
যে নরম হাতে বই নিয়ে যাওয়ার কথা স্কুলে, আর সেই হাতেই লোহার যন্ত্রপাতির লারাচারা করা হচ্ছে, আবার দেখা যাচ্ছে গাড়ি চালাচ্ছে, বিভিন্ন দোকানে কাজ করছে. এই কাজগুলো শিশুদের দিয়ে করানো হচ্ছে। পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় দিন দিন শিশুশ্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিছুতেই ধামানো যাচ্ছে না এ কাজগুলো থেকে শিশুদের। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে এ শিুশু শ্রমিক দেখতে পাওয়া যায়। প্রশাসন থেকে বিভিন্ন উদ্যোগে নেওয়া সত্তেবও এর লাগাম টেনে ধরতে পারচ্ছে না।
দেশের আইনে শিশুশ্রম একেইবারেই নিষিদ্ধ। আইনে আছে ১৪ বছরের নিচে কোনো শিশুদের দিয়ে কাজ করানো যাবে না। শ্রমআইনটি ২০০৬ সালের পরবর্তীতে ২০১৮ সালে সংশোধন করা হয়েছিল। এতে বলা হয়েছে, ১৪ বছরের নিচের বাচ্চারা হচ্ছে শিশু তাদের কারখান, ইটভাটাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কোনো কাজে নিয়োগ করা হলে এটি একটি অপরাধ তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল কোর্টের আইন অনুযায়ী শাস্তির বিধান রয়েছে।
এক পরিসংখ্যানে উঠে আসছে, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের দরিদ্র, দিনমজুর, গরিব ও মধ্যবিত্তের পরিবার থেকে আসা প্রায় হাজার হাজার শিশু অভাবের তাড়নায় তাদের বাবা-মারা উপজেলা ও জেলা শহরের কলরাখানা, হোটেল-রেস্তেরাঁ ও ইটেরভাটাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সামান্য বেতনে ও পেটে ভাতে কাজে দিয়েছেন।
এছাড়া শহর এলাকার প্রতিটি হোটেলে ২-৩ শিশু শ্রমিক আছে এদের মধ্যে কেউ সামান্য মজুরি পায় আর বেশিরভাগ কাজ করে পেটেভাতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাড় ভাংগা পরিশ্রম করে।
এভাবে উপজেলার বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিভিন্ন ওয়ার্কসপ ও গ্যারেজগুলোতে একইভাবে শিশুরা কেউ পেটেভাতে কেউ নাম মাএ বেতনে কঠিন পরিশ্রম করছে।
এদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু শ্রমিকের হাতে পায়ের বিভিন্ন রোগে ভোগছে। মালিক পক্ষ থেকে শিশু শ্রমিকদের অসুখ বিসুখ চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা না নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এখানেই থেমে নেই এই শিশুশ্রম।
তবে সচেতন মহল বলছে, দিনেদিনে বেড়েই চলছে এই শিশুশ্রম। এখনি না থামালে দিনদিন এ শিশুশ্রম আরো ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে যা নতুন প্রজন্মের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিবে। গ্যারেজের শিশু শ্রমিক রনি বলেন, দোকানে কাজের কোন বেতন দেওয়া হয় না, এখানে আমি কাজ শিখছি।
আটঘরিয়া বাজরের স্টিল দোকানের মালিক কামরুল ইসলাম বলেন, আমার দোকানে এর কাজ করে তাদের কোনো বেতন দেওয়া হয় না। তার এখানে কাজ শিখছে। তবে কাজ শিখা হলে তাদের দিন মজুরি বা মাসিক বেতন দেওয়া হবে। আর এখন যেহেতু কাজ শিখছে সেই নাস্তাসহ কিছু হাত খরচ দেওয়া হয়।
আজকালের খবর/ওআর