প্রকাশ: রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৮:৪০ PM

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় দেশি মুরগি পালনে সাবলম্বী হচ্ছেন এলডিডিপি প্রকল্পের পিজির নারী সদস্যরা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বাস্তব্যয়নে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় শিবগঞ্জ উপজেলায় দেশি মুরগি পিজি নারী সদস্যের ১৫১ জনের মাঝে প্রয়োজনীয় দেশি মুরগি পালনের প্রশিক্ষণ দিয়ে অনুদান হিসেবে ১টি করে পরিবেশবান্ধব দেশি মুরগি ঘর করে দেওয়া হয়। এরমধ্যে কানসাট ইউনিয়নের মোহনবাগ দেশি মুরগি পিজির ৩৮ শাহাবাজপুর ইউনিয়নের ধোবড়া দেশি মুরগি পিজির ৪০ জন, নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের নয়ালাভাঙ্গা দেশি মুরগি পিজি ৪০ এবং দুর্লভপুর ইউনিয়নের দুর্লভপুর দেশি মুরগি পিজির ৩৩ জন। আর এতে করেই ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে শুরু করে এলডিডিপি প্রকল্পের পিজির নারী সদস্যরা।
সরেজমিন প্রকল্প এলাকায় পরিদর্শন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের মোহনবাগ দেশি মুরগি পিজির সদস্য মনিরুল ইসলামের স্ত্রী মোস্তারী বেগম বলেন, আগে বাড়িতে দেশি মুরগি পালন করতাম কিন্তু অসুখ বিসুখে মুরগি মারা গিয়ে লাভবান হতে পারতাম না।
এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় দেশি মুরগি পিজির সদস্য হয়ে সরকার থেকে দেশি মুরগি পালনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও একটি পরিবেশবান্ধব মুরগির ঘর পেয়ে দেশি মুরগি পালন শুরু করি। এখন আমার ৫০টি দেশি মুরগি রযেছে গড়ে প্রতিদিন ১৫টি করে ডিম পাই। কিছু বিক্রি করে ছেলে মেয়েদের স্কুলের ভরণ-পোষণ বহন করি এবং পরিবারের পুষ্টি চাহিদা মিটে। ৫ জন সদস্যের সংসার নিয়ে আমার স্বামী যখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলো তখন দেশি মুরগি পালন করেই সংসারের হাল ধরেছি এখন আমি সাবলম্বী।
এলডিডিপি প্রকল্পের উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের দুর্লভপুর দেশি মুরগি পিজির আরেক নারী সদস্য বাবুল হোসেনের স্ত্রী সেলিনা বেগম বলেন, সরকার থেকে আমাকে দেশি মুরগি পালনের প্রশিক্ষণ ও মুরগি পালনের জন্য একটি ঘর দিয়েছে। দেশি মুরগি পালন করে লাভবান হয়েছি। আমার খামারে ৪০টি দেশি মুরগি রয়েছে। প্রতিদিন ১৩-১৭ ডিম পাই। পরিবারের আমিষ ও পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে দৈনিক ১০টি ডিম বাজারে বিক্রয় করে ২০০ টাকা উপার্জন হয়। স্বামীর উপর নির্ভর না করে আমি আমার স্কুলপড়ুয়া দুই মেয়েকে অর্থ দিতে পারি। আমি দেশি মুরগি পালন করে স্বাবলম্বী।
একই সুরে কথা বলেন এলডিডিপি প্রকল্পভুক্ত পিজির অন্য সদস্যরা। তবে নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের পিজির নারী সদস্য শারমিন খাতুন বলেন, যদি সরকার থেকে আমাদের দেশি মুরগির বাচ্চা অনুদান হিসেবে সরবরাহ করা হয় তাহলে আমরা আরো আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারবো।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শাহাদৎ হোসেন বলেন, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বাস্তব্যয়নে এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় দেশি মুরগি পিজির ১৫১ নারী সদস্যেকে অনুদান হিসেবে ১টি করে পরিবেশবান্ধব দেশি মুরগি ঘরের জন্য অর্থায়ন করা হয়। মুরগি পালনের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করি। সদস্যের পাশাপাশি অন্য মহিলারাও দেশি মুরগি পালনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। সরকারের লক্ষ্য সামাজিক, অর্থনৈতিক, আমিষ ও পুষ্টি চাহিদা সম্পূর্ণ দেশ গড়া। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। সদস্যের কিছু বাড়তি চাহিদা রয়েছে যা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
আজকালের খবর/ওআর