপলোড দেয়া হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘মিথ্যা র‍্যাগিংয়ের অপপ্রচার ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করছে’ মর্মে তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ইবি থানায় অভিযোগ করেছে আইসিটি বিভাগের (স্নাতকোত্তর: ২২-২৩) শিক্ষার্থী মো. সোলাইমান হোসেন (বাদী)।

অপপ্রচারে অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থী (বিবাদী) হলেন- বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (২০২১-২২) শিক্ষার্থী সেলিম খান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী রানা আহম্মেদ অভি (২০২০-২১) এবং বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (২০২১-২২) শিক্ষার্থী মুরাদ আলী।

দায়েরকৃত অভিযোগপত্রে বলা হয়, “বিবাদীগণ ‘Islamic University, Kustia’ পেইজে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত আইসিটি বিভাগের হোয়াইট হাউজে বসবাসরত কিছু ছাত্রের বিরুদ্ধে মিথ্যা র‍্যাগিংয়ের অপপ্রচার করে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। কে/কারা, সত্য মিথ্যা যাচাই না করে আইসিটি বিভাগের হোয়াইট হাউজে বসবাসরত ছাত্রদেরকে সামাজিকভাবে সম্মানহানির অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। দায়েরকৃত অভিযোগপত্রের সাক্ষী- ইমরান (লোকপ্রশাসন বিভাগ), মেঘনাথ বর্মন (সিএসই মাষ্টার্স) ও ইকবাল হোসেন (আইসিটি বিভাগ)।”

জানা গেছে, এ ধরনের ভুয়া পেইজ আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে। বিভিন্ন সময় অভিযোগ করে আসলেও পেইজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তরা পরোয়া না করে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। ফলত অতিষ্ঠ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভুয়া পেইজ সনাক্তকরণে কমিটিও গঠন করেছে। গত ২৩ এপ্রিল ওই ভুয়া পেইজের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক ড. মো. কামাল উদ্দিনও অভিযোগ দায়ের করেন। ভুয়া পেইজের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন ইবি থানা কর্তৃপক্ষ। 

থানায় তিন জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগের বিষয়ে বাদী সোলাইমান ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘প্যানিক অ্যাটাকের বিষয়ে ওই পেইজে উল্লেখ না করে সরাসরি আইসিটি বিভাগের নাম উল্লেখ করে আমাদের ওপর র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ দিয়েছে। মুহুর্তের মধ্যেই ভিডিও ছড়িয়ে যায়। আমাদের মান ক্ষুণ্ণ হয়। অথচ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ডাক্তারের বরাত জানতে পেরেছি যে ওই শিক্ষার্থী (অলিক) আগে থেকেই প্যানিক অ্যাটাকের রোগী। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করালে ওই সময় ভিডিও ধারণ করে পরিকল্পিতভাবে আরেকটা ভিডিও আপলোড করা হয়, যেটা সেলিমের ধারণ করা ভিডিও। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে কিছুটা অনুমানের ভিত্তিতে নাম দেয়া। এদিকে অভির নামে অনেকেই অভিযোগ দিয়েছে, অথচ সে নিজেও বিভিন্ন জায়গায় স্বীকার করেছে যে আগে পেইজে যুক্ত ছিল এখন নাই। যদি তাই হয়, তাহলে এডমিনদের পরিচয় নিশ্চয় সে জানে। সে দায় এড়াতে পারে না। আর মুরাদের বিষয়ে যদি বলি- ঘটনার সময় সে ফেসবুকে বিভিন্ন নেতিবাচক কথাবার্তা বলছিল, কমেন্টে এগ্রিসিভ আচরণ করেছিল।’ 

সোলাইমান আরও জানান, ‘আমি আমাদের বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেই অভিযোগ দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর স্যারকে ফোনে জানিয়েছিলাম। যেহেতু মেসের ঘটনা এবং আমি এখানকারের স্থানীয়, সুতরাং থানায় অভিযোগ দিয়েছিলাম। যদি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমাধান করে দেয় তাহলে আর থানায় যাচ্ছি না। যদি সমাধান না পাই তাহলে মামলার পরবর্তী স্টেপে আগাবো।’

অভিযুক্ত সেলিম খান বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। যেখানে ভুক্তভোগী নিজেও স্টেটমেন্ট দিয়েছে। কে উপস্থিত ছিল, কারা সমঝোতা করার চেষ্টা করেছে বা মেডিকেলের ডকুমেন্টস সব তো বলা হয়েছে। যেখানে ইবি প্রক্টর বরাবর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে। তারপরও অপপ্রচার কেমনে হয়? কে ভিডিও করছে কে করেনি, সেটা না দেখে ভুক্তভোগীর বিষয়টা নজরে আনা উচিত। বন্ধু মুরাদ তো ওই সময় আমাদের সঙ্গেও ছিল না। সাংবাদিক অভিকে তো চিনিও না।’

ইবি থানা সূত্রে জানা যায়, বাদী সোলাইমান অভিযোগপত্র জমা দেয়ার পর অভিযুক্তরা থানায় মৌখিকভাবে পাল্টা অভিযোগ করেছে আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। ওই পেইজের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে যা একসাথে কাজ চলমান। 

ইবি থানার ওসি মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘অভিযোগপত্র পেয়েছি। যেহেতু শিক্ষার্থীদের ইস্যু, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমাধান করে দিলেই হয়। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। একই বিষয়ে দুই জায়গায় ডিল করাও কঠিন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলে আমরা সহযোগিতা করতে পারি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজামান বলেন, ‘সার্বিক বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ভুক্তভোগী অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে। ওইদিকে পেইজের বিষয়টা আলাদা। ভুয়া পেইজ নিয়েও আলাদা কমিটি কাজ করতেছে। সবকিছু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আজকালের খবর/ওআর








সর্বশেষ সংবাদ
সরকারকে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করছেন তথ্য আপারা: উপদেষ্টা শারমিন
খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিদায়ী জার্মান রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার আটক
অন্য দেশ পারলেও ইরান কেন পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক হতে পারবে না?
তারেক রহমান দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন: খসরু
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
৫ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠালো সরকার
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল
টেকনাফে ৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আটক
টেকনাফে মাছ শিকার শেষে ফেরার পথে দু’টি নৌকার সংঘর্ষে নিহত ১
ফেনীতে দু’টি নদীর বাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft