শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫
মা হত্যার দায়ে বাবা জেলে, কেমন আছে ১০ মাসের সেই শিশু?
নাজমুল হুদা, নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৭:০৮ PM
মা ফাতেমা খাতুনকে হত্যা করে বাড়ির পাশের একটি ডোবায় ফেলে রাখে বাবা আল-আমিন। পরে থানা পুলিশ ডোবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। সেইদিনই আল-আমিনকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ। এরপর থেকে আল-আমিন এখনো বগুড়া জেলা কারাগারে হাজতবাস করছে। ২০২০ সালের ৬ মে নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের কৈগাড়ি গ্রামে ঘটে হৃদয় বিদারক এই খুনের ঘটনা। মাকে খুনের সময় শিশু আলহাজ হোসেনের বয়স ১০ মাস। সেই শিশুর বয়স এখন সাড়ে ৪ বছর। বাবা-মা সম্পর্কে কিছুই বলতে পারে না সে। নানীকেই মা বলে জানে শিশু আলহাজ হোসেন। 

নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকার আরব আলী হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে কথা হয় শিশু আলহাজ হোসেন ও তার নানী চাম্পা বিবির সঙ্গে। বাবা-মায়ের কথা জানতে চাইলে শিশু আলহাজ হোসেন তার নানীকে দেখিয়ে দিয়ে বলে ওই যে আমার মা। বাবার কথা জানতে চাইলে সে বলে আমার বাবা নাই। লেখাপড়ার কথা শুনতে চাইলে সে বলে আমি স্কুলে যাবো। আমি পড়তে চাই।

আলহাজ হোসেনের নানী চাম্পা বিবি বলেন, আমি এই হোটেলে থালাবাসন ধোঁয়ার কাজ করি। আমার স্বামী নাই। আমার থাকার যে ঘর সেটিও অন্যের জায়গায়। কোনো সরকারি সুবিধাও আমি পাই না। অনেক কষ্টের জীবন আমার। ১৮ বছর বয়সের মেয়েটাকে বিয়ে দিছিলাম দুপচাঁচিয়া উপজেলার মাটিহাঁস ফকিরপাড়ায়। বিয়ের পর জামাই-মেয়ে আমার এখানেই থাকতো। জামাই রাজমিস্ত্রির সঙ্গে হেলপারি করতো। ভালোই চলচ্ছিলো আমাদের জীবন। বছরখানেক পরে মেয়ের এই ছেলে সন্তান হলো। নাতীর বয়স তখন ১০ মাস। আমি হোটেলে আসিছি। রাতে বাড়িতে যাওয়ার পর দেখি ফাতেমা নাই। জামাইকে বলি ফাতেমা কুটি গেছে। সে বলে আমি জানি না। সারারাত খুঁজে মেয়েকে পাইনি। পরের দিন জামাই সকালে এসে কয় ডোবার মধ্যে ফাতেমার লাশ দেখা গেছে। লাশ দেখার পর প্রথমে জামাই বলে আপনার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে বোঝা গেলো আমার মেয়েকে খুন করেছে ওই পশু।

তিনি আরো বলেন, আমার সোনারটুকরা মেয়েটাকে খুন করে ডোবার মধ্যে ফেলে দিয়েছে ওই জানোয়ার। অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তিনি আরো বলেন, একদিকে মেয়ের লাশ অন্যদিকে এই নাতীর কান্না। পরে পুলিশ এসে ধরে নিয়ে গেলো ওই পশুকে। কি যে সময় তখন আমাদের জীবনে তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। তারপর আমি থানায় মামলা করি। এখনো সে জেলেই আছে। অনেক কষ্টে নাতীকে বড় করছি। কাজ করে যে টাকা পাই সেই টাকা খরচ করে খাই আবার মামলাটাও চালাই। আমার মেয়েকে সে খুন করেছে তার ফাঁসি হলেই আমার শান্তি।

আরব আলী হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী আরব আলী বলেন, চাম্পা আমার হোটেলে দীর্ঘদিন হলো কাজ করে। আমার লোকদের বলা আছে চাম্পার নাতীর খাওয়া দাওয়ার যেনো কোনো কষ্ট না হয়।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী বগুড়া জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট শ্রীদাম ঘোষ বলেন, ওই মামলায় শুধুমাত্র জবানবন্দি গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেটের সাক্ষী বাদ আছে। আর সব সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের সাক্ষীর পরেই রায় আসবে। আশা করা যায় আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি হবে।

আজকালের খবর/ওআর

 



















সর্বশেষ সংবাদ
আগামী নির্বাচন পৃথিবীতে নজির সৃষ্টি করবে: জাতিসংঘ মহাসচিব
রাজশাহীতে ২ ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ
দুই দফা দাবিতে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করলো ইনকিলাব মঞ্চ
ফাল্গুনের ভরা জোৎস্নায় বিষণ্ন নিঃসঙ্গ জীবনানন্দ
চাক বাংলা অভিধান ও চাক সংস্কৃতি চর্চা
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
টেকনাফে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সূর্যমুখীর চাষ
গৌরীপুরে হোলি উৎসব
কানাডা গিয়ে সরকার বিরোধী লেখালিখি, রাষ্ট্রদূত হারুনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ
মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী রূপালি গ্রেপ্তার
অব্যাহত ধর্ষণ, খুন, নৈরাজ্য প্রমাণ করে দেশ চালাতে ব্যর্থ হচ্ছে সরকার: সিপিবি
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft