বহু হতাহত, রক্তপাত, বিপুল বিশাল পরিমাণ সম্পদ ধ্বংসের পর অবশেষে ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডের অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধ ও রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে। এটি আপাতত গাজা, ফিলিস্তিনসহ বিশ্ববাসির জন্য স্বস্থির এবং শুসংবাদ। মূলত গত ১৫ জানুয়ারি সুদূর মধ্যপ্রাচ্য থেকে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভেন উইটকফের একটি ফোনকল ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সহযোগীদের বিস্মিত করেছিল। ওই দিন সন্ধ্যায় কাতারের রাজধানী দোহা থেকে উইটকফ ঘোষণা দেন, তিনি ইসরায়েলে যাচ্ছেন এবং নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তখন ইহুদিদের অবকাশের দিন সাব্বাত শুরু হয়ে গেছে। এই ফোন কলই অবরুদ্ধ এবং যুদ্ধকবলিত গাজাসহ সমগ্র বিশ্বের জন্য শুসংবাদের ইংগিত পাওয়া যায়। এ নিয়ে নেপথ্যের কাহিনী হচ্ছে, নেতানিয়াহুর সহযোগীরা বললেন, অবকাশের দিনে তিনি শুধু একবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন; সেটি নেতানিয়াহুর ইচ্ছামতো কোনো সময়ে। তখন ট্রাম্পের দূত আইনজীবী উইটকফ তাদের প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়ে বলেন, সকালের দিকেই তিনি দেখা করতে চান। কিছুক্ষণ পরই ফিলিস্তিনের ‘অবরুদ্ধ গাজায়’ শুরু হয় বহুল কাক্সিক্ষত যুদ্ধবিরতি। ১৯ জানুয়ারি ফিলিস্তিনের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কার্যকর হলো যুদ্ধবিরতি। শুধু গাজাবাসীরা নয়, বিশ্বের বহু মানুষ উন্মুখ হয়ে ছিল এই মুহূর্তটির জন্য। সবারই আগ্রহ গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে। এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথমদিনে ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি ৯৫ জন ফিলিস্তিনি; যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু তাদের বিনিময়ে হামাস তিনজন জীবিত নারী জিম্মিকে মুক্তি দেবে। বন্দি বিনিময় শুরু সন্ধ্য থেকে। রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেনে আক্রমণ, হামলা, যুদ্ধ এবং ফিলিস্তিনীর অবরুদ্ধ উপত্যকা গাজা, মিয়ানমারে সামরিক জান্তা কর্তৃক বেসামরিক এবং সাধারণ নাগরিক হত্যার ঘটনায় জাতিসংঘসহ বিশ্বের দেশে দেশে প্রতিবাদ হলেও বাস্তবে যুদ্ধে লিপ্ত কোনো পক্ষই আন্তর্জাতিক জনমত, প্রতিবাদ উপেক্ষা করে যুদ্ধ, মানুষ হত্যা, সম্পদ ধ্বংসলীলা অব্যাহত রাখে। যুদ্ধাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা, জানমালের হেফাজতে জাতিসংঘের আহ্বানও প্রত্যাখান করে। বাংলাদেশও বরাবরই রাশিয়া-ইউক্রেণের মধ্যকার যুদ্ধ, ইসরায়েল-গাজার মধ্যকার সংঘাত, যুদ্ধ, মিয়ানমারে সামরিক জান্তা কর্তৃক রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগৌষ্টির উপর নির্বিচাওে হামলা, হত্যা, নির্যাতন, তাদের সম্পদ ধ্বংস, সম্পদে অগ্নিসংযোগ, তাদের জোর করে বাস্তুচ্যুত করার বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দাবি জানিয়ে আসছে। প্রসঙ্গত মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত প্রায় বার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়। সেই থেকে বাংলাদেশ বরাবরই বিশ্ব নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসলেও বাস্তবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনে কার্যকর কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার দ্য গার্ডিয়ান অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ওই বৈঠক ছিল ‘উত্তেজনাপূর্ণ’। স্টিভেন উইটকফ যে বার্তা পৌঁছে দিলেন, তা হলোÑ নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপ রয়েছে। তিনি জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি যুদ্ধবিরতি চান। ট্রাম্প চান গাজায় যুদ্ধ শেষ হোক। তার হাতে আরেকটি কাজ আছে। ওই বৈঠকের বর্ণনা দিতে গিয়ে নেতানিয়াহু সরকারের এক কর্মকর্তা চ্যানেল ১৪-কে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষ থেকে উইটকফ এক কঠোর বার্তা দিয়েছেন; তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে একটি চুক্তি চেয়েছেন। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চুক্তির জন্য কাজ করেছেন আরো অনেকে। যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন, মিসর, তুরস্ক ও উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর শীর্ষ নেতাদের ভূমিকা ছিল। তারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছিলেন; একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে হামাস ও ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছিলেন।
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি সোমবার তুরস্কের গোয়েন্দাপ্রধান ইব্রাহিম কালিন আঙ্কারায় হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দেন। সব কিছুকে ছাপিয়ে একটি বিষয় স্পষ্টÑ ট্রাম্প ও তার বিশেষ দূত উইটকফের চেষ্টা। গত ১৪ জানুয়ারি বুধবার বিকালে দোহায় যখন চুক্তির বিষয়টি দৃশ্যমান, তখন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার জানান, তিনি তেল আবিবে ফিরে যাচ্ছেন। ওই দিনই ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে চুক্তিতে তার কৃতিত্বের ঘোষণা দেন। তিনি জানান, নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিজয়ের কারণেই এ মহাকাব্যিক চুক্তিটি হয়েছে। এটি পুরো বিশ্বের জন্য এই বার্তা যে, তার প্রশাসন শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে; পাশাপাশি সব মার্কিনির সুরক্ষায় চুক্তি নিয়ে আলোচনা করবে। সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্প বলেন, এটি ভেবে তিনি রোমাঞ্চিত যে, মার্কিন ও ইসরায়েলের জিম্মিরা বাড়ি ফিরবেন, তারা তাদের পরিবার ও প্রিয়জনের সঙ্গে পুনর্মিলিত হবেন। যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব নিতে চেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। তিনি এটিকে তার প্রশাসনের কূটনৈতিক সাফল্য বলে বর্ণনা করেন।
এর আগে বহুবার গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। হামাসের প্রতিনিধিরা মিসরের রাজধানী কায়রোসহ বিভিন্ন স্থানে আলোচনায় বসেন। আলোচনায় ইসরায়েলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ভেস্তে যায়। দৌড় শুরু হলেও তা চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছায়নি। এসবের মধ্যেই হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে ইরানের রাজধানী তেহরানে হত্যা করে ইসরায়েল। এতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে; যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়ে।
বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ বন্ধের অঙ্গীকার করে গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন ট্রাম্প। ২০ জানুয়ারি তিনি শপথ নেন। শপথের আগেই তিনি গাজায় যুদ্ধ বন্ধের চুক্তির মাধ্যমে বড় ধরনের সাফল্য দেখান। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে হামাস এক হাজার ২০ জনকে হত্যা ও ২৫০ জনকে জিম্মি করে। পরে ইসরায়েল গাজায় সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাটি চালায়।
গাজার যুদ্ধপরবর্তী করণীয় এবং গাজায় শান্তি, স্থিতিশীলতা, সেখানে বসবাসরত এবং প্রাণ ভয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়া মানুষকে তাদের স্বদেশে নিরাপদে, নিশ্চিন্তে, নির্ভয়ে ফিরে আসার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। একই সঙ্গে মানবিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর, অবকাঠামো, রাস্তাঘাট, পুলকালভার্ট দ্রুত নির্মাণ, মেরামত, পুনর্নির্মাণ, পুনর্গঠনমূলক কাজকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা প্রয়োজন। বিশেষ করে যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষকে মানবিক সহায়তা দেওয়া দরকার। এ ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ত্রাণ সরবরাহ, যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। আহত ও রোগীদের চিকিৎসা, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা এবং মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা দিতে হবে। আন্তর্জাতিক সহায়তা বিশেষ করে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে সমন্বিতভাবে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা। পুনর্গঠন কার্যক্রমের মধ্যে পরিকাঠামো মেরামত, ধ্বংসপ্রাপ্ত ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল এবং সড়ক পুনর্নিমাণ করতে হবে। বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ পুনরুদ্ধার, পুনস্থাপন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা এবং বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ পুনরায় চালু করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। শিশুদের শিক্ষার সুযোগ ফিরিয়ে আনতে অবকাঠামো এবং শিক্ষা উপকরণের ব্যবস্থা করা।
অবশ্য যুদ্ধ পরবর্তী স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন, অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন যথাযথ রাজনৈতিক উদ্যোগ। এ জন্য যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে সব পক্ষের মধ্যে একটি স্থায়ী শান্তি চুক্তি প্রতিষ্ঠা করা। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা সমূহের মাধ্যমে যুদ্ধ লিপ্ত উভয় পক্ষেও মধ্যে মধ্যস্থতা জরুরি। তা ছাড়া জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে দ্বন্দ্বের একটি টেকসই এবং দীর্ঘস্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার বিষয়টিও ভাবনার মধ্যে রাখতে হবে। অন্যদিকে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যবস্থা নেওয়া।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে স্থানীয় অর্থনীতি পুনর্গঠন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা পুনরায় চালু করার উদ্যোগ সিতে হবে। আন্তর্জাতিক ভাবে আর্থিক সহায়তায় বিশ্বব্যাংক এবং অন্যান্য সংস্থার মাধ্যমে উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন করা দরকার। ব্যবসা ও কৃষি খাতের পুনর্গঠনে কৃষি এবং স্থানীয় ব্যবসা পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। অনুরূপ সামাজিক পুনর্বাসন করা দরকার।
মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তায় যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য কাউন্সেলিং এবং সাপোর্ট গ্রুপ তৈরি করা দরকার। আর শিশুদের সুরক্ষায় এতিম এবং যুদ্ধক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় এবং শিক্ষা, পুনর্বাসন প্রদান করা দরকার। সামাজিক সংহতি, ভুক্তভোগী সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সহযোগিতা বাড়াতে বিভিন্ন কর্মসূচি চালু করতে হবে। সচেতনতা ও গণমাধ্যমের ভূমিকাও গাজার জন্য জরুরি। বিশেষ করে সঠিক তথ্য প্রচার করার মাধ্যমে গাজার পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্ববাসীকে সঠিক তথ্য উপাত্ত সম্পর্কে অবহিত করা, প্রচার করা, সচেতন করতে নিরপেক্ষ এবং সঠিক তথ্য প্রচার করা। এ জন্য গণমাধ্যমের সহায়তায় মানবিক সংকট মোকাবিলায় জনগণের সমর্থন নিশ্চিত করা।
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার যুদ্ধ বন্ধ, শান্তি প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ইসরায়েল এবং প্যালেস্টাইনের মধ্যে একটি স্থায়ী দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের প্রচেষ্টা। বিচার নিশ্চিতকরণ, যুদ্ধাপরাধের বিচার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। গাজা পুনর্গঠন একটি দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল প্রক্রিয়া, যা আন্তর্জাতিক সমন্বয়, আর্থিক সহায়তা এবং স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশের ওপর নির্ভরশীল।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় ৪৭ হাজার ৮০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে গেছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রয়েছেন। এ ছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। প্রত্যাশা গাজায় চিরস্থায়ী যুদ্ধ বন্ধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সমঝোতা হবে। তাহলেই সম্ভব গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা।
লেখক : সাংবাদিক, সাধারণ সম্পাদক; বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম।
আজকালের খবর/আরইউ