শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫
দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন
ট্রাম্পের চাপে বদলে যাচ্ছে ইউরোপের অবস্থান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ১১:৫১ AM আপডেট: ১৬.০৩.২০২৫ ১১:৫৩ AM
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি বদলে যাওয়ায় ইউরোপের দেশগুলো নতুন এক বাস্তবতায় প্রবেশ করছে। দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্পের বিতর্কিত অবস্থান ইউরোপজুড়ে বিস্ময় ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। তবে সেই হতাশাই যেন ইউরোপকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার নতুন অনুপ্রেরণা দিচ্ছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইউরোপীয় নিরাপত্তার অন্যতম ভিত্তি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ট্রান্সআটলান্টিক জোট। কিন্তু ট্রাম্পের শাসনামলে এই সম্পর্কের ভিত্তি নড়বড়ে হয়ে পড়ছে। এক সময়ের নির্লিপ্ত ইউরোপ এখন দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। ইউক্রেন নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিধাগ্রস্ত নীতি, ন্যাটো মিত্রদের প্রতি ট্রাম্পের অবজ্ঞা এবং তার বেপরোয়া বক্তব্য ইউরোপকে বাধ্য করেছে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিষয়ে নিজেদের করণীয় পুনর্বিবেচনা করতে। 

ট্রাম্পের আগ্রাসী কূটনৈতিক অবস্থান ও ন্যাটো মিত্রদের অবমূল্যায়ন ইউরোপের ঐক্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারতো। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ইউরোপীয় দেশগুলো এখন আরও দৃঢ়ভাবে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ বলেছেন, ইউরোপকে এখন ‘যেকোনো মূল্যে’ নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। জার্মানি তার ঐতিহ্যগত অর্থনৈতিক সংযম নীতি শিথিল করে প্রতিরক্ষা খাতে বিপুল বিনিয়োগ করছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) গত ৬ মার্চ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ের জন্য সদস্য দেশগুলোর জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি ইউরোর সহজ ঋণ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। ইইউর সদস্য রাষ্ট্রগুলো যৌথভাবে অস্ত্র কেনার জন্য কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী পুনরুদ্ধার প্রকল্পের আদলে একটি তহবিল গঠনেরও পরিকল্পনা করছে।

এই পরিবর্তনের বড় একটি দিক হলো, যুক্তরাজ্যও ইউরোপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় ফিরে আসছে। ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ের তুলনায় যুক্তরাজ্য এখন ইউরোপীয় নীতিনির্ধারণের সঙ্গে বেশি সম্পৃক্ত। একই সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভেতরে অনাগ্রহী দেশগুলোর মতামতকে পাশ কাটিয়ে ‘ইচ্ছুক দেশগুলোর জোট’ গঠন করে অগ্রসর হওয়ার নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে।

তবে চ্যালেঞ্জও কম নয়। ইউরোপের প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়ানো সহজ হলেও জনগণকে কর বৃদ্ধি বা সামাজিক ব্যয় কমানোর প্রয়োজনীয়তা বোঝানো কঠিন হতে পারে। ইউরোপীয় অর্থনীতির ধীরগতি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধ এবং ইউক্রেন সংঘাতে মতপার্থক্যও বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ট্রাম্প যদি দাবি করেন, ইউরোপ তার কারণে নিজেকে শক্তিশালী করছে, তাহলে সেটা পুরোপুরি ভুল হবে না। তবে ইউরোপ কেবল তার পাশে দাঁড়ানোর জন্য নয়, বরং ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিজেকে রক্ষার জন্যই এই পরিবর্তন আনছে। ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র এই ঐতিহাসিক মিত্রতার প্রতি আবার শ্রদ্ধাশীল হবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে। কিন্তু ইউরোপ নিশ্চিত করতে চায়, সেই পুনর্মিলন যদি হয়ও, তবে তা তাদের নিজেদের শর্তেই হবে।


আজকালের খবর/ এমকে








সর্বশেষ সংবাদ
বিচারকাজ পরিচালনায় আপিল বিভাগে নতুন দুই বেঞ্চ
বিচার-সংস্কার-গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে মাঠে নামছে এনসিপি
থানায় বসে ওসির টাকা নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল
চীন মালিকানাধীন ব্যাটারি কারখানায় ডাকাতি, মালামাল লুট
চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ বন্ধের ইঙ্গিত ট্রাম্পের
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে কুবি শিবিরের ‘ফ্রি’ বাস সার্ভিস
কুবিতে চার বছর পর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা শুরু কাল
বিএনপি-এনসিপির পাল্টাপাল্টি জনসভা ঘিরে উত্তেজনা
ভাটারায় প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া, যুবক গ্রেপ্তার
জাবিতে থিসিস ফলাফলে অনিয়মের অভিযোগ ‘চক্রান্তমূলক’, শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft