সোমবার ২৪ মার্চ ২০২৫
গোমতী নদীতে পলো দিয়ে মাছ ধরার মহোৎসব
মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী, কুমিল্লা
প্রকাশ: সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১:৪০ PM আপডেট: ১৭.০২.২০২৫ ২:১৫ PM
ফাল্গুন মাসের শুরুতে প্রতি বছরের মত এবারও কুমিল্লার সদর উপজেলায় গোমতী নদীতে চলছে মাছ শিকারের মহোৎসব। শীতের তীব্রতা আর উজানে পানি কমে আসলে শৌখিন মাছ শিকারিরা দূর-দূরান্ত থেকে এসে এই ঐতিহ্যের উৎসবে শামিল হন। এবারও পাঁচ শতাধিক মৎস্য শিকারি একসঙ্গে নামেন গোমতীতে।

ভারত সীমান্তে জিরো পয়েন্ট থেকে নদীতে নেমে হেঁটে একদিনে কটক বাজার থেকে চাঁনপুর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় চলেছে এই মাছ শিকার।

পলো, ছিটা জাল, ঠেলা জালে মিলছে বড় বড় রুই, কাতল, বোয়াল, গজার, আইড় ও মৃগেল মাছ। এ ছাড়া হাতে ও জালে ধরা পড়ছে টেংরা, বইচা, বাইম, কাচকিসহ নানান ছোট মাছও।

কারো পলো কিংবা জালে বড় মাছ ধরা পড়লেই হই হই রবে মুখরিত হয়ে উঠছে পুরো নদী পাড় এলাকা।
শৌখিন মৎস্য শিকারিরা জানান, মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেই এই জমায়েত হয় প্রতি বছর। যে মাছ ধরা হয় তা- বিক্রির জন্য নয়। যারা মাছ ধরতে আসেন তারা পেশাদার জেলেও নন। শুধু শখের বশে নানান শ্রেণি, পেশা ও বয়সের মানুষ এক সঙ্গে নামেন নদীতে।

শখের মাছ যায় ঘরে। এই রেওয়াজ অন্তত শত বছরের। শুধু গোমতীতে নয়- কাকড়ী নদী, ডাকাতিয়া নদী, সোনাইছড়ি খাল ও কার্জন খালেও এই উৎসব চলবে বলে জানান তারা।

গোমতী নদী থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূর চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর থেকে পলো নিয়ে মাছ ধরতে এসেছেন সত্তরোর্ধ্ব ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, ৪০ বছর ধরে এই উৎসবে অংশ নেন। মাছ না পেলেও দুঃখ নেই কারো। উৎসবে অংশ নেওয়ার জন্য এই দিনটি দোকান বন্ধ রাখি।

উপজেলা সদর এলাকা থেকে এসেছেন নাজমুল হাসান। পেশায় তিনি বেসরকারি চাকরিজীবী। নাজমুল পেয়েছেন গজার আর বাইম মাছ।

তিনি বলেন, আমরা চার ভাই এসেছি মাছ ধরতে। বোয়াল আর কাতল মাছও পাওয়া গেছে। গত বছর বন্যা হওয়ায় এ বছর মাছ বেশি পাওয়া গেছে।
সদর দক্ষিণ উপজেলার হাজত খোলার বাসিন্দা সৌদি আরব প্রবাসী রাসেল। তিনি এসেছেন গোমতীতে মাছ ধরতে। রাসেল অন্তত আট কেজি ওজনের মৃগেল মাছ পেয়েছেন। বড় মাছ পেয়ে তিনি খুব খুশি।

রাসেল বলেন, ছুটিতে বিদেশ থেকে এসে সময় মিললেই এই মাছ ধরার উৎসবে চলে আসি। সারাদিনের জন্য অটোরিকশা ভাড়া করে আমরা পাঁচজন এসেছি। ভালো লাগছে।

মাছ শিকারিদের প্রতি বছর যিনি একত্রে করেন তিনি হলেন সর্দার আবদুর রহিম। সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়ারা এলাকার বাসিন্দা। তিনি নিজে একজন পরিবহন চালক।

তিনি বলেন, গোমতী নদীতে পানি কমে আসলেই আমরা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে একটি দিন-তারিখ ঠিক করি। পরে এক সঙ্গে নেমে পড়ি নদীতে। বেশির ভাগই পলো নিয়ে আসেন মাছ ধরতে। কেউ কেউ জাল আনেন। এখানে বেশির ভাগ বাচ্চা মাছ ছেড়ে দেওয়া হয়।”

আবদুর রহিম বলেন, দিন দিন গোমতী নদী স্রোত হারাচ্ছে। শুকনো সময়ে পানি একে বারেই কমে যায়। ভারত থেকে কম পানি আসে। পানি না থাকলে মাছও থাকবে না। নদী না বাঁচলে উৎসবও বাঁচবে না। 

আজকালের খবর/বিএস 








সর্বশেষ সংবাদ
আইজিপির পদমর্যাদা পেলেন ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাদ আলী
মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করবেন প্রধান উপদেষ্টা
বাউবিতে খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য কামনায় দোয়া ও ইফতার মাহফিল
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য এ্যাবের দোয়া ও ইফতার
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি বিএনপি নেতাদের
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
ডিএসএ ইউনাইটেড একাডেমির সভাপতি শামসুর রহমান, অভিভাবক সদস্য মানিক
টেকনাফে নৌকাডুবি, ৩৫ ঘণ্টা পর বিজিবি সদস্যের মৃতদেহ উদ্ধার
সারজিস বা হাসনাত একজন মিথ্যা বলছে: হান্নান মাসুদ
চুয়াডাঙ্গার রেললাইনে ফাটল, ধীর গতিতে ট্রেন চলাচল
সারিয়াকান্দিতে বিএনপির উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft