
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই আন্দোলনে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটির চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রদানে ব্যর্থতা এবং বিচারকাজে প্রশাসনের সীমাহীন অযোগ্যতা ও গড়িমসির প্রতিবাদে মশাল মিছিল করেছে গনঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে প্রক্টর অফিসে সমাবেশ শেষে প্রো-ভিসির (শিক্ষা) বাসভবনে এসে শেষ হয়। মিছিলে এ সময় ‘বিচার নিয়ে গড়িমসি, মানি না মানবো না, হামলাকারীর ঠিকানা জাহাঙ্গীরনগরে হবে না’ স্লোগান দিতে শোনা যায়।
এ সময় সরকার রাজনীতি বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজিম বলেন, ‘যেখানে আমরা বলছি নতুন বাংলাদেশ গড়বো, সেখানে আমরা নতুন বাংলাদেশে বিচারের দাবি করতেছি। প্রশাসন কার মদদে এখনো গড়িমসি করছে সিদ্ধান্ত নিতে? যদি প্রশাসন গড়িমসি করে, তাহলে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী জোবায়ের শাবাব বলেন, ‘বিজয়ের ৬ মাস হওয়ার পরও ১৫ জুলাইয়ের হামলাকারীর বিচারের দাবিতে যদি রাস্তায় নামতে হয় তাহলে এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু নেই। যদি বারবার বিচারকার্যে গড়িমসি করা হয়, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মেনে নিবে না এবং তারা আপনাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে।’
ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইমন বলেন, ‘রক্তের সিঁড়ি দিয়ে যে প্রশাসন আজ ক্ষমতায় বসেছে, তাদের কাজে কর্মে মনে হয় না তারা এই আন্দোলনের প্রডাক্ট। ভিসি মহোদয় যদি হামলাকারীদের বিচারের বিষয়ে গড়িমসি করেন তাহলে শিক্ষার্থীরা ১ দফা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।’
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাহমিদা ফাইজা বলেন, ‘জাকসু নির্বাচনের আগে যদি হামলাকারীদের বিচার না হয় তাহলে জাকসু প্রত্যাহার করা হবে। জাকসুর চূড়ান্ত ভোটার প্রকাশ করার আগে তদন্ত কমিটি যদি রিপোর্ট পেশ না করে তাহলে তা প্রত্যাখ্যান করা হবে এবং কোনো জাকসু নির্বাচন গ্রহণ করা হবে না।’
প্রক্টর অধ্যাপক ড. রাশিদুল আলম বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একমত পোষণ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাইয়ে হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রশাসনের কাছে জানানো হবে। তদন্ত রিপোর্টের যথার্থতা যাচাইয়ের জন্য একজন আইনজীবীর মাধ্যমে সাক্ষ্য আইন অনুযায়ী মূল্যায়ন করা হচ্ছে। আমরা খুব দ্রুত শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারবো।’
উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আগামীকালের মধ্যে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট পেশ করবে, হামলাকারীদের জন্য মামলা ট্রাইব্যুনালে করা হবে। প্রাথমিকভাবে যারা অভিযুক্ত হয়েছে তাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আমি ভিসি মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো জানাবো।’
প্রসঙ্গত, ১৫ জুলাই হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হয়নি।
আজকালের খবর/ওআর