প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৬:৪০ PM

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা ইউনিয়নে দু’গ্রুপের পেশি শক্তির লড়াইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারপিটের ঘটনায় আহত রাশেদুল হাসান (২৭) মৃত্যুবরণ করেন। রাশেদ বগুড়া শজিমেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাতদিনের মাথায় ১৪ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) সন্ধায় তার মৃত্যু হয়। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে দল বদলকারী জামায়াত নেতা মাজেদুর রহমান জুয়েল, স্থানীয় বিএনপি নেতা জিয়াউল হক লিপন ও জিএম আলী হাসান নারুনের লোকজন উত্তেজিত হয়ে পাকুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এম এ হান্নান বাটালুর ঔষধের দোকান ও বাড়িঘরসহ ৬টি বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগ করে।
মৃত রাশেদুল হাসান রাশেদ উপজেলার পাকুল্লা ইউনিয়নের পাকুল্লা গ্রামের ছাইফুল ইসলাম আকন্দের ছেলে। সে ওই ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পাকুল্লা বাজারে হামলার শিকার হন তিনি।
জানা যায়, সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিনস্থ ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ ও ১৯ নম্বর খাদের মাছ চাষের জায়গা নিয়ে দ্বন্দে এই মারপিট এবং আহত রাশেদের মৃত্যু হয়েছে। ৫ই আগস্টের পর তিন দফায় ওই মাছ চাষের খাদগুলি থেকে স্থানীয় দল বদলকারী জামায়াত নেতা জুয়েল জোড়পূর্বক প্রায় কয়েক লাখ টাকার মাছ নিধন করে। পরে বিষয়টি জানতে পেরে পাকুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এম এ হান্নান বাটালুসহ এলাকাবাসী জুয়েলকে মাছ ধরতে বাধা দেয়। পরবর্তীতে জুয়েল ক্ষিপ্ত হয়ে তার লোকজন নিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বাটালুর বাড়িতে হামলা চালায়। পরে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঐদিন বিকালে পাকুল্লা বাজারে উভয়পক্ষের মধ্যে মারপিট ঘটে এতে রাশেদসহ কয়েকজন আহত হয়। এছাড়াও পাকুল্লা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালেয়ের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে উভয়ের গ্রুপে দ্বন্দও ছিলো।
রাশেদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিলাদুন নবী বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে সেখানে তিনটি গ্রুপের দ্বন্দে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। তারই এক গ্রুপ বহিরাগত লোক নিয়ে এসে স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির বাড়িতে হামলা চালায়। এরই জের ধরে বিকালে পাকুল্লা বাজারে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, এতে রাশেদ আহত হন। পরে সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে, এলাকায় পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে।
মাজেদুর রহমান জুয়েল তার ফেসবুক কমেন্টে বলেন, রাশেদকে ৭ তারিখে ভর্তি করা হয় শজিমেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ১০ তারিখে তাকে ছুটি দেয়। তাকে ওষুধ কেনার জন্য যখন আমি মফিজ পাগলার মোড়ে নিয়ে আসাই, তখন সে শ্বাসকষ্ট অনুভব করে, দ্রুত পরীক্ষা করে দেখা যায় যে তার কিডনি ড্যামেজ হয়ে গেছে। তখন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয় এবং সেখানে কিডনি ফেইলিওর হয়ে ইন্তেকাল করে। এর স্বপক্ষে আমার কাছে দলিল প্রমাণ আছে।
তবে নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে কয়েকজন জানান, রাশেদের মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনো রহস্য রয়েছে।
কারণ হিসেবে তারা বলছেন, আহত হওয়ার পর রাশেদ অনেকটাই সুস্থ ছিল। তাছাড়াও শজিমেক মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাইভেট ক্লিনিকে স্থানান্তর করাই রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
আজকালের খবর/ওআর