সক্ষমতাহীন বেসরকারি সব মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ করে দেয়া হবে। মানহীন এসব মেডিক্যাল কলেজকে অনেক সময় দেয়া হয়েছে কিন্তু এতো সময় নিয়েও তারা শিক্ষার মানের উন্নতি করতে সক্ষম হয়নি। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা: মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম গতকাল এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, তবে মেডিক্যাল কলেজগুলোর মধ্যে যেগুলো মানহীন কিন্তু ‘সাপোর্ট’ দিলে নিজেদের সক্ষম করে তুলতে পারবে সেগুলোকে সাপোর্ট দেয়া হবে। অন্য দিকে যেগুলোর বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে সেগুলোর নিবন্ধন আজীবনের জন্যও বাতিল করে দেয়া হতে পারে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বিএমডিসিকে সব ধরনের সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চান যেন বিএমডিসি তার যথাযথ মর্যাদায় ফিরে আসে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সাংবাদিকদের সাথে আয়োজিত মতবিনিময়কালে অধ্যাপক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আগামী দিনগুলোতে বিএমডিসি’র পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএমডিসি’র স্থায়ী স্বীকৃতি প্রদান কমিটির চেয়ারম্যান বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক ডা: আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী ও বিএমডিসি’র ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা: মো: লিয়াকত হোসেন।
অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, খুব শিগগিরই বিএমডিসিকে অনলাইন (পেপারলেস) ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হবে। মেডিক্যাল ও ডেন্টালের চিকিৎসকরা ঢাকায় না এসেও যেন সেবা নিতে পারেন সে উদ্দেশ্যে একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করা হবে। অ্যাপের মধ্যে থাকা নিবন্ধন আবেদন ফরম পূরণ করে, অনলাইনেই টাকা জমা দেয়া যাবে। এটা ছাড়াও চিকিৎসকদের নিবন্ধন যাচাইও অনলাইনে করা যাবে।
মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে ছাত্র ভর্তির কাজটি শেষ করতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা দিয়ে দেয়া হবে। এটা করা হলে ভর্তিসংক্রান্ত অনেক অনিয়ম বন্ধ হবে।
কথা প্রসঙ্গে অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, শুধু বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ নয়, কিছু কিছু সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অবস্থাও খারাপ, সেদিকেও নজর দেয়া হবে। তিনি বলেন, বিএমডিসি ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না, সে ক্ষমতা বিএমডিসির নেই। আদালতের চ্যালেঞ্জের বিষয়টি মাথায় রেখে সব কাজ করতে হয় বলে বিএমডিসির কার্যক্রম কিছুটা ধীর। আবার আইনে কতোদিনের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হবে এর স্পষ্ট সীমারেখাও করে দেয়া হয়নি। চিকিৎসকদের অবহেলার জন্য বিএমডিসি তদন্ত করতে পারে তবে সে কাজটি করতে গেলেও নিজের লোকবল সংস্থাটির নেই। সেজন্য বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আসতে হয়। ব্যস্ততার কারণে তারা কখনো কখনো সময় দিতে পারেন না, সে কারণে রিপোর্ট দিতে দেরি হয়।
উল্লেখ্য, ৯০ বছর আগে ব্রিটিশ আমলে এই প্রতিষ্ঠানটির কর্মকাণ্ড শুরু হয়। সর্বশেষ ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে বিএমডিসি’র জন্য একটি আইন হয়। তবু প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে ধুঁকছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে ৫৪ জনের পদ থাকলেও কাজ করছেন মাত্র ৩২ জন।
আজকালের খবর/ এমকে