প্রকাশ: সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫, ৩:০০ PM আপডেট: ২০.০১.২০২৫ ৪:২০ PM

নিকলী উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী আল আমিন (৩৮) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। র্যাব-১৪ সিপিসি-২ কোম্পানি অধিনায়কের কার্যালয় থেকে এক প্রেস রিলিজে এ তথ্য জানা গেছে।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) প্রেস রিলিজে বলা হয়েছে, র্যাব-১ উত্তরা ও র্যাব-১৪ সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের যৌথ অভিযান চালিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর পশ্চিম থানার ১১ নং সেক্টর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ছাত্র-জনতার পক্ষে নিকলী থানায় দায়ের করা মামলার এজাহার নামীয় পলাতক আসামি আল আমিন।
আল আমিন গত ১৯ জুলাই বিকালে নিকলী মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ কলেজ সংলগ্ন নতুন বাজারগামী রাস্তার ওপর এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার গণমিছিল বের হলে আল আমিনসহ কতিপয় দুষ্কৃতকারীরা আন্দোলনরত ছাত্র জনতার ওপর হামলা করে। হামলায় অনেকে গুলিবিদ্ধ হন এবং অনেক ছাত্র-জনতা গুরুতর আহত হন।
আল আমিনসহ আসামিরা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে অগ্নিসংযোগ করে জানালার গ্লাস, আশপাশের দোকানপাট ও ঘর ভাঙচুর করে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে। ধৃত আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আসামিকে নিকলী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও প্রেস রিলিজে উল্লেখ করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে নিকলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের পূর্ব গ্রাম বাজার হাটি গ্রামের মো. আল আমিন সাবেক সংসদ সদস্য মো. আফজাল হোসেনের আশীর্বাদ ও ছত্রছায়ায় থেকে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, নদী থেকে অবৈধ উত্তোলন, টিআর-
কাবিকা প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ, তদবির বাণিজ্য, মিথ্যা পরিচয় ও জোরপূর্বক ভূমি দখল করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি সন্ত্রাস নৈরাজ্য ও ত্রাস সৃষ্টি করে হয়ে ওঠেন নিকলীর ডন।
আল আমিনের পিতা মোঃ গোলাপ মিয়া একজন হতদরিদ্র দিনমজুর। পরিবারে অভাব অনটনের কারণে আল আমিনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা হয়ে ওঠেনি। ওয়ান ইলেভেন সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে আল আমিন পূর্ব গ্রাম স্বাধীন চৌধুরীর ঘরে সিধ কেটে চুরি করতে ঢুকলে হাতেনাতে ধরা পড়ে এবং এ কারণে সে একমাস জেল হাজতে ছিল। জামিনে ছাড়া পেয়ে তিনি কাজের উদ্দেশ্যে ঢাকা নবাবপুর চলে যান। সেখানে কখনো কোন জুতার দোকানের কর্মচারী আবার কখনো জুতা বানানোর কারিগরের কাজ করতে থাকেন। সাবেক সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের ফুলবাড়িয়া মার্কেটে জুতার দোকান থাকার সুবাদে সেখানে আফজাল হোসেনের সঙ্গে আল আমিনের পরিচয় ঘটে এবং এক পর্যায়ে আল আমিন আফজাল হোসেনের চেম্বারে ফরমায়েসি কাজকর্ম করার জন্য নিয়োজিত হন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে এবং আফজাল হোসেন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে আল আমিন নেতা হিসেবে নিকলীতে আবির্ভূত হয়। ২০০৮ সালের আগে আল আমিন আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন না। আল আমিন নিজেকে স্থান বুঝে কখনো কখনো আফজাল হোসেনের পুত্র কখনো ভাতিজা আবার কখনো পিএস বলে পরিচয় দিতেন। ক্ষমতার প্রভাব, অপব্যবহার ও আধিপত্য বিস্তার করে শুরু করেন মাদক ব্যবসা, নদী থেকে বালু উত্তোলন, তদবির বাণিজ্য, টিআর কাবিখার অর্থ নয়ছয়, জোরপূর্বক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ ভূমি দখল। এসব করে সম্পদের পাহাড়গড়াসহ সন্ত্রাস নৈরাজ্য সৃষ্টি করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন।
আজকালের খবর/বিএস