প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৪:১৩ পিএম

হারিকেনকে এক সময় রাত্রিকালীন সঙ্গী হিসেবে বিবেচনা করা হতো। এক সময় হারিকেন হাতে নিয়ে ডাকপিয়ন ছুটে চলতেন শহর থেকে গ্রামে। বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সবাই রাতের বেলায় হারিকেন হাতে নিয়ে বের হতেন। হারিকেনের আলো গৃহস্থালির পাশাপাশি ব্যবহার হতো বিভিন্ন যানবাহনে। কিন্তু আধুনিকার ছোয়ায় বিভিন্ন বৈদ্যুতিক বাতিতে বাজার ভরপুর। যার কারণে হারিয়ে যাচ্ছে রাত্রিকালীন আলোর একমাত্র উৎস ঐতিহ্যবাহী হারিকেন।
কয়েক বছর আগেও হারিকেন মেরামতের জন্য উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে মিস্ত্রী বসতো। এছাড়া উপজেলার প্রতিটি বাজারে ছিল হারিকেন মেরামতের ভাসমান দোকান। তারা বিভিন্ন হাট বাজারে ঘুরে -ঘুরে হারিকেন মেরামতের কাজ করত। অনেকে গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে হারিকেন মেরামত করতো। হারিকেন ব্যবহার না করার ফলে এখন আর হারিকেন মিস্ত্রীদের আগের মতো দেখা যায় না।
উপজেলার দক্ষিণ পালিগাঁ গ্রামের মসজিদের ঈমাম আব্দুস সামাদ বলেন, এক সময় হারিকেন ছাড়া রাতে চলাচল করা যেত না। কিন্তু এখন বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন ধরনের এলইডি লাইট বের হওয়ায় আর হারিকেনের প্রয়োজন হয় না।
বিরহলী গ্রামের লুৎফর রহমান বলেন, আগে রাতে পড়তে বসার আগেই হারিকেন নিয়ে টানাটানি করতে হতো। কিন্তু এখন ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। তাছাড়া বাজারে বিভিন্ন ধরনের এলইডি বাল্ব অনেক কম দামে পাওয়া যায়। যার কারণে এখন আর হারিকেনের প্রয়োজন হয় না।
কেডগাঁও গ্রামের ফসর আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই যুগেরও অধিককাল ধরে হাটবাজারে বসে আমার বংশধর হারিকেন মেরামতের কাজ করতেন। তখনকার সময়ে গ্রামের প্রতিটি ঘরে ছিল হারিকেনের ব্যবহার। এতে কাজও হতো প্রচুর। কিন্তু বর্তমানে আধুনিক ইলেকট্রনিক্স লাইট বাজারে ভরপুর হওয়ায় হারিকেনের প্রচলন বন্ধ হয়ে গেছে।
পীরগঞ্জ উপজেলার ১নং ভোমরাদহ ইউনিয়নের ইসাহাগ আলী জানায় এখন কার সময়ে কিছু কিছু ঘরে হারিকেন থাকলেও তা আর কেউ ব্যবহার করে না। তিনি আরো বলেন, সময়ের পরিক্রমায় এক সময় হারিকেন দেখতে যেতে হবে জাদুঘরে। নতুন প্রজন্ম হয়তো জানবেও না হারিকেনের ইতিহাস।
আজকালের খবর/এসএম