সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার অপরিহার্য। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কারের মাধ্যমে জাতি হিসেবে নতুন যাত্রা শুরু করতে চায় তার সরকার।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বর্তমানে দেশ পরিচালনায় নিয়োজিত বাংলাদেশ সরকার জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়নি, সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমেও প্রতিষ্ঠা লাভ করেনি। এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে একটি রাজনৈতিক সরকারের একনায়কতন্ত্র ও স্বৈরশাসনের অবসানের লক্ষ্যে ছাত্র-জনতার রক্তঝরা অভ্যুত্থানের ফলে।
উচ্চ আদালতের একটি রায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা গত ১ জুলাই সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন শুরু করেন। ১৪ জুলাই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একটি বেফাঁস ও বিস্ফোরক মন্তব্যে এই আন্দোলন দাবানলে পরিণত হয়। আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে আন্দোলন প্রতিহত করার চেষ্টা এবং সরকারদলীয় ক্যাডার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর নির্বিচারে গুলি চালানোর ফলে ছাত্র-জনতা হতাহতের ঘটনা, মেধাকে প্রাধান্য দিয়ে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের আন্দোলন, পর্যায়ক্রমে একনায়কতন্ত্র এবং স্বৈরশাসন অবসানের লক্ষ্যে পরিচালিত এক দফা গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ৫ আগস্ট সারা দেশ থেকে ছাত্র-জনতা ঢাকা অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করে। শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা নোবেলজয়ী একমাত্র বাংলাদেশি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধ করেন। সে সময়ে তিনি বিদেশে ছিলেন। তিনি দায়িত্ব নিতে সম্মত হন এবং দেশে ফিরে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ছাত্র-জনতা বা সাধারণ মানুষের আকাশচুম্বী প্রত্যাশা। তারা রাষ্ট্রযন্ত্র সংস্কার করবে। উদার, গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের ভিত রচনা করবে। একনায়কতন্ত্র ও স্বৈরশাসনের পুনরাবৃত্তি বন্ধ করবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবে।
দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবে। অর্থনীতিতে আস্থা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেবে; ঘুষ-দুর্নীতি, অর্থপাচার, চাঁদাবাজি, ব্যাংকের অর্থ লুট বন্ধ করবে এবং অপরাধীদের শাস্তি দেবে। বৈষম্যহীন সমাজ গড়বে। দারিদ্র্য নির্মূল করবে। জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাবে। মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টেনে জনজীবনে স্বস্তি আনবে। বিশ্বমানের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করবে। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অঙ্গীকার করেছেন জনগণের প্রত্যাশা পূরণ তারা করবেনই। ছাত্র-জনতার প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ পেতে প্রথমে ছয়টি এবং পরে আরো চারটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। প্রয়োজনে হয়তো আরো কয়েকটি কমিশন গঠন করা হতে পারে। সংস্কার কার্যক্রম সুচিন্তিত ও বস্তুনিষ্ঠ এবং বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে কমিশন গঠন ইতিবাচক পদক্ষেপ।
কমিশন গঠন একটি জটিল প্রক্রিয়া, বিশেষ করে কমিশনের সদস্য নির্বাচন এবং কার্যপরিধি নির্ধারণ। কিছুটা বিলম্বে হলেও ছয়টি কমিশন গঠনের বিজ্ঞপ্তি এরই মধ্যে জারি করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিটি কমিশন গঠনের উদ্দেশ্য সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, কিন্তু কার্যপরিধি নির্দিষ্ট করে বর্ণনা করা হয়নি। ফলে কিছু ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন কমিশন থেকে পরস্পরবিরোধী সুপারিশ আসার আশঙ্কা আছে এবং তাতে কিছুটা জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, যদিও প্রশ্ন উঠতে পারে সংস্কারের জন্য তিন মাস কি যথেষ্ট সময়?
বাংলাদেশের মানুষ কখনো ভোটযুদ্ধে, কখনো সম্মুখ সমরে অথবা আন্দোলন-সংগ্রামে জয়ী হয়ে পরিবর্তন এনেছে। ১৯৪৭, ১৯৭১, ১৯৯১ ও ২০০৭ খুব একটা সুদূর অতীতের কথা নয়। তারা স্বপ্ন দেখেছে-গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা, সুশাসন, বৈষম্যহীন সমাজ, সমৃদ্ধি, শান্তি-শৃঙ্খলা, মানবাধিকার আর নায্যতা প্রতিষ্ঠার। ১৯৭১-এ স্বাধীনতা অর্জনের পর বিগত পাঁচ দশকের বেশি সময়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি দীর্ঘ সময় দেশ শাসন করেছে। এমনকি জামায়াতে ইসলামীও ক্ষমতার অংশী ছিল। কোনো রাজনৈতিক দলই গণতন্ত্র বা সুশাসন প্রতিষ্ঠায় মনোযোগী ছিল না। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সামান্যতম চেষ্টা হয়নি। রাজনৈতিক নেতাদের অযোগ্যতা, অর্থ ও ক্ষমতার লিপ্সা, কোন্দল, অদূরদর্শিতা বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি বারবার কালিমালিপ্ত করেছে। ২০২৪-এ হাজারো প্রাণের বিনিময়ে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পরিবর্তন আনা হয়েছে। তারা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার সহকর্মীদের সংস্কারের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব অর্পণ করেছে। তারা নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়নি। কোনো রাজনৈতিক দল বা নেতাকে ক্ষমতায় আসতে সহায়তা করার অঙ্গীকারও দেয়নি। তবে এরই মধ্যে রাজনৈতিক নেতারা নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসীন হতে কিছুটা অধৈর্য হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ এমনও বলছেন, সংবিধান সংশোধন বা পরিবর্তন, রাষ্ট্রযন্ত্র সংস্কারের দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের নয়, এই দায়িত্ব নির্বাচিত সরকারের।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেছে অবিস্মরণীয় গণ-অভ্যুত্থানের ফলে, সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব নিয়ে। সংস্কার সম্পূর্ণ না করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ম্যান্ডেট তাদের নেই। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ৭ জানুয়ারি। এই সংসদের মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর। পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ২০২৮-এর শেষে বা ২০২৯-এর প্রারম্ভে। অভ্যুত্থানে দ্বাদশ সংসদ বাতিল হয়েছে। এখন নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে সরকারকে অবশ্যই আইনানুগ প্রক্রিয়ায় স্বৈরশাসনের সঙ্গে যুক্ত সব অপরাধীর শাস্তির বিধান ও রাজনৈতিক অঙ্গনে পুনঃপ্রবেশের পথ রুদ্ধ করতে হবে। আবার কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হঠকারী আচরণের অপরাধে বিশেষ রাজনৈতিক আদর্শ বা দলকে নিষিদ্ধ করাটা কতটা মৌলিক অধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারের সঙ্গে সামঞ্জ্যপূর্ণ কি না ভেবে দেখতে হবে। দেশ যাতে বিভাজন ও বিশৃঙ্খলার দিকে পরিচালিত না হয় সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে। উদার, গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার এবং একনায়কতন্ত্র ও স্বৈরশাসনের পুনরাবৃত্তি রোধের আকাক্সক্ষা বাস্তবায়ন সম্পূর্ণ করে নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধেদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য সুবিবেচনাপ্রসূত হবে।
ছাত্র-জনতার প্রত্যাশিত সংস্কার সম্পন্ন করতে বেশ সময়ের প্রয়োজন হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথ সুগম করার পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়েও মনোযোগ দেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে। কয়েকটি ক্ষেত্রে সরকারের বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন মনে করি। বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগ বৃদ্ধি অর্থাৎ ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণকে অগ্রাধিকার দেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে। রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পেলে দেশে কর্মসংস্থান, মানুষের আয়-রোজগার বৃদ্ধি ও জীবনমানের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শ্রেণিভুক্ত হবে। রপ্তানি বাণিজ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য দেশের স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে দেওয়া বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা তখন ক্রমান্বয়ে প্রত্যাহার করা হবে। এখন থেকে প্রস্তুতি না নিলে রপ্তানিতে ধস নামতে পারে। রপ্তানি বৃদ্ধির সর্বোত্তম পন্থা প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে মানসম্মত পণ্য উৎপাদন ও নির্ধারিত সময়ে সরবরাহ। আবার আমদানি গন্তব্যে শুল্ক সুবিধা রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়।
পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে চীনের পরই বাংলাদেশের স্থান। বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশে উৎপাদিত বস্ত্র ও পোশাকের ইউরোপীয় ইউনিয়নে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার আছে। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আরোপিত আমদানি শুল্ক হার ১২ শতাংশ বা ততোধিক। ইউরোপীয় ইউনিয়নে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার অব্যাহত আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বস্ত্র ও পোশাক আমদানির শুল্কহার হ্রাস বা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হলে বাংলাদেশে বস্ত্র ও তৈরি পোশাকের উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে এবং কর্মসংস্থান বাড়বে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি সুবিধা নিয়ে অনেক অহেতুক আলোচনা হয়। মার্কিন আইন প্রণয়নকারীরা এই স্কিমটির মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ শেষ হলে আর বৃদ্ধি করেনি। তা ছাড়া বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি স্কিমের আওতায় রপ্তানি কখনো তেমন উল্লেখযোগ্য ছিল না। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিবিড় সম্পর্ক আছে। তার এই সুসম্পর্কের সূত্র ধরে অন্তর্বর্তী সরকার, ন্যূনপক্ষে ২০৪৫ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশে উৎপাদিত বস্ত্র ও তৈরি পোশাকের কোটা ও শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার লাভে সক্ষম হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে। বেকারত্ব ও অভাব-অনটন বহুলাংশে লোপ পাবে।
বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। রপ্তানির ক্ষেত্রে একক পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা ঝুঁকিপূর্ণ। রপ্তানি বহুমুখীকরণের প্রচেষ্টা এখন পর্যন্ত তেমন সফলতার মুখ দেখেনি। পূর্ববর্তী সরকার দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১০০টি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল দেশে শিল্পায়ন ত্বরান্বিত করে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও রপ্তানি বহুমুখীকরণ। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করে দ্রুত এই উদ্যোগের সফল বাস্তবায়ন সুবিবেচনাপ্রসূত হবে।
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী আছে। তন্মধ্যে কেবল গঙ্গা নদীর পানিবণ্টনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে। তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি ঝুলে আছে। এ বছর ফেনী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীতে অভূতপূর্ব বন্যা হয়েছে। সুরমা-কুশিয়ারা সিলেটের দুঃখ। ভারত দুই দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোর উজানে বাংলাদেশে কী প্রতিকূল প্রভাব পড়বে, তা বিবেচনায় না নিয়েই অসংখ্য বাঁধ নির্মাণ করছে। ফলে বাংলাদেশ অংশে পানিপ্রবাহ হ্রাস পাওয়ায় একদিকে নদীর নাব্যতা কমছে, অন্যদিকে বর্ষায় বন্যার আশঙ্কা বাড়ছে। পানিপ্রবাহ ও বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি এবং শুষ্ক মৌসুমে সেচ সুবিধা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় বৈরী দেশ ভারত ও পাকিস্তান সিন্ধু অববাহিকা চুক্তি স্বাক্ষর করে উপকৃত হয়েছে। গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীর অববাহিকার দেশ ভারত, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক আছে। বিশ্বব্যাংক এবং অন্যান্য দাতা দেশ ও বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় সব কটি নদীর অভিন্ন অববাহিকায় পানিপ্রবাহ ও বিদ্যৎ উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্যাপক প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করা হলে সব কটি দেশই উপকৃত হবে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় দারিদ্র্য বিমোচন বহুলাংশে ত্বরান্বিত হবে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস উদ্যোগী হলে সমঝোতার ভিত্তিতে এই প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সম্ভব হতে পারে। আশা করি, তিনি এই উদ্যোগ অবিলম্বে নেবেন এবং দক্ষিণ এশিয়ার দরিদ্র জনসাধারণের ভাগ্যোন্নয়নে চিরস্থায়ী অবদান রাখবেন। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আমার ধারণা, তার শাসনামল বাংলাদেশের স্বর্ণযুগের সূতিকাগার হিসেবে চিহ্নিত হবে।
লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশন।
আজকালের খবর/আরইউ