সোমবার ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
একদিন মানুষের অভিলাষ বাস্তবায়িত হবে
আবুল কাসেম ফজলুল হক
প্রকাশ: রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭:২৩ PM
বিশ শতকের একেবারে শুরুতেই মহারাষ্ট্রে এবং বাংলা প্রদেশে বিপ্লববাদী গুপ্ত সমিতি গড়ে উঠতে থাকে। ব্রিটিশ সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এই ধারার কর্মকাণ্ড ও সংগঠন সম্পর্কে নানা তথ্য জেনে যায় এবং তাদের দমন করার ও শেষ করে দেওয়ার নানা পরিকল্পনা ও কর্মসূচি নিয়ে কাজ করতে থাকে। বাংলা প্রদেশে অনুশীলন সমিতি গড়ে ওঠে ১৯০২ সালে। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলন শুরু হলে অনুশীলন সমিতি তার কর্মকাণ্ড বাড়ায় এবং দ্রুত বিকশিত হতে থাকে।

বিপ্লববাদীরা যে পদ্ধতিতে কাজ করতেন, তা ছিল অনেকটা নকশালপন্থী ও সর্বহারা পার্টির কার্যক্রমের মতো। অনুশীলন সমিতি যখন বাড়ন্ত, তখন সমিতির ভেতরে মতভেদ দেখা যায় এবং সমস্যার সমাধান করতে না পেরে কিছু সদস্য অনুশীলন ত্যাগ করে যুগান্তর নামে নতুন গুপ্ত সমিতি গড়ে তোলেন। যুগান্তর বাড়তে থাকে এবং ক্রমাগত নানাভাবে ভাঙতে থাকে। ১৯৬০-এর দশকের শেষ দিক থেকে পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি যেভাবে ভাঙছিল, সেকালের বিপ্লববাদী সংগঠনগুলো সেভাবেই ভেঙে চলছিল। বিপ্লববাদী ও কমিউনিস্টরা দলের মধ্যে নেতৃত্বের সমস্যার সমাধান করতে পারেননি।

এই ধারার কোনো দল একটু বড় হলেই তা ভেঙেছে। বলা হয়েছে, আদর্শগত মতভিন্নতার কারণে দল ভেঙেছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক কে হবেন, তা নিয়ে বিরোধের কারণে দল ভেঙেছে।

বিপ্লববাদী ও কমিউনিস্টরাও জনগণের মধ্যে যাননি-যেতে পারেননি। বিপ্লববাদী যুগান্তর দলের নেতা সূর্য সেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার দখল এবং অস্ত্রাদি নিয়ে যাওয়া ছিল সারা ভারতে বিপ্লববাদীদের সবচেয়ে বড় ঘটনা। কিন্তু তারা পুলিশ-মিলিটারিদের হাতে ধরা পড়েন এবং তাদের প্রাণদণ্ড হয়। এই ঘটনার পর ব্রিটিশ সরকার লক্ষ করে যে বিপ্লবী কমিউনিস্টদের একটি আদর্শ আছে, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা আছে এবং তাদের মোকাবেলা করা বেশি কঠিন নয়। আর বিপ্লববাদীদের কোনো আদর্শ নেই। তাদের উদ্দেশ্য ভারতে ব্রিটিশ শাসনের উৎখাত সাধন। এর জন্য তারা শত্রু হত্যার কর্মনীতি নিয়ে কাজ করেন। তারা অত্যন্ত দুর্ধর্ষ, তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা এবং দণ্ড দেওয়া অনেক কঠিন কাজ। ব্রিটিশ সরকার যে নতুন ব্যবস্থা নেয় তার মধ্যে আছে, কারাগারে কমিউনিস্টদের সঙ্গে বিপ্লববাদীদের একসঙ্গে রাখা এবং কারাগারের লাইব্রেরিতে মার্ক্সবাদীদের লেখা পুস্তকাদি রাখা-যাতে এসবের মধ্যে বিপ্লববাদীরা মার্ক্সবাদীদের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং নিজেদের আচরণ মার্জিত করেন। স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের বয়েজ স্কাউট, ব্রতচারী অনুশীলন ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিভঙ্গি মার্জিত ও শৃঙ্খলাপ্রিয় হয়। কেবল শাস্তি দিয়ে নয়, মনোভাব পরিবর্তনের জন্য শিক্ষার এবং সেবামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিত্বকে নতুনভাবে গঠন করার কর্মনীতি চালু করা হয়। শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও রাখা হয়।

ভারতের ব্রিটিশ সরকার বিপ্লববাদীদের, মার্ক্সবাদীদেরও প্রতিহত করে সন্ত্রাসবাদী বা টেররিস্ট বলে। ভারত থেকে যারা লেখাপড়া করার জন্য, বিশেষভাবে ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য যেতেন, তারা আইরিশদের স্বাধীনতাসংগ্রামে যেভাবে সংগ্রাম চালাতেন, তার মধ্যে গুপ্ত সমিতি ও গুপ্তহত্যার ঘটনা দেখে, ভারতকে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত করার এবং ভারতকে ভারতের জনগণের সমৃদ্ধিমান রাষ্ট্ররূপে গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে চরম ত্যাগের মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে গুপ্ত সমিতিগুলো কাজ করেছে। ব্রিটিশ-ভারতে বিপ্লববাদী ও কমিউনিস্টদের রাজনীতি কতখানি সফল হয়েছে? আজ রাষ্ট্রপতি ও উপদেষ্টামণ্ডলী নিয়ে যে সরকার কাজ করছে এবং নতুন বাংলাদেশ গঠনের সংকল্প ব্যক্ত করে এগোচ্ছে, তার সাফল্য কীভাবে কতখানি হবে, তা ওপর থেকে কিছু লোক এসে শ্রমিক-কৃষক-নিম্নমধ্যবিত্তদের অবস্থা উন্নত করে দিয়ে যাবে-এই রকম চিন্তা ও কার্যক্রমের ফল পরাধীনতা ছাড়া আর কী হতে পারে?

বিপ্লব সাধনের ঘোষণা দিয়ে এখনো যারা কাজ করছেন, তারা কী করবেন? অত্যন্ত নতুন প্রযুক্তির অভিঘাতে এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলোপের পরে তাদের পরিচ্ছন্ন নতুন কোনো বক্তব্য তো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, মার্ক্সবাদ, জাতীয়তাবাদ ও তার সম্পূরক আন্তর্জাতিকতাবাদ, কল্যাণ রাষ্ট্র ইত্যাদিকে ইতিহাসের গতিধারায় বিচার-বিশ্লেষণ করে নতুন আদর্শের রূপ ও প্রকৃতিকে ভাষার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে হবে। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল যে গণতন্ত্র প্রচার করে, তা ‘নব্য উদার গণতন্ত্র’। আসলে এই গণতন্ত্র হলো ধনিক-বণিকদের গণতন্ত্র। আমরা যে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা চাই, তা হলো সর্বজনীন গণতন্ত্র। এসব নিয়ে লেখকদের আন্তরিক মতবিনিময় দরকার।

ধর্মের উত্থান সম্পর্কে অনেকে অনেক কিছু লিখেছেন। এ বিষয়ে আমিও লিখেছি। আমার মত অন্যদের মত থেকে ভিন্ন। অন্তরে যা অনুভব করেছি, বিচার-বিবেচনা করে যা বুঝেছি, সর্বজনীন কল্যাণের কথা ভেবে তা-ই লিখেছি। কিন্তু ঢাকাকেন্দ্রিক জাতীয় সংস্কৃতিতে তো মতবিনিময়, তর্কবিতর্ক, আলোচনা-সমালোচনা অল্পই আছে। মানুষ সাধারণভাবে চলছে ভোগবাদ ও সুবিধাবাদ নিয়ে। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কি বাংলাদেশের রাজনীতির কোনো উন্নতি হবে? জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার তো রাজনৈতিক দলগুলোকে এবং সরকারকে রাজনীতি শূন্য করার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছিল। নিঃরাজনৈতিকীকরণ বা বিরাজনৈতিকীকরণ কী, কেন, কারা করে চলছে, বুঝতে হবে। বাংলাদেশের রাজনীতি আজ একান্তভাবে দুর্গত। এই দুর্গতি থেকে রাজনীতিকে কারা কীভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় উন্নীত করবেন? বাংলাদেশের ভেতরে শিক্ষিত লোকদের মধ্যে কি দেশাত্মবোধ, স্বাজাত্যবোধ কতটা আছে? এ দেশের গণতন্ত্রী ও সমাজতন্ত্রী দলগুলোর মধ্যে চিন্তা-ভাবনা কী? দেশে এখন কি কোনো নেতা আছেন? নেতৃত্ব আছে? অরাজনৈতিক, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সরকার গঠনের নীতি নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির ও রাজনীতিবিদদের কি কোনো উন্নতি হবে? বাংলাদেশকে তো পরনির্ভর করে তোলা হচ্ছে। বাংলাদেশে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণা কে উদ্ভাবন করেছেন? এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো কেউ কি আছেন বাংলাদেশে?

দুনিয়াব্যাপী সমাজতন্ত্রী ও গণতন্ত্রীরা যে ভূমিকা পালন করেছেন, তার প্রতিক্রিয়ায় রাজনীতিতে ধর্মীয় শক্তির পুনরুত্থান ঘটেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৮০-র দশকের শুরু থেকে নানা কৌশলে গোটা পৃথিবীতে রাজনীতিতে ধর্মীয় শক্তিকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি কেন, কীভাবে হয়েছে পক্ষপাতমুক্ত বিজ্ঞানসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে, তা তলিয়ে দেখা দরকার। বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, সার্বিয়ায় কেন, কীভাবে তিন-চার বছর যুদ্ধ চলল? তারপর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ন্যাটো বাহিনী কেন আফগানিন্তান, ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়ায় যুদ্ধ চালাল, কেন আফগানিস্তানে মোল্লা ওমরকে ক্ষমতাচ্যুত করা হলো, সাদ্দাম হোসেন ও গাদ্দাফিকে কেন হত্যা করা হলো-এসব ঘটনাকে বিজ্ঞানসম্মত পক্ষপাতমুক্ত দৃষ্টি নিয়ে কারণ-কার্য সূত্র ধরে বিচার করে দেখা একান্ত দরকার। প্রগতির ধারায় চলার জন্য এসব অবশ্য দরকার।

সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রের দুর্গতির মধ্যে রাজনীতিতে ধর্মীয় ধারা পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। কেবল বাংলাদেশে নয়, প্রায় গোটা পৃথিবীতে। অত্যুন্নত নতুন প্রযুক্তি নিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর মানব প্রজাতি কোন গন্তব্যের দিকে চলছে? যুদ্ধবিগ্রহ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ বাড়ছে, ক্রমাগত বাড়ছে। ভোগবাদ ও সুবিধাবাদ হয়ে উঠেছে মানুষের জীবনের মূল লক্ষ্য। ধর্ম প্রবর্তক, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা সমাজে সম্মানজনক বলে বিবেচিত হতেন। প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে তারা আর সম্মানজনক বলে বিবেচিত হন না। ১৯৮০-র দশক থেকে যে মৌলবাদবিরোধী আন্দোলন চলেছে, তাতে আন্দোলনকারীরা তাদের প্রতি বিরূপ মনোভাব সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। এর ফল কী হয়েছে? বাস্তবে তো দেখা যায়, গণতন্ত্রী ও সমাজতন্ত্রীরা তাদের অনেক সমর্থককে হারিয়েছেন এবং ধর্মপন্থীদের সংখ্যা বেড়েছে। জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে যেসব কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে, তার ফল কী হয়েছে। এখন তো দেখা যাচ্ছে, জামায়াত রাষ্ট্রক্ষমতা লাভের দিকে এগোচ্ছে এবং আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলছে। ছাত্রলীগ এরই মধ্যে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে চিহ্নিত হয়েছে এবং নিষিদ্ধ হয়েছে। ১৯৮০-র দশকের শুরু থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসলাম ও মুসলমানদের সম্পর্কে নানা কটূক্তি করেছে এবং তাতে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কথিত আরব বসন্তের উত্থান-পতন কেন, কীভাবে ঘটেছে? তালেবানদের উত্থান কেন, কীভাবে ঘটেছে। ‘আমরা সবাই তালেবান-বাংলা হবে আফগান’-এই স্লোগান ঢাকায়ও উঠেছে। আফগানিস্তানে লাখো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট মোল্লা ওমরকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং ইরাকে প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতাচ্যুত ও হত্যা করা হয়েছে। লিবিয়ায় লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফিকে হত্যা করা হয়েছে। সিরিয়ায়ও লাখো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং রাশিয়া ও চীনের সক্রিয় বিরোধিতার কারণে সেখানে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনাকে সফল করতে পারেনি। দুনিয়াজুড়ে প্রচারমাধ্যম থেকে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে ১০ বছরে অন্তত ১৫ লাখ লোককে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ন্যাটো বাহিনী। বাংলাদেশের মতো হলে হয়তো বলা হতো, অন্তত দেড় কোটি লোক নিহত হয়েছে! মধ্যপ্রাচ্যের এই ঘটনাবলির তথ্যাদি ও দায়ী ব্যক্তিদের সংগঠনগুলোর বিবরণ দিয়ে জাতিসংঘের একটি পুস্তক প্রকাশ করা দরকার। মানবজাতির কল্যাণেই এটি করা দরকার। আমরা যুদ্ধ চাই না। মানবজাতিকে আমরা ক্রমিক গতিতে যুদ্ধমুক্ত করে তুলতে চাই।

ধর্মকে যারা রাজনীতিতে টেনে আনেন, তারা ধর্মের এবং রাজনীতিরও ক্ষতি করেন। রাজনীতিকে যখন ধর্মভিত্তিক করা হয়, তখন ধর্মের দ্বারা রাজনীতি পরিচালিত হয় না, বরং রাজনীতিই ধর্মের পরিচালক হয়ে যায়। আর রাজনীতিও ধর্মের দ্বারা পরিচালিত হতে গিয়ে দুর্বল হয়ে যায়। রাজনীতি ও ধর্ম দুটিরই স্বাতন্ত্র্য স্বীকার করা দরকার।

ইসলামে জিহাদের কথা আছে। জিহাদ কী, তা নিয়ে মাওলানা মওদুদীর লিখিত বক্তব্য আছে। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র সংঘ কি জিহাদের এই ধারণাকে স্বীকার করে? তালেবান, হিযবুত তাহরীর, আল-কায়েদা, আইএস প্রভৃতি জঙ্গিবাদী দল ইসলামকে যেভাবে জিহাদিরূপে বর্ণনা করছে এবং জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, ইসলামের প্রকৃত পরিচয় কি তাতে আছে? খুব গুরুত্বপূর্ণ এই প্রশ্ন। কিন্তু পৃথিবীব্যাপী কোথাও এ প্রশ্নে মুসলিম কোনো মহল থেকে এ বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছু বলা হয় না। ফলে ইসলাম ও রাজনীতি-দুটিরই ক্ষতি হচ্ছে।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সম্পর্কে কেবল শাস্তিদানই যথেষ্ট নয়, শাস্তির সঙ্গে মনমানসিকতা ও বিশ্বাসের দিকটাতেও গুরুত্ব দিতে হবে এবং বিবেক ও যুক্তিবোধকে অবলম্বন করে মানসিকতার পরিবর্তন ঘটানোর জন্য কাজ করতে হবে।

জাতীয়তাবাদের সঙ্গে তার সম্পূরক আন্তর্জাতিকতাবাদ অবলম্বন করে বর্তমান জাতিসংঘকে পুনগর্ঠিত ও নবায়িত করতে হবে। জাতিসংঘকে রাষ্ট্রসংঘ নাম দেওয়া সমীচীন। জাতিসংঘের কাজ হবে দুনিয়াব্যাপী জাতিরাষ্ট্রগুলোর মধ্যকার বিরোধ মীমাংসা, যুদ্ধের আশঙ্কা বিলুপ্ত করা, যুদ্ধ লেগে গেলে শান্তিপূর্ণ উপায়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা, জাতিরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার ও সাংস্কৃতিক উন্নতির পরিবেশ তৈরি করা ইত্যাদি। রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ কোনো ব্যাপারেই জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ করবে না। দুনিয়াব্যাপী এই লক্ষ্যে কাজ করলে একদিন অবশ্যই মানুষের এই অভিলাষ বাস্তবায়িত হবে। মনুষ্যত্ব জয়ী হবে। মানুষের অন্তর্গত পশুত্ব পরাজিত হবে এবং পরাজিত থাকবে।

লেখক : বিশিষ্ট চিন্তাবিদ, সাবেক অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। 

আজকালের খবর/আরইউ








http://www.ajkalerkhobor.net/ad/1724840661.gif
সর্বশেষ সংবাদ
রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিতে আগ্রহী জেলেনস্কি: ট্রাম্প
জুলাই-আগস্টের ঘটনায় অনেক বাদী মামলা বাণিজ্য করছেন: ডিএমপি কমিশনার
বাশার আল আসাদের বাসভবনে লুটপাট চালাল জনতা
এক দিনে তিনবার হার, ভারতের দুঃস্বপ্নের মতো দিন
বিক্রম মিশ্রির সফরে বরফ গলতে পারে ঢাকা-দিল্লির
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ইবিতে মারামারি
বৃদ্ধকে বিয়ে, ফুলশয্যার আগে দেনমোহর নিয়ে উধাও যুব মহিলা লীগ নেত্রী!
চিন্ময়সহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা
হঠাৎ এফডিসিতে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা
গভীর রাতে যুবলীগ নেতার বাড়িতে আগুন, মা ও চাচি নিহত
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft