প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১:০৭ PM আপডেট: ০৬.০২.২০২৫ ১:২৪ PM

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির পেছনে ছয়তলা ভবনটি ভাঙা হচ্ছে, সেখান থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র ভেঙে নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে এমন চিত্র দেখা গেছে। এ সময় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ভাঙা হচ্ছিল। বেলা ১১টা পর্যন্ত বাড়িটির অনেক অংশই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, পেছনের ওই ছয়তলা ভবনে শত শত মানুষ ঢুকছেন। কেউ কেউ ভেতর থেকে জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে আসছেন। আর ভবনটির ভেতর থেকে হাতুড়ির আঘাতে নানা কিছু ভাঙার শব্দ শোনা যাচ্ছে।
ওই ভবন থেকে যেসব জিনিস নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, এর মধ্যে বেশির ভাগই শেখ মুজিব ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লেখা কিংবা পরিবারের সদস্যদের লেখা বই রয়েছে। কেউ এসব বইয়ের কার্টন নিয়ে বের হচ্ছিলেন, কারও কারও হাতে ছিল কয়েকটি করে বই।এসব বইয়ের মধ্যে রয়েছে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’, ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভলিউম-৩’, ‘জনসমুদ্রে এক মহামানব’, ‘জাতির জনক ও শেখ রাসেল’ ইত্যাদি।ভেতর থেকে ভাঙারি পণ্য হিসেবে বিক্রয় করা যাবে—এমন স্টিল, লোহা ও কাঠের নানা কাঠামো ভেঙে যে যার মতো নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। স্টিল ও লোহার কাঠামো ভবন থেকে ভেঙে ভেঙে কয়েকজনকে নিচে ফেলতে দেখা যায়। নিচে থাকা কয়েকজন এগুলো রিকশায় করে অন্যত্র সরিয়ে নেন। যাঁরা এসব লোহালক্কড় নিচ্ছেন, তাদের বেশির ভাগই নিম্ন আয়ের মানুষ।
আল আমিন নামের এক ব্যক্তি লোহার কিছু কাঠামো নিচ্ছিলেন। এসব নিয়ে কী করবেন, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভাই, বিক্রি করে দিমু। সেই টাকায় ভালোমন্দ খামু। মুরগি পাইলে মুরগি, গরু মাংস পাইলে গরু মাংস কিনে খামু। এই ছাড়া আর কিছুই না।’
ভাঙা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে এক ব্যক্তি বলেন, ‘এই মহিলা নিজের জিদ দিয়ে দলটাকে একেবারে শেষ কইরা দিয়া গেল।’
সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটির সামনে মানুষের ভিড় দেখা গেছে। শত শত মানুষ ওই বাড়ির সামনে আসছিলেন। ভিডিও করছিলেন। ছবি তুলছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকেও একটি এক্সকাভেটর দিয়ে বাড়িটি ভাঙার কাজ হচ্ছিল। তবে মাঝে ঘণ্টাখানেক সময় ভাঙার কাজ সাময়িক বন্ধ ছিল।
ফেসবুকে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গতকাল বুধবার রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। অভ্যুত্থানের ছয় মাস ছিল গতকাল। এদিন রাত ৯টায় নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। এ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল দিনভরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উত্তেজনা চলে।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেক ছাত্র-জনতা ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফেসবুকে ধানমন্ডি ৩২ অভিমুখে ‘বুলডোজার মিছিল’ এবং ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’ কর্মসূচির ডাক দেন।
আজকালের খবর/ এমকে