
গাজীপুরের সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়নের কথিত আওয়ামী লীগ নেতা মেহের আফরোজ চুমকির ঘনিষ্ঠ এটিএম হানিফকে খাতিয়া বন্দান ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার গভর্নিং বডির প্রস্তাবিত সভাপতি করায় স্থানীয় এলাকাবাসীদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
গতকাল বুধবার খাতিয়া বন্দান ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অভিভাবক সদস্য ও স্থানীয় বিএনপি নেতা মো. হাদিউজ্জামান মুনসুর অভিযোগ করে বলেন, স্বৈরাচার (ফ্যাস্টিট) আওয়ামী লীগের সক্রিয় নেতা এটিএম হানিফকে ওই মাদরাসার সভাপতি প্রস্তাবিত করা হয়েছে, যেটা এলাকাবাসীসহ স্থানীয় বিএনপি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। এটিএম হানিফ ফ্যাস্টিট আওয়ামী লীগের কালীগঞ্জের শীর্ষ নেত্রী মেহের আফরোজ চুমকির ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেত্রী মেহের আফরোজ চুমকির ছত্র ছায়ায় ২০১৪ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে ওই প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন হানিফ। স্বৈরাচারের ১৬টি বছর বাড়িয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সকল কর্মকাণ্ড চালিয়েছিল। অবৈধ স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনগুলোতে বাড়িয়া ইউনিয়নে চুমকির পক্ষে নৌকা প্রতীকের ব্যাজ গলায় ঝুলিয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন হানিফ।
মনসুর বলেন, আওয়ামী দোসরদের হস্থক্ষেপে আমাদেরকে রাজনৈতিকভাবে চরম নির্যাতন করা হয়েছিল। আমরা ঘরে ঘুমাতে পারেনি। এলাকায় থাকতে পারিনি। মিথ্যা মামলা, জেল জুলুম দিয়েছিল।
মনসুর বলেন, ছাত্র জনতা বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল মিলে এবং এদেশের সর্বস্তরের জনগণ একত্রিত হয়ে ওই অবৈধ পতিত স্বৈারচার আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করে। আমরা স্বৈরাচার মুক্ত নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। কিন্তু, এখনো ওই ফ্যাস্টিটদের দোসররা খোলস পাল্টিয়ে বিএনপি জামাতের সঙ্গে মিশে যাওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। কতিপয় ওই দোসররা এখন অনেক জাগায় গিয়ে বিএনপি জামাতের পরিচয় দিচ্ছে। ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে। দোসরদের নেত্রী পালিয়েছে। আমরা ওই দোসরদের চিহ্নিত করেছি। তাদেরকে সকলে মিলে প্রতিহত করা হবে। কোনো অবস্থায় কোনো কিছুর বিনিময়ে তাদেরকে যেন পূর্ণবাসন করা না হয় এদিকে প্রতিটি সরকারি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষদের বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
মুনসুর বলেন, অবৈধ পাতানো আওয়ামী লীগের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন ওই চুমকির সহচর যার বিভিন্ন স্থির চিত্র আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে। যার কয়েকটি ছবি খবরে ছাপানোর জন্য দিলাম।
মনসুর আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ফ্যাস্টিট সরকারের আমলে এটিএম হানিফ ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি থাকাকালে যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীদেরকে চাকরি না দিয়ে তার আপন বড় ভাইয়ের ছেলে মো. মোমেনকে দপ্তরী পদে, আপন ছোট ভাইয়ের মেয়ে সাদিয়াকে কম্পিউটার অপারেটর পদে এবং আপন বড় বোনের মেয়ের জামাই মো. ছায়েমকে নাইট গার্ড পদে চাকরি দেয়। বর্তমানে তারা কর্মরত আছেন।
গাজীপুর সদর বিএনপির প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক মো. হাদিউজ্জামান মুনসুর আরো জানান, ইমলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় বছিলা, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২৩১ এর ভাইস চ্যান্সেলরের নিকট এ ব্যপারে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে এটিএম হানিফ জানান, তিনজনকে চাকরি দেয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। তিনি বলেন, আমি একজনকে চাকরি দিয়েছি। সে আমার ভাতিজা।
তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। আমি ছাত্র শিবির করতাম। তারা মেহের আফরোজ চুমকির সঙ্গে যে ছবিটি দেখাচ্ছে সেগুলো এডিট করা। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো মিথ্যা। গভর্নিং বডির সভাপতি অন্য কেউ হলে আমার কোনো আপত্তি নাই।
তিনি বলেন, আমার ফ্যামিলি থেকে কোনোদিন কেউ নৌকায় ভোট দেয় নাই।
খাতিয়া বন্দান ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল শফিউল্লাহ সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, আমার জানামতে তিনি দুইজনকে চাকরি দিয়েছেন। তখন আমি ভাইস প্রিন্সিপাল ছিলাম। তবে আমি চাকরির দেওয়ার বিষয়ে এত কিছু জানি না।
আজকালের খবর/ওআর