শিরোনাম: |
ঈদগাহ মাঠ ভরাট কাজ না করেই বিল উত্তোলনের অভিযোগ
আল মামুন জীবন, বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও)
|
![]() উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় হতে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে দুওসুও ইউনিয়নের সাধুবান্দা ঈদগাহ মাঠে মাটি ভরাটের জন্য কাবিটা প্রকল্পের অধীনে প্রায় আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু মাটি ভরাট না করেই পুরো টাকা উত্তোলন করা হয়েছে গেল দুমাস আগে। বুধবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে ওই ঈদগাহ মাঠে অল্প মাটি ভরাটের দৃশ্যও চোখে পড়েনি। জেলা ত্রাণ ও পূনবার্সন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের নিয়ম হলো কাজ শুরু করে অল্প টাকা উত্তোলন করতে পারবে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি। পুরো কাজ সম্পন্ন করে বিল ভাউচার দাখিল করার পর সেটি তদারকি কর্মকর্তা কাজের মান বিবেচনা করে পুরো বিল প্রদান করবেন। তবে এই প্রকল্পে কোন কিছুর তোয়াক্কা করা হয়নি। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে একাধিকবার ঘুরেও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি কিংবা বরাদ্দের কাগজপত্রে তথ্য পাওয়া যায়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইদুর রহমান নানা অজুহাতে সময় ক্ষেপনের চেষ্টা করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় সাংবাদিকরা একাধিকবার তথ্য অধিকার ফরম দিয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার নিকট বারবার তথ্য চাইলেও এখন পর্যন্ত কোন ধরনের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেননি। ঈদগাহের পার্শ্বে বাড়ি মিজানুর রহমান এশিয়া নামের এক যুবকের। ঈদগাহে মাটি ভরাটের নামে ভুয়া কমিটি দেখিয়ে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি তিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। তাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার হুমকি প্রদান করা হয়েছে বলে জানান তিনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুওসুও ইউনিয়নের ১,২ ও ৩নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য শেফালী আক্তারকে সভাপতি বানিয়ে প্রকল্পের পুরো টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। বিষয়টি স্বীকারও করেছেন ওই ইউপি সদস্য’র স্বামী ইকবাল হোসেন। ইকবাল হোসেন জানান, ভুলভাল বুঝিয়ে আমার স্ত্রীর কাছে প্রকল্পের কথা গোপন রেখে জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, ছবি ও স্বাক্ষর নিয়ে এ প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করেছে পিআইও অফিস। পরে আমি বিষয়টি জানার পর ঈদগাহ মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ওই টাকা কার কাছে খোঁজ নিচ্ছি পাশাপাশি মাটি ভরাটের কাজটি করার চেষ্টা করছি। দুওসুও ইউনিয়নের সাধুবান্দা ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দরিবুল্লাহ জানান, শুনেছি অনেক টাকা বরাদ্দ হয়েছিল ঈদগাহ মাঠে মাটি ভরাটের জন্য। আবার সেই টাকা উত্তোলন হয়ে গেছে। ঈদগাহ মাঠ আগের অবস্থায় রয়েছে। এক কোদাল মাটিও ভরাট হয়নি। আমি পরিচালনা কমিটির সভাপতি, আমিসহ কোন সদস্যই বরাদ্দের বিষয়ে অবগত নই। বরাদ্দের কাগজপত্রে একাধিকবার সংগ্রহের চেষ্টা করেছি। কিন্তু দেওয়া হয়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইদুর রহমানের নিকট বক্তব্য চাইতে বুধবার দুপুরে অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে সন্ধ্যায় তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) অফিসে যাওয়ার জন্য। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল আসাদ মিঞা জানান, কাজ না করে টাকা উত্তোলনের কোন সুযোগ নেই। কাজ শুরুর জন্য কিছু টাকা অগ্রিম নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির জন্য অনেকগুলো প্রকল্প সরেজমিনে পরিদর্শন করা সম্ভব হচ্ছে না। কাজ না করেই টাকা উত্তোলনের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন তিনি। স্থানীয়দের দাবি, মুসল্লিদের রমজানের ঈদের নামাজ আদায় করতে চরম অসুবিধা হচ্ছে। এই ঈদের আগে মাটি ভরাটের কাজ শেষ না করা হলে চরম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে। আজকালেরখবর/টিআর |