প্রকাশ: শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪, ৬:৩৯ PM আপডেট: ০৯.১১.২০২৪ ৬:৫৯ PM
সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে খেজুর রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। গ্রামীণ জনপদে শীতের আগমনী বার্তায় খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতি হিসেবে গাছের ডাল কেটে রস বের করার পদ্ধতিতে পরিষ্কার করছেন গাছিরা।
জানা যায়, খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের পদ্ধতিতে প্রথমে খেজুর গাছের মাথা ডাল কেটে পরিষ্কার করে সাদা অংশ বের করে রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। পরবর্তীতে সাদা অংশ আবারও কেটে বাঁশের নলি লাগিয়ে তাতে ছোট-বড় বাসন বেঁধে রস সংগ্রহ করা হয়।
উপজেলা বারুহাস ইউনিয়নের রানীদিঘী গ্রামের গাছি হাসান আলী রস সংগ্রহের প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলেন, সাধারণত শীতকালের কার্তিক মাসে রস সংগ্রহের জন্য গাছগুলো প্রস্তুত করতে হয়। তবে শীতের আগমনের জন্য এবার একটু আগেই গাছ প্রস্তুত করছি। একটা গাছকে ডাল পালা কেটে প্রস্তুত করতে কয়েকদিন সময় লাগে। রস সংগ্রহের জন্য সাধারণত মাটির হাড়ি ব্যবহার করা হয় এবং হাড়ির ধারণ ক্ষমতা ৮ থেকে ১০ লিটারের মতো হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, একটা গাছ থেকে শীত থাকা পর্যন্ত রস পাওয়া যায়। গাছ ভেদে প্রতিদিন ৩ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত রস পাওয়া যায়। গাছ থেকে রস সংগ্রহের একটা নিয়ম আছে। প্রথম ৩ দিন রস সংগ্রহের পর পরবর্তী ৩ দিন গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা যাবে না। বিকেল ৩টা থেকে রস সংগ্রহের জন্য গাছে গাছে হাড়ি বাঁধা হয়। পরদিন সকাল ৬ হতে ৭টা পর্যন্ত শুরু হয় রস সংগ্রহের কাজ।
শীতকালিন সময়ে জামাই-ঝি আত্মীয় স্বজনদের দুধের পিঠা খাওয়ানো গ্রামগঞ্জের মানুষের আতিথেয়তার জন্য খেজুর রসের পাটালী গুড়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শুরুতে পাটালী গুড়ের বাজার মূল্য হয় ২ শত থেকে ৩ শত টাকা কেজি।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় খেজুর গাছ রয়েছে। খেজুর গাছের জন্য বাড়তি কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। কৃষি বিভাগ কৃষকদের বাড়ির আশপাশ, জমির আইল, পুকুরপাড় এবং সড়কের ধারে খেজুর গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পরিত্যক্ত জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খেজুর বাগান গড়ে তোলা হলে কৃষকেরা গুড় উৎপাদন করে আরো বেশী লাভবান হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আজকালের খবর/ওআর