প্রকাশ: রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ৪:৩৫ পিএম

পরীক্ষা কেন্দ্রে রুম নাম্বার বা হল খুঁজে দেওয়া, ডানে আর বামে বলতে বলতে জিহ্বা শুকানো, কেন্দ্রের আশেপাশের বিভিন্ন মোড়ে যানজট নিরসন, তীব্র গরমে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা, ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলার সহিত প্রবেশ করানো, লাইন ধরে কেন্দ্রে প্রবেশ করানো, শিক্ষার্থীদের জিনিসপত্র হেফাজতে রাখা এবং একটু দেরিতে আসা শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার তৎপরতা-সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী কাজের সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি প্লাটুন ও রোভার স্কাউটস সদস্যরা।
রবিবার (১১ মে) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গুচ্ছভুক্ত ভর্তি পরীক্ষায় তাদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এ সময় পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের তপ্ত গরমে দাঁড়িয়ে ‘ঠিক ডানে ঘুরে বামে যান’ বলে রোবটিক যন্ত্রের ন্যায় অকপটে সেবা দিচ্ছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে (ভিতর সাইটে) দাবদাহে দাঁড়িয়ে ঘর্মাক্ত শরীরে প্রবেশ করা ভর্তিচ্ছুদের কেন্দ্র দেখিয়ে দিচ্ছেন। একজন নবীন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে পা রাখার সাথে সাথে সব নতুন। নিজস্ব মেধা শক্তি দিয়ে এক পাও সামনে এগোনো সম্ভব না। সেই মূহুর্তে সূর্যের কিরণ উপেক্ষা করে হাতের আঙুলের ইশারায় বলতে থাকেন এদিক, ওদিক, বাম আর ডানের পরীক্ষার হলগুলোর কথা।
দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালনকারী কিছু সদস্যরা জানান, আমরা যারা বিএনসিসি করি তারা সারাবছর ভর্তি পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করি, এমনটা বলাই যায়। কেননা, আমাদের বিএনসিসির যে মূল মন্ত্র (জ্ঞান, শৃঙ্খলা ও স্বেচ্ছাসেবা) তার সঠিক ব্যবহার করতে পারি এই সময়টাতেই। সাথে নিজের প্রতি একটা বিশেষ অনুভূতি কাজ করা তো আছেই। কেননা, প্রাথমিকভাবে যাবতীয় শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব আমাদেরই থাকে। ভর্তি ইচ্ছুক পরীক্ষার্থীদের বিভিন্ন সম্বোধন (যেমন– স্যার, আঙ্কেল, ভাই) পাওয়াতেও একটা মজা আছে। সবশেষে যখন পরীক্ষার্থীরা আমাদের জন্য কিছুটা নিশ্চিন্ত বোধ করে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বা দ্বায়িত্বরত শিক্ষক-প্রশাসন আমাদের প্রশংসা করে আমাদের সুশৃঙ্খলতার জন্য তখন নিজেকে ও নিজের দ্বায়িত্বকে সার্থক মনে হয়।’
ইবি রোভার স্কাউট গ্রুপের সভাপতি দিদারুল ইসলাম রাসেল বলেন, ‘নবীন যে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে আসছে তাদের কাছে ভবনগুলো অপরিচিত। অনেক জায়গা তারা চিনে না। আমরা তাদের ঠিকানা দিচ্ছি। প্রয়োজনে আমরা তাদের সেখানে পৌঁছিয়ে দিচ্ছি। কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের কাজ মূলত সেবা দেয়া।’
ইবি বিএনসিসির সিইউও মুকসিতুর রহমান মুগ্ধ বলেন, ‘বিএনসিসি সেনা ও নৌ শাখা নিরলসভাবে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় ও ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সহায়তায় জন্য আমারা আলাদা আলাদা বুথ ও হেল্প ডেস্কের ব্যবস্থা করেছি। পরীক্ষাকে ঘীরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে কর্তৃপক্ষের সাথে আমাদের কিছুটা সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছিল, পরে ঠিক হয়ে গেছে।’
আজকালের খবর/ওআর