প্রকাশ: শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫, ৭:৫২ PM আপডেট: ১৫.০৩.২০২৫ ৮:১০ PM

একটি অনুপ্রেরণার নাম মল্লিকা বেগম, অদম্য একজন নারী। হার না মানা মায়ের গল্পের মতো যেন জীবন তার। বুক ভরা স্বপ্ন, দৃঢ়চেতনা আর অসীম সাহসই তার সঞ্জীবনীশক্তি। মা-বাবার ছোট মেয়ে। গরিব ঘরের সন্তান।
তিনি বলেন, কম বয়সেই বিয়ে দেন মা-বাবা। এক গরিব ঘর থেকে আরেক গরিব ঘরে এলাম। একে একে তিন কন্যা সন্তানের মা হলাম। স্বামী স্বর্ণ ব্যবসায় ঋণগ্রস্ত। স্বামীও একসময় আত্মগোপনে রইলো আমাদের ছেড়ে নিরুদ্দেশে। তিন সন্তানসহ চারজনের সংসার চলে না। পড়ালেখা শিখাবো কিভাবে? সন্তানদের জীবন বাঁচাতে শুরু হলো জীবনযুদ্ধ। মনে জেদ চেপে বসে। এত অভাব সয় না! শুরু করি হাঁস-মুরগি পালন । গরু, ছাগল ও ভেড়া বর্গা নিয়ে লালন পালন করি। সেখান থেকে একটি ছাগল বিক্রয় করে কিনলাম সেলাই মেশিন ও আগ্রহ দেখে এগিয়ে এলো প্রতিবেশীরা, সহযোগিতা করলো ও সৃষ্টিকর্তার অপার মহিমায় এগিয়ে এলো এমসিসি কর্মী ও সুযোগ হলো বিউটি পার্লার প্রশিক্ষণের। ধার-দেনা করে শুরু করলাম বিউটি পার্লার ব্যবসা ও হয়ে গেলাম প্রতিষ্ঠানের মালিক। সেখান থেকেই আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে জমি কিনেছি এক মেয়ে প্রকৌশলী অন্যরা স্কুলে। সুন্দর সংসার নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে দিনাতিপাত করছি ইনশাল্লাহ্।
সফল জননী দুঃখ, দুর্দশা, অশান্তির মধ্য দিয়ে উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের দশমৌজা (সাহাপুর) গ্রামের অদম্য মনোবলের সফল জননী হলেন রোকসানা বেগম। ১৯৮৫ সালে এইচএসসি পড়াকালে বিয়ে হয় তার।
তিনি জানান, বিয়ে হওয়ার পর নবদম্পতির সময়কাল ভালোই কেটেছিলো। কিন্তু পর পর তিন মেয়ের জন্ম হওয়ায় পরিবারে নেমে আসে তার উপর অনেক অশান্তি। পরিবারের সদস্যদের কথা ছেলে সন্তান হলো বংশের প্রদীপ, তাই মেয়ে জন্ম নেওয়া যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর জন্য তাকে বাবার বাড়ি পর্যন্ত থাকতে হয়েছে অত্যাচারের কারণে। কিন্তু স্বামী ও শ্বশুরের সহযোগিতা ছিল বিধায় বিভিন্ন চড়াই উৎড়াই পার হয়ে মেয়েদের পড়াশোনা করান, পরে একটি ছেলে সন্তানের জননী হন তিনি। এখন তার তিন কন্যা ও এক ছেলে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার, তথ্যসেবা কর্মকর্তা, তথ্য আপা প্রকল্প, লন্ডনের ওয়েলসিটিতে এমবিএ করছে, আরএকজন বিবিএ শেষ করে ব্যবসা করছে। সমাজে সে এখন একজন প্রতিষ্ঠিত সফল জননী হিসেবে আখ্যা পেয়েছে ।
আজকালের খবর/ওআর