প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭:১২ PM
মারা গেছেন নাট্যকার, নাট্যব্যক্তিত্ব, অভিনেতা মনোজ মিত্র। মঙ্গলবার সকালে কলকাতার একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার মৃত্যুর বিষয়টি একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যম নিশ্চিত করেছে।
অভিনেতা মনোজ মিত্র বেশ কিছুদিন ধরেই হৃদযন্ত্রের কঠিন অসুখে ভুগছিলেন। সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, মেলাইটাস, ক্রনিক কিডনির অসুখ, সিওপিডি, ডিমেনশিয়ার মতো রোগ ছিল তার। গুণী এই অভিনেতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে কলকাতা ও বাংলাদেশের বিনোদন জগতে।
মনোজ মিত্রের মৃত্যুতে শোকের ছায়া বাংলাতেও পড়েছে।
নাট্যভিনেতা জুলফিকার চঞ্চল মনোজ মিত্রকে স্মরণ করতে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন-একাডেমীর কেন্টিনে আপনার সাথে পরিচয়, চা খাওয়া, নাটক নিয়ে আড্ডা, কতদিন কত কথা। আজও মনে পরে। দুই বাংলায় আপনার লেখা নাটক মঞ্চে থাকবে হে গুনি। অনন্ত কালে ভালো থাকবেন।
অপরদিকে সিনিয়র বিনোদন সাংবাদিক মাহফুজুর রহমান মনোজ মিত্রকে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন- অমিতাভ বচ্চনের ‘পিংক’ নারীর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির যে আলাপ তোলে, সেই আলাপের সূত্রপাত মনোজ মিত্রের ‘আদালত ও একটি মেয়ে’, এমনটা বিশ্বাস করেন অনেকেই। আপনি যদি দুটো ছবি দেখে থাকেন, তবে নিশ্চিতভাবেই বুঝতে পারবেন অমিতাভ বচ্চনের উকিল চরিত্রটির যে সততা ও সাহস তা মূলত মনোজ মিত্রের পুলিশ চরিত্রটি থেকে উৎসারিত। সিস্টেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অমিততেজ এবং নারীর প্রতি সহিংসতাকারীদেরকে একবিন্দু ছাড় না দেয়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা- এই দুয়ের সংমিশ্রণে যে অসাধারণ চরিত্রটি নির্মাণ করেছেন তপন সিনহা, সেটাকেই অনতিক্রম্য অভিনয়ের মধ্য দিয়ে দর্শকমস্তিষ্কে চিরস্থায়ী করেছেন মনোজ মিত্র। সেখান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী দাঁড় করিয়েছেন তার বলিউড মাস্টারপিস ‘পিংক’ এ অমিতাভের উকিল চরিত্রটি। পরে ‘পিংক’ থেকে একাধিক সফল রিমেক করেছে দক্ষিণ ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিগুলো। পবন কল্যাণ, সুরিয়ার মতো সুপারস্টাররা অভিনয় করেছেন সেসব ছবিতে। তারা বচ্চন সাহেবের পায়ে পা মেলালেও বাঙালি এই ভেবে গর্ব করতে পারে যে তারা মূলত মনোজ মিত্রের উত্তরাধিকার বহন করেছেন।
১৯৩৮ সালের ২২ ডিসেম্বর অবিভক্ত বাংলাদেশের খুলনা জেলার সাতক্ষীরা মহকুমার ধুলিহর গ্রামে জন্ম হয় তার। অভিনেতার বাবা অশোককুমার মিত্র এবং মা ছিলেন রাধারাণী মিত্র। ১৯৫৭ সালে কলকাতার নাট্যমঞ্চে তিনি প্রথম অভিনয় করেন।
আর ১৯৭৯ সালে প্রথম পা রেখেছিলেন সিনেমায়। অভিনয়ের জন্য পেয়েছিলেন সংগীত নাটক একাডেমি পদকসহ নানা পুরস্কার। ছিলেন কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যক্ষ। ২০০৩ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
আজকালের খবর/আতে