মঙ্গলবার ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
জামালপুরে জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তর
স্বাস্থ্য স্যানিটেশন উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় ৩৫০ কোটি টাকার কাজ দৃশ্যমান
ফজলে এলাহী মাকাম, জামালপুর
প্রকাশ: বুধবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৪, ৮:০৮ PM
সন্ন্যাসী নগর থেকে সিংহজানী পর ৭টি উপজেলা নিয়ে জামালপুর জেলা নামকরণ করা হয়। স্বাধীনতার পর থেকে নানা কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের দিক অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছিল এই জেলা। বর্তমানে নতুন সরকার ও বৈষম্যবিরোধী অগ্রযাত্রায় আধুনিক জামালপুর আর পিছিয়ে পড়া জামালপুরের অবস্থানে নেই। তারই আলোকে জামালপুর জেলা স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশনের দিক থেকে আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক জামালপুর গড়তে জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১২টি প্রকল্পে ৩৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের কাজ দৃশ্যমান হওয়ায় অনেকটাই বদলে গিয়েছে জামালপুরের চিত্র। 

এতে প্রান্তিক পর্যায়ে মানুষের দুর্ভোগ কমে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যস্ততার অভ্যাসের পাশাপাশি আধুনিকতার ছোঁয়ায় উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে এখন এই জনপদের মানুষ। তবে এ জেলায় স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের উন্নয়নের জন্য অনেক প্রকল্প হাতে নিয়ে যে মানুষটি দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে তিনি জামালপুর জেলা জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহমুদ।

তিনি করোনা মহামারীর সময় ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর জামালপুর জেলা জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী যোগদান করেন। তার যোগদানের পর থেকেই উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় জামালপুর জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে চলমান অর্থবছর পর্যন্ত দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পে জামালপুর জেলায় সাবমারসিবল পাম্পযুক্ত গভীর নলকূপ ১৫৬০টি ও অগভীর নলকূপ ৯৬২টি এবং কমিউনিটি বেউজড ওয়াটার সাপ্লাই স্কিম ৩২৯টিতে ৮৩ কোটি ৪৪ লাখ ৭৮ হাজার, মুজিব শতবর্ষে ভূমিহীন, গৃহহীনদের জন্য নির্মিতব্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের পানি সরবরাহ প্রকল্পের কয়েটি উপজেলায় ৬৩৯টি অগভীর নলকূপে ৩ কোটি ৩৫ লাখ ২৪ হাজার, জিপিএস উন্নয়ন প্রকল্পের ১০৭টি ওয়াশ ব্লক নির্মাণে ১৭ কোটি ৩৮ লাখ ৭৫ হাজার ও ১৬১টি পানির উৎস স্থাপনে ২ কোটি ৯৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকা, এনএনসিপিএস উন্নয়ন প্রকল্পের ৯২টি ওয়াশ ব্লক নির্মাণ ১২ কোটি ৬৩ লাখ ৫৪ হাজার ও ১৬১টি পানির উৎস স্থাপন এ ২ কোটি ৯৭ লাখ ৯৫ হাজার, পিইডিপি ৪ উন্নয়ন প্রকল্পের ৪৮৪টি ওয়াশ ব্লকে ৮৪ কোটি ৭০ লাখ ও ৮০০টি পানির উৎস স্থাপনে ১৫ কোটি ৬৮ লাখ, রাজস্ব বাজেটের আওতায় পাম্পযুক্ত অগভীর নলকূপে ৪৭ হাজার, পানির গুণগত মান পরীক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের ১টি ল্যাবরেটরি ভবন নির্মাণ কাজে ৫৩ লাখ ৭৮ হাজার, মানবসম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি শীর্ষক প্রকল্পের ১৬টি হ্যান্ডওয়াশি স্টেশন ও ৩৬টি স্যানিটেশন হাজিন ফেসিলিটিস এবং ২৮টি সাবমারে ১০ কোটি ৩৬ লাখ ৮৪ হাজার, ৯৬টি কমিউনিটি বেইজ ওয়াটার সাপ্লাই স্কিম ১৬ কোটি ৭১ লাখ ৫৯ হাজার, ৩১টি স্মল পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই স্কিমে ৫ কোটি ৫১ লাখ, সদর, সরিষাবাড়ী, মাদারগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলায় ৪টি লার্জ পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই স্কিমে ২৪ কোটি ৮৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ শেষ সফলভাবে শেষ করা হয়।

জামালপুর শহরের পালপাড়া এলাকার কার্তিক সাহা জানান, জেলা জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহমুদের নির্দেশনায় আমি সাবমার্স পেয়েছি। যা আমার পরিবারের পানির চাহিদা মিটিয়ে এলাকার মানুষদের বিশুদ্ধ পানি সরবরারহ করে থাকি। শুধু কার্তিক সাহা নয় তার মতো মুকন্দবাড়ির শাপলা, ডাকপাড়ার সেকান্দর, শরিফপুরের আলি আহমেদ, নরুন্দির মো. রফিকসহ সকলেই বিশুদ্ধ পানির সরবরাহের সুবিধা পেয়েছে। এদিকে রাঘুনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী হায়দার জানান, তার বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওয়াশব্লক স্থাপন করার মাধ্যমে বিদ্যালয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও ল্যাটটিন ও টয়লেট ব্যবহারে সচেষ্ট হয়ে উঠেছে শিশু শিক্ষার্থীরা যা জেলা জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদের ঐক্যান্তিক প্রচেষ্টা ও তদারকিতেই হয়েছে বলে জানান তিনি। জেলা জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের ডায়নামিক নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জামালপুর জেলার আরো উন্নয়ন কার্যবলী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাবেন বলে আশা তাদের।

এছাড়াও ৩২টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ এনভায়রনমেন্টাল স্যানিটেশন প্রকল্পে ২টি উৎপাদক নলকূপ, ৪টি এক্সপ্লেরেটরি ড্রিলিং পরীক্ষামূলক নলকূপ, ২টি পাম্প হাউজ ও ২টি সাবমারসিবল পাম্প খননে ৮৫ লাখ, ৩২ কিমি, পাইপ লাইন স্থাপন কাজে ৩ কোটি ৭৭ লাখ ৯২ হাজার, ১.৫ কিমি আর সিসি ড্রেইন নির্মাণে ১ কোটি ৪ লাখ ৪৮ হাজার, ১টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এবং ট্রান্সমিশন পাইপ লাইন স্থাপন কাজে ৫ কোটি ৯১ লাখ ১৪ হাজার, ১টি ফিক্যাল স্লাজ এবং সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট নির্মাণ কাজে ৭ কোটি চার লাখ ৮৫ হাজার, ৪টি পাবলিক টয়লেট ও ১২টি কমিউনিটি টয়লেট এবং ২৫টি কমিউনিটি বিন স্থাপনে ৬৮ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ব্যয়ে উন্নয়ন করা হয়েছে যা এখন দৃশ্যমান হয়েছে।

উন্নয়ন চিত্রের অংশ হিসেবে জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্পে ৪টি পরীক্ষামূলক নলকূপ স্থাপনে ৩ লাখ ৮৩ হাজার, ২টি উৎপাদক নলকূপ ও ৪টি পরীক্ষামূলক নলকূপ এবং ইলেক্ট্রোমেকানিক্যালসহ পাম্প হাউজ নির্মাণে ১ কোটি ৩৪ লাখ, ৩০০০ ঘনমিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ভূ-গর্ভস্থ জলাধার নির্মাণে ৫ কোটি ৬৫ লাখ ৫ হাজার, ৮টি পরীক্ষামূলক নলকূপ, ৪টি উৎপাদক নলকূপ, ৪টি পাম্প হাউজ, ৪টি বাউন্ডারি ওয়াল, ৪টি সাবমারসিবল পাম্পসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি কাজে ২ কোটি ৫৫ লাখ ৪৮ হাজার, ২.৪ কিমি ট্রান্সমিশন পাইপ লাইন স্থাপনে ১ কোটি ৩২ লাখ ৫ হাজার, ৬.২ কিমি সারফেস ড্রেন নির্মাণ কাজে ১০ কোটি ৯০ লাখ ১৮ হাজার, ১ টি সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ কাজে ২১ কোটি ২৮ লাখ ৫২ হাজার, ৪০০ মি সারফেজ ড্রেন ওয়ালকওয়ে নির্মাণে ১ কোটি ১১ লাখ টাকার কাজও চলমান রয়েছে। অন্যদিকে ৩০টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যাবিটেশন প্রকল্পে ইসলামপুরে ড্রেন ও নলকূপ স্থাপনে ৯ কোটি ৭৫ লাখ ২৮ হাজার, ৩টি পরীক্ষামূলক নলকূপ, উৎপাদক নলকূপ এবং ৩টি পাম্প হাউজ নির্মাণে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৭ হাজার, ইঞ্জিনিয়ার অফিসে ২১ লাখ ৪১ হাজার, ৩টি পাবলিক টয়লেট, ১টি ফিক্যাল স্ল্যাজ ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্ট ২ কোটি ২৭ লাখ ২২ হাজার, ৯৮২টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণে ৬ কোটি ৯০ লাখ ৩৪ হাজার, ইসলামপুর পৌরসভা প্ল্যান্টে ২ কোটি ১০ লাখ ৩১ হাজার টাকার কাজ ইতিমধ্যেই সমাপ্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও বাংলাদেশের ১০টি অগ্রাধিকারভিত্তিক শহরে সমন্বিত স্যানিটেশন ও হাইজিন প্রকল্পে ৬টি পানির উৎস ও ১৫০টি হাউজ হোল্ড কানেকশন এবং ২৪টি স্ট্রিট হাইড্রেন্ট এ ২৩ লাখ ৭৯ হাজার, ৫টি কমিউনিটি ল্যাট্রিনের ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার কাজ চলমান রয়েছে। 

এদিকে জামালপুর জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এডমিন মো. জাহাঙ্গীর কবীর জানান, সুলতান স্যারের যোগদানের পর ১২টি ৩৫০ কোটি টাকার উন্নয়ন অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কয়েকটি প্যাকেজের কাজ ৫০ শতাংশ হয়ে আছে সেগুলো সম্পূর্ণ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে জামালপুর জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুযোগ্য নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহমুদ স্যারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় জামালপুরে সব উন্নয়নমূলক কাজ যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে জামালপুর জেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহমুদ জানান, পিছিয়ে পড়া জামালপুর কে এগিয়ে নিতে একজন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা হিসেবে সকল কাজ নিজে সরেজমিনে গিয়ে তদারকির মাধ্যমে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছি। উন্নয়ন প্রকল্পের যে কাজগুলো এখনো শেষ হয়নি সেগুলো বিধি মোতাবেক প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ঠিকাদারদের তদারকি ও কাজের বিল প্রদানে সচেষ্ট রয়েছে। মানসম্মত কাজে বুঝে দেওয়ার পরই ঠিকাদারদের কাজ শেষ হওয়ার পর বিল প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি। জেলার জন্য সামনে আরো কিছু প্রকল্পের কাজ আসবে। সরকারিবিধি মোতাবেক সেই কাজগুলোকে যোগ্যতা সম্পন্ন ঠিকাদারদের প্রদান করে যাতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ও বৈষম্যহীন নতুন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে পিছিয়ে পড়া জামালপুর যাতে স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশনে এগিয়ে থাকে সেই আলোকেই কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।

আজকালের খবর/ওআর








সর্বশেষ সংবাদ
এ বছরের মাঝামাঝিতেই জাতীয় নির্বাচনের দাবি তুলবে বিএনপি
চুক্তি মেনেই সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করা হচ্ছে: ভারত
ঋণগ্রহীতার প্রতিষ্ঠানের সামনে ব্যাংকের মানববন্ধন ও মাইকিং, সামাজিকভাবে হেনস্তা
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল জাপান, সুনামির সতর্কতা
এইচএমপিভি : বিমানবন্দর ও এয়ারলাইন্সগুলোকে বিশেষ নির্দেশনা
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
যুক্তরাষ্ট্রে তিন নেতার আমন্ত্রণ নিয়ে বিভ্রান্তি, দুঃখ প্রকাশ বিএনপির
৫ আগস্ট ‘সার্বক্ষণিক যোগাযোগে’ ছিলেন বাংলাদেশ ও ভারতের সেনাপ্রধান
টিউলিপের পর যুক্তরাজ্যে এবার আলোচনায় সালমানপুত্র শায়ান
শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের গুরুত্বপূর্ণ কল রেকর্ড প্রসিকিউশনের হাতে
রাজনৈতিক চাপে নিয়োগ বাতিল হচ্ছে ৪৫০০ কর্মচারীর
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft