এই ঘটনার আগে ডিবি পুলিশের একটি দল বাড়িটিতে অভিযানে যায়।
ডিবির অভিযানের পর ময়মনসিংহ নগরীর একটি বাসায় ৫ তলার নিচে আহত অবস্থায় পড়ে থাকা যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। স্বজনরা দাবি করছেন, তাকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
ফয়সাল খান শুভ (৩০) নামের ওই যুবককে প্রথমে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসক ঢাকা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
শুভ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কাশিপুর এলাকার মো. সেলিম খানের ছেলে।
তিনি কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করে নগরীর কেওয়াটখালী পাওয়ার হাউজ রোডের ৫৫/৬ বোনের বাসায় থেকে চাকরির জন্য চেষ্টা করছিলেন বলে জানান তার স্বজনরা।
ময়মনসিংহ কোতয়ালি মডেল থানার ওসি সফিকুল ইসলাম বলেন, গত ১০ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে নগরীর কেওয়াটখালী পাওয়ার হাউজ রোডের ৫৫/৬ বাসার ছাদ থেকে পড়ে শুভ গুরুতর আহত হন।
তবে শুভর বোন জামাই মোহসিনের দাবি, শুভর সঙ্গে একই গ্রামের এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি মেয়েটির অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়।
বিষয়টি শুভ জানতে পেরে মেয়েটির হবু বরের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে তাদের চার বছরের সম্পর্কের কথা জানান ও কিছু ছবি-ভিডিও পাঠান।
এ কারণে মেয়েটির বাবা গত ১ নভেম্বর ঈশ্বরগঞ্জ থানায় ফয়সাল খান শুভসহ চারজনকে আসামি করে পর্নোগ্রাফি আইনে অভিযোগ করেন।
এরপর রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ডিবি পুলিশ নগরীর কেওয়াটখালী পাওয়ার হাউজ রোডের ৫৫/৬ বোনের বাসায় অভিযানে যায়।
মোহসিনের দাবি, অভিযানের সময় ডিবি পুলিশের সঙ্গে মেয়েটির পরিবারে কয়েকজনও ছিলেন।
তারা বাসায় ঢুকতে চাইলে শুভর বোন জামাই মোহসিন গেইট খুলে দেন। পুলিশ বাসার দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালায়।
তখন শুভ ছিলেন বাসার ছাদে। সেখানে উঠে মেয়েটির পরিবারের লোকজন তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন বলে বোন জামাই মোহসিনের অভিযোগ।
পরে ডিবি পুলিশের সঙ্গে সবাই বাসা থেকে বের হয়ে যান।
মোহসিন বলেন, “প্রায় ১৫ মিনিট পর প্রতিবেশী রিপনের ডাক- চিৎকারে তিনি ও তার স্ত্রী সুমি নিচে গিয়ে শুভকে পড়ে থাকতে দেখেন। সেখান থেকে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
পর দিন সোমবার শুভর বাবা সেলিম খান মেয়েটির ছয় ভাইয়ের নামে ময়মনসিংহ কোতয়ালি থানায় মামলা করেন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুভর অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে শুভ মারা যান।
পুলিশ জানায়, খবর শুনে মেয়েটির পরিবারের লোকজন পালিয়েছেন।
ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, “আমরা মেয়ে পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই বাসায় যাই। বাসায় গেলে শুভর বোন জামাই গেইট খুলে দেন। কিন্তু আসামিকে না পেয়ে আমরা বের হয়ে চলে আসি।
“শুভ ছাদ থেকে পড়েছেন নাকি অন্য কিছু হয়েছে, সে বিষয়ে আমার জানা নেই।”
এটি একটি দুর্ঘটনা বলেও দাবি করেন তিনি।
কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, শুভর লাশ ঢাকায় ময়নাতদন্ত হয়েছে। এ ঘটনায় মেয়ের পরিবারের কয়েকজনের নামে মামলা হয়েছে। তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এর আগে কিছু বলা যাবে না।
আজকালের খবর/ এমকে