বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় বারবার অংশগ্রহণ করে ব্যর্থ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছান দুই শিক্ষার্থী। হাল ছেড়ে দিয়ে হাঁটু গেড়ে বসেও ছিলেন। শেষ মূহুর্তে এসে সন্তানের চেয়ে মায়ের স্বপ্নই ছিলেন তুলনামূলক বেশি। ওই সময় স্বপ্ন বুনছিলেন- ‘ভাই-বোন দু’জনই একই বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিভাগে চান্স পাবে এবং একসাথে পথ চলা শুরু করবে।’ ঠিকই মায়ের আশা পূরণ করেই ছাড়লে ভাই-বোন দুই ভর্তিযোদ্ধা। চবি, ঢাবি, রাবি ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে চান্স না পাওয়া ভাই-বোন দু’জন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) স্বতন্ত্র ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বাজিমাত করেছেন। সাদিয়া জান্নাত ১৫ তম এবং যোবায়ের ৫২ তম স্থান অধিকার করেন।
দুই ভাই-বোন জামালপুর মেলান্দহ উপজেলার বানিপাকুরিয়া গ্রামের মৌলানা মো. আব্দুস সোবহানের সন্তান শেখ যোবায়ের আহম্মদ এবং সাদিয়া জান্নাত। দু'জনই তা'মিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। জিপিএ ৫.০০ পেয়ে আলিম উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।
তাদের ভাষ্যমতে, তাদের দু’জনের এ সফলতার অন্যতম চাবিকাঠি ‘বাবা-মা’ এবং ‘সাকসেস’ বিশ্ববিদ্যালয় কোচিং সেন্টার। যারা প্রতিটি সময় তাদের পাশে ছিলেন। যাদের অনুপ্রেরণা তাদেরকে সব সময় অনুপ্রাণিত করতো। বিশেষ করে বাসায় কল করলে যখন বাবা-মা’র শেষ কথা ছিলো- ‘আমাদের মন বলে তোমাদের দু’জনের একই বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স হয়ে যাবে। তারা দু'জনই এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে পড়তে চান।
এছাড়াও নাম উল্লেখ না করা বিশেষ একজনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘একজনের পরামর্শ, বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা ও অবদান ছিল। বলতে গেলে উনার মাধ্যমেই আমাদের এ স্বপ্ন দেখা শুরু এবং তার হাত ধরেই অবশেষে ইবির আঙিনায় পা রাখা। তিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমান ভাবে আমাদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে গেছেন। তার সহযোগিতাই ছিলো আমাদের এ সফলতার সোপান।’
শিক্ষার্থী জেবায়ের বলেন, ‘আমি কয়েকটি ভর্তি পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। আল্লাহ তায়ালা আমাকে ইবির জন্য কবুল করায় অন্য কোথাও আশানুরূপ ফল হয়নি। ঢাবি, রাবি, চবি সহ আরো কয়েকটি পরীক্ষার ফলাফল আমার মাঝে হতাশা বৈ আর কিছু বয়ে আনেনি। যখন হতাশার চূড়ান্ত পর্যায়ে ঠিক ওই সময় সিন্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, আমি আর পরীক্ষা দেবো না। সে সময় ইবিয়ান একজন ভাই আমাকে তার কাছে নিয়ে আসেন এবং নতুন করে আবার স্বপ্ন দেখান। আমার প্রতি তিনি এতটুকু মনযোগী ছিলেন যে প্রতিটি সময় তিনি আমাকে পরিচর্যা করতেন। মাত্র ১ মাস ১৬ দিন সময়ের মাঝেই তিনি আমাকে ইবিয়ান হিসেবে গড়ে তুলা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।’
তারা (ভাইবোন) সকলের কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের দু’ভাইবোনকে দ্বীনের জন্য কবুল করেন। সংশ্লিষ্ট সকলকে নেক হায়াত দান করুন এবং বাবা-মা সহ আমাদের পেছনে যারা নিঃস্বার্থ পরিশ্রম করেছেন আল্লাহ তায়ালা তাদের প্রতিটি পরিশ্রমের মূল্য যথাযথ দান করুন।’
আজকালের খবর/ এমকে