শিরোনাম: |
প্রিন্ট সংস্করন
প্রতারক চক্রের কবলে শত কোটি
টাকা খোয়া ব্যাবসায়ীর
নিজস্ব প্রতিবেদক
|
![]() তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এই প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে শত কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হয়েছেন তৈরি পোশাক কারখানার মালিক উত্তরার আতিকুর রহমান। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এ্যসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এবিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০১২ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ২২টি এলসির মাধ্যমে ১৯১ কোটি ৪৭লাখ ৭৪ হাজার টাকার সমপরিমান ও আরো সাতটি এলসির মাধ্যমে আট কোটি ৭১ লাখ টাকার বেশকিছু মেশিনারিজ ক্রয় করেন। ২০১৭ সালের জুন মাসে তার অগোচরে রানিং টাইগার বিডি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক সাইদুর রহমান হাবিব পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে তার কোম্পানীর চলমান ১৫০০ মেশিন বন্ধ করে দেয়। এবিষয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক হাবিবকে জানানো হলে তিনি টাকা দাবি করে একটি সামঝোতা স্মারক সাক্ষরে বাধ্য করান। এরই ধারাবাহিকতায় ভূক্তভোগী ১৩ নভেম্বর আদালতে সাইদুর রহমান হাবিবের বিরুদ্ধে ৬৮৪ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা করেন। ক্ষতিপূরণ মামলা করায় হাবিব ক্ষিপ্ত হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় গত বছরের ৯ ডিসেস্বর একটি মিথ্যা মামলা করেন। মামলাটি পরে ডিবিতে স্থানান্তর করেন। গত ৬ জানুয়ারি রাত ১১ টায় ডিবির কয়েজন সদস্য তাকে গ্রেপ্তার করে। তাকে দুই দিনের রিমণ্ডে নেয়। রিমান্ড থাকা অবস্থায় ১৪ জানুয়ারি মোকারম হোসেন জিমি নামক ব্যক্তি ডিবি অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে প্রবেশ করেন। তিনি ডিবির লোক পরিচয়ে হাবীবকে টাকা দেওয়ার জন্য নানামুখী চাপ দেন। ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে জিমি ও রানিং টাইগার বিডির হাবিব ডিবি অফিসে যান। হাবীব জিমিকে ইন্টারপোলের লোক বলে পরিচয় করিয়ে দেয়। মোকারম হোসেন জিমি বিভিন্ন সময় নিজেকে এসবি, এনএসআই, ডিজিএফআই, দুদক, পিবি আই বা সিআইডির কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিতে থাকে। পরবর্তীতে জানতে পারি যে মোকারম হোসেন জিমি রানিং টাইগার বিডির পরিচালক। গত ১৫ জানুয়ারি ডিবি কার্যালয়ের জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও হাবীব এবং জিমি টাকার জন্য দিতে চাপ দিতে থাকে। যদি টাকা না দিই তাহলে আমাকে পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে লাশ গায়েব করে দেবে বলে হুমকি দেয়। তাদের হুমকির মুখে ৭৬ টি চেকে ৬০ কোটি টাকা লিখে নেয়। তারা হুমকি দিয়ে বলে জামিনে ছাড়া পেয়ে কোথাও যাতে কোন অভিযোগ না করি। তাদের হুমকির মুখে ভীত হয়ে গত ২৯ জানুয়ারী দুই কোটি টাকা দিতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে তাদের বিভিন্ন হয়রানিমূলক কর্মকান্ডের কারণে বাধ্য হয়ে গত ১ মার্চ আদালতে ৭২টি চেকের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চেয়ে মামলা করি। মামলাটি আদালতে চলমান আছে। আতিকুর রহমান আরো বলেন, হাবীব ও জিমির প্রতারণার কারনে তার মোট ১২২ কোটি ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার তৈরি পোষাক রপ্তানী থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বর্তমানে নিঃস্ব হয়ে তিনি ও তার পরিবার ঘর ছাড়া এবং নিরাপত্তাহীনতায় দিন যাপন করছেন। তাদের প্রতারণা থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্টমন্ত্রী, আইজিপি, ডিএমপি কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এনএমএস। |