হ্যালো- কেমন আছেন?
ওপাশ থেকে- ভালো।
ব্যস্ত কিনা জানতে চাইলে ওপাশ থেকে কিংবদন্তী অভিনেত্রী শবনমের জবাব- দুপুরে খেয়ে ‘তুফান’ সিনেমাটি দেখা শেষ করেছি মাত্র।
কিন্তু এটাতো হলে গিয়েও দেখেছেন? শবনমের জবাব- দেখেছি। আবার দেখলাম। ভালোই লেগেছে। আমাদের সিনেমাগুলো এগিয়েছে। শাকিবও এখন অনেক পরিণত। সব মিলিয়ে ভালো লেগেছে। তাই আবার দেখলাম।
পরিণত শাকিবের ভবিষ্যত কোণ পথে জবাবে শবনম বলেন, “বাংলাদেশে গত এক দশকের বেশি সময়জুড়ে শীর্ষ আসন ধরে রেখেছেন শাকিব। যে কারণে বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের মাঝেও গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। তাই দেখেশুনে মনে হয় ভবিষ্যত ভালো। বাজার বড় করতে নিজের প্রচেষ্টার সর্বোচ্চ দিচ্ছে। এটা করতে পারলে গোটা ইন্ডাস্ট্রির জন্যই ইতিবাচক হবে।”
সিনেমার বাজার বড় করা সেটা কিভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে এই অভিনেত্রী বলেন, নিজের আত্মবিশ্বাস যখন ইতিবাচক থাকে তখন যে কোনো শিল্পী নিজেকে একটা গন্ডিতে বেধে রাখতে চাইবে না। এটা আমার নিজেকে দিয়েই বলছি। বড় জায়গাজুড়ে নিজেকে প্রমাণে আমি অস্থির ছিলাম। আমার আত্মবিশ্বাস ছিলো প্রবল। সে ভাবনা থেকে দেশীয় ইন্ডাস্ট্রিতে শীর্ষ থাকাকালীন তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে কাজ করতে গিয়েছি। লক্ষ্য করলে দেখবে সম্পূর্ণ বাঙালিয়ানায় নিজেকে সেখানে উপস্থাপন করেছি। দর্শক লুফে নিয়েছে আমাকে। শীর্ষ থেকেই ক্যারিয়ারে ইতি টেনেছি। সে জায়গা থেকে শাকিবের সিনেমার বাজার বড় করার জেদ পর্দায় দেখতে পেয়েছি। বলতে পারো এ কারণেই দ্বিতীয়বারের জন্য তুফান দেখলাম।
পাকিস্তানে বর্তমান যে সিনেমার বাজার এ অবস্থায় সেখানে শাকিব গেলে কেমন হবে জবাবে শবনম বলেন- “পাকিস্তানের বর্তমান যে সিনেমার বাজার, সেখানে একজন পরিপূর্ণ নায়কের খুব অভাব। শাকিব যদি তার এবং বাংলাদেশের বাজার বড় করতে চায় তাহলে নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে পারি সে পাকিস্তানের এক নম্বর হিরো হওয়ার যোগ্যতা রাখে।”
বিশেষ কোনদিক বিবেচনায় আপনার এমনটা মনে হলো?
শবনম বলেন- “শাকিবের লম্বা ক্যারিয়ারে অনেকের পরিচালনায় কাজ করেছেন। এরমধ্যে এফ আই মানিক, শাহীন সুমন, মালেক আফসারী, বদিউল আলম খোকন প্রমুখের সিনেমায় নিজের যোগ্যতার সাক্ষর রেখেছেন। তখন সিনেমা ছিলো এক ধরনের কিন্তু এখন গল্প বদলেছে, দর্শকের টেস্টও ভিন্নরকম হয়েছে। শাকিব এ জায়গায় নিজেকেও বদলে ফেলেছেন। একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে ২০১৭ থেকে নিজেকে একটু একটু করে বদলেছেন শাকিব। যে কারণে কলকাতাতেও শাকিবের অনেক ভক্ত অনুসারী তৈরি হয়েছে। যদিও ওখানকার বাজার কখনই আমাদের দেশীয় কোনো নায়কের হাতের মুঠোয় আনা প্রায় অসম্ভব। কারণ ওরা আমাদের নায়িকাদের অফট্র্যাকের গল্পে যেভাবে সুযোগ দেয়, সেভাবে আমাদের হিরোদের সুযোগ দেয় না। আর বাণিজ্যিক সিনেমায়তো দিবেই না। এটা দীর্ঘ সময়জুড়ে পরিক্ষীত সত্য। আমার মনে হয় এটা শাকিব নিজেও উপলব্ধি করেছেন। আর যে কারণেই গণমাধ্যমের সূত্রে জেনেছি পাকিস্তানের সঙ্গে ও কাজ করতে আগ্রহী। আমি মনে করি বাজার বড় করতে চাইলে ওর এ ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। অবশ্য ও কি ভাবছে সেটাতো আর আমি জানি না, আমি কেবল আমার অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করলাম। কারণ যতগুলো গুণের সমাহারে একজন হিরো তৈরি হয় তা শাকিবের মধ্যে আছে। দু’দেশের (বাংলাদেশ-পাকিস্তান) হিরোদের তুলনা প্রসঙ্গে আসলে এদের মধ্যে শাকিব খানকে আমি এগিয়ে রাখবো।
কারণ প্রসঙ্গে আম্মাজান’খ্যাত এই অভিনেত্রী বলেন, ২০১৭ সালের পর শাকিব খুব পরিণত। বিশেষ করে গত দু’বছরে ওর অভিনয় দক্ষতার চমৎকারিত্ব দর্শক উপভোগ্য হয়েছে। বাংলাদেশে যতদূর জানি রাজ্জাক, ওয়াসীম বা ইলিয়াস কাঞ্চনের পর শাকিব খান এমন একজন হিরো যার ওপর টাকা লগ্নি করে মুনাফা পাওয়া যায়। এছাড়াও ওর নাচ, অ্যাকশন দক্ষতা সবই উঁচু পর্যায়ের। আত্মবিশ্বাসও প্রবল। একজন অভিনয় শিল্পীর এ জায়গাগুলো তাকে অনেক দূর নিয়ে যায়। শাকিব সেটা দেশের বাজারের জন্য করেছে। এখন আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেকে প্রমাণে দরকার বড় প্ল্যাটফর্মের।
পাকিস্তানে শাকিব খানের বাজার তৈরি হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শবনম বলেন, আমি সেখানকার ইট-পাথরও চিনি। আবার দেশী সন্তান হিসেবে শাকিব খানের কাজও সম্পর্কেও অবগত। ওখানে কাজ করতে চায় কিনা সে ভাবনা ওর নিজস্ব। আমার মনে হয় সুযোগ পেলে সেখানেও নিজের যোগ্যতা দিয়েই প্রমাণ করতে পারবে।
আজকালের খবর/আতে