পটুয়াখালীতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে জামায়াতপন্থী আইনজীবীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
ওই হামলায় পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রুহুল আমিন, জেলা জামায়াতের আমির ও আইনজীবী নাজমুল আহসান এবং মো. মহিউদ্দিন–৪ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রুহুল আমিনকে পটুয়াখালী মেডিক্লযা কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চিকিৎসাধীন পিপি রুহুল আমিন বলেন, ‘পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন উপলক্ষে মঙ্গলবার ফরম কেনা ও জমা দেওয়ার দিন ধার্য ছিল। দুপুর ১২টার পর আমি, পটুয়াখালী জেলা জামায়াতের আমির নাজমুল আহসানসহ অন্তত নয়জন আইনজীবী ফরম কেনা ও দাখিলের জন্য জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনে উপস্থিত হই। এ সময় বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবী ওয়াহিদ সরোয়ার কালাম, শরীফ সালাউদ্দিন, মাহাবুবুর রহমান, আরিফুর রহমানসহ অন্তত ৫০ জন আমাদের ফরম কিনতে বাধা দেন ও মারধর করেন। এ সময় আমার কাছে থাকা এক লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।’
জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী হালিম বিশ্বাস বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে মনোনয়ন কিনতে আমি, আইনজীবী ফকরুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও মো. শামীমকে নিয়ে আইনজীবী সমিতি ভবনে যাই। এ সময় বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীসহ বহিরাগত অন্তত ৫০ জন আমাদের মারধর করেন।
হামলার শিকার সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আইনজীবী মো. মহিউদ্দিন-৪ বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে মনোনয়ন ফরম কিনতে গেলে বিএনপি-সমর্থিত কিছু আইনজীবী আকস্মিকভাবে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও মারধর করে আইনজীবী ভবন থেকে আমাকে বের করে দেন। হামলার পর আমি পটুয়াখালী মেডিক্লযা কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপিপন্থী আইনজীবী ওয়াহিদ সরোয়ার কালাম বলেন, ‘আমি কোনো হামলা করিনি এবং নেতৃত্ব দিইনি। যিনি বলেছেন, ভুল বলেছেন। সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী মহিউদ্দিন-৪ এতদিন আওয়ামী লীগার ছিলেন। তাই তার সঙ্গে একটু ঝামেলা হয়েছে। পিপি রুহুল আমিনকে কে মারধর করছে, তা আমার জানা নেই।’
আইনজীবী শরীফ সালাউদ্দিন বলেন, ‘হামলার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আইনজীবী সমিতি ভবনে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
এদিকে ঘটনার সময় আইনজীবী সমিতি ভবনে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে আইনজীবীরা কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীকে একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের প্রধান কমিশনার মো. মোহসীন উদ্দিন বলেন, পিপি রুহুল আমিন কোনো আইনজীবীর হাতে আহত হননি। কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। তবে কেউ হামলার শিকার হলে লিখিত অভিযোগ দিতে পারেন।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ আহম্মেদ বলেন, ‘পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ফরম ক্রয় ও দাখিল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলার কথা শুনেছি। কিন্তু কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি।’
আজকালের খবর/আরইউ