রবিবার ২৫ মে ২০২৫
কর্মমুখী জীবন ইসলামের শিক্ষা
আবু সুফিয়ান
প্রকাশ: শনিবার, ৩ মে, ২০২৫, ৪:০৬ PM
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে যেমন সুন্দর আকৃতি বা দৈহিক সৌন্দর্য দিয়েছেন তেমনি তাকে উন্নত বুদ্ধি, বিবেক, বিবেচনা ও আত্মা দান করেছেন। শরীর সুস্থ রাখার জন্য খাদ্যের প্রয়োজন, পবিত্র ও হালাল খাদ্য মানবাত্মার উৎকর্ষ সাধনের জন্য জরুরি। হালাল জীবিকার জন্য হালাল বা বৈধ উপার্জন শর্ত। যা মানুষকে বিভিন্ন উপার্জনমুখী কর্মের  মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হয়। মহান আল্লাহরাব্বুল আলামীনের জন্য সকল প্রশংসা, যিনি মানুষকে ভূ-পৃষ্ঠে খলিফা হিসেবে প্রেরণ  করেছেন, বসবাসের জন্য আবাসন দিয়েছেন এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য সকল উপায়-উপকরণ দান করেছেন। পবিত্র কোরআনে  ইরশাদ হচ্ছে-
 
অর্থ : আর নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে পৃথিবীতে বসবাসের স্থান দিয়েছি এবং তাতে আমি তোমাদের জন্য জীবিকা নির্বাহের উপকরণ সৃষ্টি করেছি। তোমরা খুব কমই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাক। (আ‘রাফ : ১০) 

বৈধ উপার্জন কী: হালাল উপার্জন অর্থই হলো বৈধ উপার্জন। আল্লাহ ও রাসূল কর্তৃক নির্দেশিত, প্রদর্শিত ও অনুমোদিত পন্থায় যে উপার্জন করা হয়, তাকেই হালাল উপার্জন বলে। আল্লাহ তা‘আলা মানবজাতিকে পবিত্র খাদ্য গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আমার প্রদত্ত রিজিক হতে পবিত্র ও হালাল খাবার খাও।’ মানুষের জন্য যা উপকারী ও কল্যাণকর তাই আল্লাহ তা‘আলা হালাল করেছেন। হালাল-হারাম বা বৈধ-অবৈধ হওয়ার দু’টি দিক রয়েছে। তন্মধ্যে একটি হলো, যা মৌলিকভাবেই আল্লাহ তা‘আলা মানুষের জন্য হালাল বা বৈধ করেছেন। যেমন প্রাণীর মধ্যে আছে গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া, উট, দুম্বা ইত্যাদি। আবার কিছু জিনিস আছে যা মৌলিকভাবেই আল্লাহ তা‘আলা মানুষের জন্য হারাম বা অবৈধ করেছেন। যেমন-মৃত জীবের মাংস, শুকর, মদ ইত্যাদি। আর অপরটি যা মৌলিকভাবে হালাল বা বৈধ, কিন্তু উপার্জনগত কারণে তা হারাম বা অবৈধ। যেমন-মাপে কম দেওয়া, মালে ভেজাল দেওয়া, প্রতারণা, অন্যের সম্পদ আত্মসাত বা অবৈধ দখল ইত্যাদি। 

সুতরাং যা মৌলিকভাবে হালাল বা বৈধ এবং উপার্জনগত দিক থেকেও হালাল তথা আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূল কর্তৃক নির্দেশিত, প্রদর্শিত ও অনুমোদিত পন্থায় যা উপার্জন করা হয়, তাকেই হালাল উপার্জন বলে গণ্য করা হবে। নতুবা নয়। 

হালাল উপার্জনের গুরুত্ব¡: মানব জীবনে হালাল উপার্জনের যথেষ্ট গুরুত্ব¡ রয়েছে। নিম্নে হালাল উপার্জনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোচনা করা হল। 

১. হালাল উপার্জন করা ফরজ: আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং পবিত্র। তিনি পবিত্র জিনিস ছাড়া অন্য কিছুই গ্রহণ করেন না। তিনি মানব জাতিকে হালাল তথা পবিত্র ও বৈধ উপার্জনের নির্দেশ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

অর্থ : তারপর যখন সালাত সমাপ্ত হয়ে যাবে, তখন তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) অন্বেষণ কর। (জুমআ ১০) 

অর্থ : হে ঈমানদাররা! আমি তোমাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে পবিত্র বস্তু আহার কর এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় কর যদি তোমরা তার ইবাদত কর। (আল-বাকারা : ১৭২) 

রাসূল বলেন, অর্থ : হালাল রিজিক উপার্জন করা ফরজের পর একটি ফরজ। (বায়হাকী) 

২. সর্বোত্তম কর্ম : মানুষের যতগুলো ভালো কাজ রয়েছে তন্মধ্যে হালাল উপার্জন উত্তম কাজ। মানুষ আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশ মোতাবেক রিজিক অন্বেষণ করবে। এ প্রসঙ্গে রাসূল বলেন, হালাল বা বৈধ উপায়ে উপার্জন করাই সর্বোত্তম কাজ। 

৩. উত্তম খাদ্য : হালাল উপার্জন করে যা আহার করা হয় সেটিই উত্তম খাদ্য। বিশেষ করে স্বহস্তে কাজ করে উপার্জন করা খুবই উত্তম। মানুষ কায়িক পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজ হাতে বৈধ পন্থায় আয়-রোজগার করবে। আর এটিই উত্তম। রাসূল স্বহস্তে কাজ করার প্রতি উৎসাহিত করে বলেছেন, ‘দু‘হাত দিয়ে উপার্জিত খাদ্য অপেক্ষা উত্তম খাদ্য কেউ কোনোদিন আহার করেনি।’(বুখারী) 

অসংখ্য নবী-রাসূল নিজ হস্তোপার্জিত আয় দ্বারা পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করতেন। এমনকি মোঘল সম্রাটদের অনেকেই নিজ হস্তোপার্জিত আয় দ্বারা পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করতেন। 

৪. অলসতা দূরীকরণ : ইসলাম অলসতা, কর্মবিমুখতা ও কুঁড়েমি আদৌ পছন্দ করে না। এ প্রসঙ্গে রাসূলের বাণি প্রণিধানযোগ্য। তোমাদের ফজরের সালাত আদায় শেষ হয়ে গেলে রুজির অনুসন্ধান না করে ঘুমিয়ে পড়বে না। মূলত আল্লাহ তা‘আলার নিম্নোক্ত বাণী, অর্থ : তারপর যখন সালাত সমাপ্ত হয়ে যাবে, তখন তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) অন্বেষণ কর। (জুমআ : ১০) এর পরিপূরক বা ব্যাখ্যা বলা যেতে পারে উক্ত ব্যক্তব্যকে। অর্থাৎ সালাত আদায়ের পর অলসতাকে প্রশ্রয় না দিয়ে আল্লাহ প্রদত্ত রিজিকের অনুসন্ধানে লিপ্ত হওয়া উচিত। 

৫. জান্নাত লাভ : আল্লাহ তা‘আলা ও তদীয় রাসূল নির্দেশিত পন্থায় চাকরি-বাকরি এবং চাষাবাদ ও ব্যবসা-বণিজ্যের মাধ্যমে হালাল উপার্জন করা যায়। ব্যবসা-বাণিজ্যে সততা, বিশ্বস্ততা ও সত্যবাদিতা একান্ত প্রয়োজন। তাহলে আল্লাহ তা‘আলা খুশি থাকবেন এবং পরকালে সে জান্নাত লাভ করবে। রাসূল বলেছেন, অর্থ : বিশ্বস্ত, সত্যবাদী মুসলমান ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও নেককার লোকদের সঙ্গে একত্রে থাকবে। (মুসলিম) 

হালাল উপার্জনের উপায়: হালালভাবে উপার্জন করার বেশ কিছু পন্থা ও পদ্ধতি রয়েছে। অপরকে না ঠকিয়ে, মিথ্যার আশ্রয় না নিয়ে প্রতারণা না কওে বৈধ পন্থায় উপার্জন করাই হালাল উপার্জন। এ জন্য যে সব পন্থা অবলম্বন করা যায়, তার একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা দেওয়া হল। 

শ্রম বিনিয়োগের মাধ্যমে : দৈহিক পরিশ্রমের মাধ্যমে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে হালাল বা বৈধ কাজ করে হালাল রিজিক উপার্জন করা যায়। কায়িক পরিশ্রমের মাধ্যমে অনেক কাজই করা যায়। যার মাধ্যমে হালাল উপার্জন করা যায়। 

চাকরি-বাকরি করা : সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিনিময়ে চাকরি-বাকরি করে হালাল উপার্জন করা যায়। 

ব্যবসা-বাণিজ্য করা : আল্লাহ তা‘আলা ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, অর্থ : আল্লাহ তা‘আলা ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন। (বাকারা : ২৭৫) 
মহানবী বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে রিজিকের দশ ভাগের নয় ভাগ বরকত রয়েছে। কাজেই বৈধভাবে বৈধ জিনিসের ব্যবসা করে হালাল রিজিক উপার্জন করা যায়। ব্যবসা-বাণিজ্য সৎভাবে করার ফজিলতও অপরিসীম। রাসূল বলেছেন, বিশ্বস্ত, সত্যবাদী মুসলমান ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও নেককার লোকদের সঙ্গে একত্রে থাকবে। 

অন্যান্য বৈধ কর্মসংস্থানের মাধ্যমে হালাল উপার্জন : শ্রম বিনিয়োগ, চাকরি-বাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়াও হালাল উপার্জনের অসংখ্য উপায় আছে। যার মাধ্যমে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের পথ তৈরী হয়। এ সকল নতুন নতুন পন্থা উদ্ভাবনকারী যেমন নিজের জন্য হালাল উপার্জনের ব্যবস্থা করে তেমনি এর মাধ্যমে আরো অসংখ্য বেকার মানুষের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থাও হয়ে 

যায়। পশু-পাখি পালন করা, হাঁস-মুরগী পালন করা, মাছের চাষ করা, মৌমাছির চাষ করা, বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন করা, ছোট, মাঝারী বা বড় নার্সারি করা এবং নানা রকম কুটির শিল্প ইত্যাদির মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থান গড়ে তোলা যায়। যার মাধ্যমে হালাল উপার্জন করা যায়। 

এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল হওয়া যায়। তেমনি দেশ, জাতি ও সমাজের প্রভুত উন্নয়ন ও কল্যাণ সাধন করা যায়। 

কর্মমুখীতা ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য : কর্মমুখীতা দারিদ্র মোকাবেলার প্রধান হাতিয়ার, সম্পদ উপার্জনের মাধ্যম ও ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য। আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতিকে পৃথিবীতে তার প্রতিনিধি হিসেবে এবং পৃথিবী আবাদ করার জন্য পাঠিয়েছেন। পৃথিবীকে আবাদ ও বসবাসযোগ্য করে তোলার অন্যতম উপাদানই হলো কর্মমুখীতা বা শ্রম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,  অর্থ : তিনি জমিন হতে তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তন্মধ্যে তোমাদের বসতি দান করেছেন। (হুদ : ৬১)
 
আকাশ হতে জীবিকা আসবে এই আশায় জীবিকা উপার্জন থেকে বিমূখ থাকা নিতান্তই বোকামী এবং ইসলামও এটাকে অনুমোদন করে না। বরং জীবিকা উপার্জনের জন্য চেষ্টা করা সকল নবীগণের সুন্নাত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, অর্থ : তিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে সুগম করে দিয়েছেন, অতএব তোমরা ধরাপৃষ্ঠে বিচরণ কর এবং তার দেওয়া রিজিক থেকে আহার কর। (সূরা মুলক : ১৫)  তিনি আরো বলেন, অর্থ : সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) সন্ধান কর। (জুমুআ : ১৫) রাসূল কর্মবিমূখতা কখনো পছন্দ করেননি। বরং তিনি কাজের (শ্রমের) প্রতি উৎসাহ প্রদান করেছেন। তিনি বলেন-  অর্থ : মানুষের খাদ্যের মধ্যে সে খাদ্যই সব চেয়ে উত্তম, যে খাদ্য স্বহস্তে উপার্জিত সম্পদ দ্বারা হয়। আর প্রিয় নবী দাউদ (আ.) স্বহস্তে উপার্জিত সম্পদ দ্বারা খাদ্য গ্রহণ করতেন। (বুখারী) 

তিনি কৃষি কাজ ও বৃক্ষরোপণের ব্যাপারে অনুপ্রেরণা যুগিয়ে বলেছেন-  অর্থ : যে কোনো মুসলিম ব্যক্তিই কোনো গাছ লাগালে তা থেকে যা কিছু খাওয়া হয়, সেটি তার জন্য সাদকা হবে। আর তা থেকে কিছু চুরি হলে এবং কেউ তার কোনো ক্ষতি করলে সেটাও তার জন্য সাদকা হবে। ইমাম মুসলিম হাদীসটি রেওয়ায়াত করেছেন।
  
অন্য বর্ণনায় আছে, মুসলিম কোনো গাছ লাগালে; তা হতে মানুষ, পশু-পাখি ও অন্যান্য প্রাণী যা কিছু খায়। তা কিয়ামত পর্যন্ত তার জন্য সাদকা হিসেবে জারি থাকে। (মুসলিম) 

তিনি আরো বলেন- রিজিকের সন্ধানে যে ব্যক্তি রাত্রে নিষ্প্রভ ও অবসাদগ্রস্থ হয়ে পড়ে, সে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়। (জামে সগীর) এ ছাড়া রাসূল স্বীয় উম্মতকে ভিক্ষাবৃত্তি পরিহার করে শ্রম বিনিয়োগের মাধ্যমে হালাল ও বৈধ পন্থায় উপার্জন করতে উৎসাহিত করেছেন। যদিও তা বাহ্যিকভাবে ছোট কাজ বলে মনে হয়। রাসূল বলেন, অর্থ : উপরের হাত নিচের হাত অপেক্ষা উত্তম। অর্থাৎ দান গ্রহিতার হাত অপেক্ষা দাতার হাত উত্তম। 

ভাগ্য পরিবর্তনে চাই উদ্দ্যোগ: তাওয়াক্কুলের নামে অনেকে আবার এই ধারণা পোষণ করে থাকে যে, আল্লাহ তা‘আলা রিজিকদাতা, সুতরাং তিনি আমার ভাগ্যে যে রিজিক আছে তা পৌঁছাবেনই। সুতরাং ভাগ্যের দোহাই দিয়ে কর্মবিমুখ হয়ে পরনির্ভরশীল ও অন্যের গলগ্রহ হয়ে থাকে। 

যা সম্পূর্ণরূপে শরীয়তের মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিপন্থী। মানুষ যতক্ষণ নিজে উদ্যোগী হয়ে নিজের অবস্থার পরিবর্তনের চেষ্টা না করে ততক্ষণ আল্লাহ তা‘আলাও তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করেন না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, অর্র্থ : নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা ওই সম্প্রদায়ের ভাগ্য ততক্ষণ পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ তারা নিজেরা নিজেদের (ভাগ্য) পরিবর্তন না করে। (আর-রাদ : ১১) 

আমরা যদি আমাদের বেকারত্ব, দারিদ্র, বদঅভ্যাস, কুস্বভাব পরিবর্তনের উদ্যোগ না নিয়ে এবং এ সবের জন্য কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ না করে শুধু ভাগ্যের দোষ দিয়ে নিজেকে তাওয়াক্কুলের মতো মস্ত বড় একটি ঈমানী ভিত্তিকে ভুল বা অপব্যাখ্যা করে হাত গুটিয়ে বসে থাকি। তাহলে বেকারত্ব ও দারিদ্র দূর তো হবেই না বরং তা আরো নানা ধরনের কুসংস্কারের জন্ম দিবে। ওমর (রা.) বলেন, উপার্জন ত্যাগ করো না এবং আল্লাহ জীবিকা দান করবেন বলে অকর্মণ্য হয়ে বসে থেকো না। কারণ আল্লাহ আসমান হতে সোনা-রূপা নিক্ষেপ করেন না। অর্থাৎ তিনি আসমান হতে সোনা-রূপা নিক্ষেপে সক্ষম। তথাপি কোনো উসিলায় জীবিকা প্রদান করাই তার সাধারণ নীতি। 

যেমন হাদীসে বর্ণিত আছে, আনাস (রা.) বলেনÑ একদা এক আনসারী সাহাবী নবী করীমের নিকটে এসে কিছু চাইলে তিনি তাকে বললেনÑ তোমার ঘরে কোন কিছু আছে কি? উত্তরে তিনি বললেনÑ হ্যাঁ, একটি চাদর আছে। যার একাংশ আমি পরিধান করি এবং অপর অংশ আমি শয্যারূপে ব্যবহার করি। তা ছাড়া পানি পান করার একটি পাত্রও আছে। রাসূল বললেন- তাহলে ওই দু’টি জিনিসই আমার কাছে নিয়ে এসো। সাহাবী তা নিয়ে এলে, নবী তা হাতে নিয়ে উপস্থিত লোকদের মাঝে নিলাম ডাকলেন। তিনি বললেনÑ কেউ এগুলো খরিদ করার আছে কি? এক সাহাবী বললেন- আমি এক দিরহামে নিতে রাজি আছি। রাসূল বললেনÑ এক দিরহামের চেয়ে অধিক দিতে কে রাজি আছে?

তিনি এ কথাটি দু’ তিনবার বললেন। তখন অন্য এক সাহাবী বললেন- আমি দু’ দিরহামের বিনিময়ে কিনতে রাজি আছি। রাসূল তার কাছে বস্তু দু’টি দু’ দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করে আনসার সাহাবীকে দু’ দিরহাম দিয়ে বললেনÑ এক দিরহাম দিয়ে তোমার পরিবারের জন্য খাদ্য ক্রয় কর এবং অপর দিরহাম দিয়ে একটি কুঠার খরিদ করে আমার কাছে নিয়ে এসো। সাহাবী কুঠার ক্রয় করে রাসূলের কাছে নিয়ে এলে তিনি নিজ হাতে তার হাতল লাগিয়ে দিয়ে বললেন- যাও, জঙ্গলে গিয়ে কাঠ কেটে তা বাজারে বিক্রি করতে থাক। পনের দিনের ভেতর আমার কাছে আসার প্রয়োজন নেই। রাসূলের নির্দেশ অনুযায়ী সাহাবী জঙ্গল থেকে কাঠ কেটে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে লাগলেন। এভাবে দশ দিরহাম উপার্জন করে তা নিয়ে রাসূলের কাছে উপস্থিত হলেন। রাসূলের কাছে তা পেশ করলে তিনি তা থেকে কিছু দিয়ে পরিবার ও নিজের জন্য কাপড় ক্রয় করার ও বাকী দিরহাম দিয়ে খাদ্যদ্রব্য ক্রয়ের নির্দেশ দিয়ে বললেন- অপরের নিকট ভিক্ষার কারণে কিয়ামতের দিবসে চেহারায় দাগ নিয়ে উপস্থিত হওয়ার চেয়ে শ্রমের মাধ্যমে জীবিকা উপার্জন করা অনেক উত্তম। (বুখারী ও মুসলিম) 

রাসূলুল্লাহ উক্ত সাহাবীকে অপরের কাছে হাত না পেতে নিজে পরিশ্রম করে উপার্জন করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। পাশাপাশি তিনি শ্রম বিনিয়োগের উপযুক্ত পদ্ধতিও বাতলে দিয়েছেন। এমনিভাবে প্রিয় নবী মুহাম্মদ সমাজের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন ও বেকারত্ব দূরীকরণে বাস্তব সম্মত ভূমিকা রেখেছেন। 

দুনিয়া বিমুখতা ইসলামে নেই কোরআন এবং হাদীসের দলীলসমূহ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ইসলামে সন্ন্যাসবাদ তথা দুনিয়া বিমুখতা নেই। বরং পার্থিব কাজও যখন বিশুদ্ধ নিয়তে ইসলামী বিধি-বিধান লংঘন না করে সম্পাদন করা হয়, তখন তা ইবাদতে পরিগণিত হয়ে সাওয়াবের মাধ্যম হয়ে যায়। মানুষ যখন নিজের স্বাস্থ্য, পরিবারের লালন-পালন, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা এবং সৎ কাজে সহায়তা দানের জন্য রোজগার করে ও ব্যয় করে। তখন তা জেহাদ ফি সাবিলিল্লাহর একটি অংশ হিসেবে ধর্তব্য হয়। তাই তো আল্লাহ তা‘আলা দু‘টি বিষয়কে পাশাপাশি উল্লেখ করে বলেছেনÑ অর্থ : কেউ কেউ অল্লাহর অনুগ্রহের (রিজিক) সন্ধানে দেশে-বিদেশে ভ্রমণ করবে এবং কেউ কেউ আল্লাহর পথে জিহাদে লিপ্ত হবে। (সূরা মুজ্জাম্মেল : ২০) 

ইসলাম বিদেশে শ্রম বিক্রির ব্যাপারে নীরব নয়। ইসলাম আমাদের নিকট সুস্পষ্ট কওে দেয় যে, আল্লাহর জমীন বিস্তৃত। রিজিক বিশেষ অঞ্চল ও জনপদের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। সুতরাং রিজিকের জন্য বিদেশ ভ্রমন ইসলামেও স্বীকৃত। আল্লাহরাব্বুল আলামীন বলেন, অর্থ : যে আল্লাহর পথে দেশ ত্যাগ করবে সে পৃথিবীতে অনেক স্থান ও সচ্ছলতা পাবে। (নিসা : ১০০) 

শ্রমের ব্যাপারে আমরা যদি নবী রাসূলগণের জীবনের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই প্রত্যেকেই শ্রমজীবী ছিলেন। স্বয়ং আমাদের নবী মুহাম্মদ ও একজন শ্রমজীবী ছিলেন। অনেকদিন পর্যন্ত তিনি মুদারাবার ভিত্তিতে খাদীজার (রা.) ব্যবসায় অংশ গ্রহণ করেছিলেন। দাউদ (আ.) নিজ হাতে উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। (বুখারী ও মুসলিম) 

দাউদ (আ.) ছিলেন লৌহ বর্ম প্রস্তুতকারক, আদম (আ.) ছিলেন কৃষক, নূহ (আ.) ছিলেন কাঠমিস্ত্রি, ইদ্রীস (আ.) ছিলেন দর্জি এবং মূসা (আ.) ছিলেন রাখাল। এমনিভাবে প্রত্যেক নবী শ্রমজীবী ছিলেন। কেউ কর্মবিমুখ ছিলেন না। সাহাবায়ে কেরামের জীবনী পর্যালোচনা করলেও দেখা যাবে, তারাও শ্রমের দিক থেকে পিছিয়ে নেই। ওমর (রা.) যিনি অর্ধ পৃথিবীর বাদশাহ ছিলেন, তিনিও এক সময় মক্কা থেকে একশ মাইল দূরে জানজান নামক ময়দানে উট চড়াতেন। আলী (রা.) ছিলেন মুসলিম খলিফা, তিনি মদীনা শহরে এক একটি খেজুরের বিনিময়ে এক এক বালতি পানি তুলে দিতেন। আবু হুরায়রাও (রা.) শ্রমজীবী ছিলেন। 

এমনিভাবে প্রত্যেক সাহাবীর জীবনী খুঁজলেই দেখা যাবে তারা শ্রমজীবী ছিলেন এবং শ্রমের মাধ্যমেই আল্লাহর ওপর ভরসা করে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। তাই প্রত্যেকের জন্য শ্রমের মাধ্যমে রিজিক উপার্জনে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। 

শ্রমের মাধ্যমে হালাল রিজিক উপার্জনকে হীন মনে না করা: হালাল রিজিক উপার্জন করতে গিয়ে সমাজের বিভিন্ন মানুষকে বিভিন্ন পেশা বেছে নিতে হয়। যা মানুষের হালাল রিজিক উপার্জনের উপায়। সে হালাল রিযিক উপার্জনের কাজটি যে মানেরই হোক না কেন, তা কোনভাবেই ছোট বা হীন মনে করা যাবে না। কেননা ইসলামের দৃষ্টিতে হালাল কাজে ও হালাল পথে শ্রম বিনিয়োগ বিন্দুমাত্র লজ্জার কারণ নয়। 

আমাদের দেশে অনেকেই বেকার সমস্যায় জর্জরিত। পরিবারের বোঝা হয়ে আছে। বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ছে বেকার থাকার কারণে। সাধারণ মানের কোন চাকরি বা ব্যবসা করতে লজ্জা বোধ করে থাকে। অথচ রাসূলুল্লাহ সকল নবী-রাসূলগণের সর্দার হওয়ার পরও পারিশ্রমিকের বিনিময়ে অন্যের কাজ করে দিয়েছেন। অধিকাংশ নবী-রাসূল ও সাহাবায়ে কেরাম শ্রমজীবী ছিলেন। শ্রম যদি নীচু মানের বিষয় হতো, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা নবীগণের (আ.) মাধ্যমে এ জাতীয় কাজ করাতেন না।

হালাল উপার্জন ইবাদত কবুলের পূর্ব শর্ত : হালাল রিজিক উপার্জন করা কোরআন, হাদীস ও সকল ওলামায়ে কেরামের মতে খুবই গুরুত্ব¡পূর্ণ ফরজ। হালাল রিজিক গ্রহণ করা না হলে কোনো প্রকারের ইবাদতই কবুল করা হয় না। 

রাসূল বলেছেন- অর্থ : আল্লাহ স্বয়ং পবিত্র এবং তিনি কেবলমাত্র পবিত্র বস্তুই গ্রহণ করে থাকেন। আর আল্লাহ মু‘মিনদেরকে সে নির্দেশই দিয়েছেন, যা তিনি নবীগণকে দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু হতে খাদ্য গ্রহণ কর এবং নেক আমল কর।’ (অনুরূপভাবে) তিনি মু‘মিনদেরকে বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! আমার দেয়া পবিত্র খাদ্য হতে আহার গ্রহণ কর।’ অতঃপর রাসূল (সা.) এমন এক ব্যক্তির প্রসঙ্গ তুললেন, যিনি দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে ধূলি-মলিন অবস্থায় (কোনো পবিত্র স্থানে হাজির হয়ে আকাশের দিকে দু‘হাত তুলে দোয়া করে আর) বলে, হে আল্লাহ! হে আল্লাহ! অথচ তার খাদ্য, পানীয় ও লেবাস সব কিছু হারাম তথা অবৈধ উপায়ে উপার্জিত। এমনকি সে এ পর্যন্ত হারাম খাদ্য দ্বারাই জীবন ধারণ করেছেন। সুতরাং তার দোয়া কি করে কবুল হবে? (মুসলিম) 

উপরোক্ত হাদীসে হালাল উপায়ে উপার্জিত পবিত্র ও শরীয়ত অনুমোদিত খাদ্য গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। সুতরাং হারাম উপায়ে উপার্জিত হালাল খাবার এবং হালাল উপায়ে অর্জিত হারাম খাদ্য এতদুয়ের কোনোটিই কোনো মুসলিম গ্রহণ করতে পারে না। 

হারাম উপায়ে উপার্জিত খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করে এবং হারাম টাকার কাপড় পরিধান করে যে কোনো পবিত্র স্থানে গিয়ে যত কাকুতি মিনতি করেই দোয়া করা হোক না কেন, আল্লাহ তা কবুল করবেন না। এমনিভাবে ইসলাম তার অনুসারীদেরকে অর্থ উপার্জনের যাবতীয় অন্যায় ও গর্হিত পন্থা পরিত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে। যেমন চুরি-ডাকাতি, ধোকা-প্রতারণা, সুদ-ঘুষ ও জোর-জবরদস্তির মাধ্যমে উপার্জন। অনুরূপভাবে ব্যয় নির্বাহের ব্যাপারেও মানুষকে অবাধ স্বাধীনতা দেওয়া হয়নি। বরং সেখানেও হালাল-হারামের বাধ্য বাধকতা রাখা হয়েছে। রাসূল বলেন, অর্থ : রাসূল ইরশাদ করেছেন, কিয়ামতের দিন পাঁচটি বিষয়ে হিসাব না দিয়ে কোনো ব্যক্তি এক কদমও সামনে অগ্রসর হতে পারবে না। ১. জীবন কীভাবে কাটিয়েছে, ২. অর্জিত জ্ঞান কী কাজে লাগিয়েছে, ৩. সম্পদ কীভাবে উপার্জন করেছে, ৪. উপার্জিত সম্পদ কীভাবে ব্যয় করেছে ও ৫. শরীর কী কাজে ক্ষয় করেছে। (তিরমিজী) 

বর্ণিত হাদীসে আলাহর নবী মুসলমানদেরকে তাদের আয়-ব্যয় নির্বাহের ব্যাপারে সাবধান করতে গিয়ে বলেছেন যে, কিয়ামতের দিন সর্ব প্রথম বান্দাকে যে পাঁচটি প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে, তার মধ্যে একটি হল, তার সম্পদ। অর্থাৎ সে তার সম্পদ কিভাবে উপার্জন করেছে এবং কোন পথে ব্যয় করেছে। 

শ্রমিকের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার ইতিকথা: ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস শ্রমিকদের উপর মালিকদের শোষণের নির্মম ইতিহাসকে স্মরণ করিয়ে দেয়। যা ১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দে লিয়নসে রেশম শ্রমিকদের উপর চালানো হয়েছিল। দিনে ১৮ ঘণ্টা কাজ করেও একজন শ্রমিক সেখানে মাত্র ১৮ ‘সু’ লাভ করত। যা আমাদের মুদ্রায় মাত্র ১৩ পয়সার সমান। এমনি ভাবে ১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দের দিকে রাশিয়ায় শ্রমিকদের উপর অত্যাচার চরমে উঠে। মজদুরদেরকে ন্যূনতম সাড়ে বারো ঘণ্টা ডিউটি করতে হত। শ্রমিকদেরকে অত্যন্ত সামান্য মজুরি দেওয়া হত। অন্ধকার ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে হত। শিল্পপতিরা বাজার দরকে নিজেদের স্বার্থানুযায়ী রাখতে গিয়ে যেমনিভাবে কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করে ঠিক তেমনিভাবে অল্প মুজুরীতে শ্রমিক লাভের আশায় তারা সারা দেশে সুপরিকল্পিত ভাবে বেকারত্ব সৃষ্টি করে রাখত। 

এ অবস্থা চরমে উঠলে আমেরিকার শিকাগোর হেগে মার্কেটের শ্রমিকরা তা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আন্দোলনের পথ বেছে নেয়। শ্রমিকদের দাবী ছিল দৈনিক আঠার/সাড়ে বারো ঘণ্টার পরিবর্তে আট ঘণ্টা কর্মঘণ্টা নির্ধারণ করতে হবে। মালিকরা তাদের দাবী মেনে নিতে চায়নি। এতে শ্রমিকরা আরো কঠোর কর্মসূচি দিয়ে ধর্মঘটের ডাক দেয়। মালিকরা ধর্মঘটী শ্রমিকদের উপর ভাড়াটে বাহিনী লেলিয়ে দেয়। তারা শ্রমিকদের উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং শ্রমিকদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়। হতাহত হয় বহু শ্রমিক। এতে শ্রমিকদের আন্দোলন আরো তীব্রতর হয়ে উঠে। ১৮৮৬ সালে হেগে মার্কেটের শ্রমিকদের সাথে শিকাগোর অন্যান্য শ্রমিকরাও আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ১৮৮৬ সালের ১ মে আন্দোলনরত শ্রমিকদের মিছিলে  গুলি চালিয়ে কয়েকজন নেতাসহ অনেককে হত্যা ও আহত এ সকল বাধ্য হয়ে মালিক পক্ষ শ্রমিকদের এই ন্যায্য দাবীর কাছে নতি স্বীকার করে। অবশেষে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মাঝে দৈনিক আট ঘন্টা কার্যকাল নির্ধারণের চুক্তি হয়। শ্রমিকদের এই আত্মত্যাগের দিনটিকে স্বরণ করে প্রতি বছর ১মে পালিত হয় আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস। 

লেখক : প্রিন্সিপাল, দারুত্ ত্বাক্বওয়া ইনস্টিটিউট; খতীব, ইমাম বুখারী (র.) কমপ্লেক্স, টঙ্গী, পশ্চিম থানা, গাজীপুর।  

আজকালের খবর/আরইউ








সর্বশেষ সংবাদ
‘মাত্র ৫ সাংবাদিক হাজির’: ফারুকীর সংবাদ সম্মেলন স্থগিতের ব্যাখ্যা দিলো বাংলা একাডেমি
কিয়েভসহ বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ড্রোন হামলা, নিহত ৩
মাদক গ্রহণের অভিযোগে অব্যাহতিপ্রাপ্ত সেই নারী সমন্বয়ক ফের স্বপদে
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলি, আহত ২
দুপুর ১টার মধ্যে ১০ জেলায় বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
শাকিব খানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সুবিধা গ্রহণের ফিরিস্তি
সাভারে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য ব্র্যাকের উদ্যোগে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা
দুমকিতে ২ নম্বর ইটে চলছে রাস্তা নির্মাণ কাজ
আমাদের সিজিপিএ বেশি দিতে সমস্যা কোথায়: প্রশ্ন ইবি ভিসির
৬ দফা দাবি আদায়ে কঠোর অবস্থানে ভোলাবাসী, ইন্ট্রাকোর স্টেশনে তালা
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft