প্রকাশ: বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪, ৮:১২ PM
রাজধানীর গুলশান ২ নম্বর কাঁচাবাজারের মার্কেট অফিস দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ভাটারা এলাকার বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বাঁধা দেওয়ায় এক ব্যবসায়ীকে গরম পানি দিয়ে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগও এসেছে। গত ২৪ সেপ্টেম্বরের এ ঘটনায় গুলশান থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
জানা যায়, ওইদিন মোহাম্মদ আলী কিছু সঙ্গী নিয়ে গুলশান ২ নম্বর কাঁচাবাজারের বিএনপি অফিস দখল করার চেষ্টা করেন। এই সময়ে মার্কেটের বিএনপি-পন্থী ব্যবসায়ীরা তাদের বাঁধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে গুলশান ২ নম্বর ইউনিট বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল গণির শাহীনের শরীরে গরম পানি ছুঁড়লে তার শরীরের ২৭ শতাংশ পুড়ে যায়। বর্তমানে তিনি শেখ হাসিনা প্লাস্টিক সার্জারি অ্যান্ড বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মোহাম্মদ আলী ২০০৯ সাল থেকে বাজারে আসেননি। তবে হঠাৎ করে বাজারের বিএনপি অফিস ও কমিটি দখল করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ দ্বারা নিগৃহীত এই বিএনপি-পন্থী ব্যবসায়ীদের ওপর অত্যাচার চালানো হয়েছে, যা এখন আবারো বাড়ছে।
গুলশান থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক দ্বীন ইসলাম জানান, শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই বাজারে বিএনপি-পন্থী ব্যবসায়ীদের ওপর নির্যাতন চলছে। তবে সম্প্রতি কিছু বিএনপি নামধারী সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মোহাম্মদ আলী জোর করে মার্কেটের কমিটি এবং অফিস দখলের চেষ্টা করছেন।
গুলশান ২ নম্বর ইউনিট বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল গনি শাহিন বলেন, আমরা প্রশ্ন করতে গিয়েছিলাম কেন ভাটারার লোকজন গুলশান অফিস দখল করতে এসেছেন। তখন তারা আমাদের ওপর হামলা চালান এবং আমাকে চায়ের গরম পানি ও পেট্রোল দিয়ে ঝলসে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলীকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, গুলশান ২ নম্বর কাঁচাবাজার মার্কেট দখল এবং চাঁদাবাজির ঘটনায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের একটি গ্রুপ সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে। বিশেষ করে ভাটারা থানা আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী খান এবং তার ছেলে যুবদল নেতা তৌকির আহম্মেদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার সময়ে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, তৌকির আহম্মেদ সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করেন।
এ ছাড়া, বাজার দখল এবং চাঁদাবাজিতে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে আহবায়ক গুলশান থানা বিএনপি শরীফ উদ্দীন মামুন, সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক গুলশান থানা বিএনপি শাহজাহান কবীর মন্টু, সভাপতি ১৯ নম্বর ওয়ার্ড নুরু হোসেন নেতৃত্বে গুলশান থানা ও ওয়ার্ডের একদল নেতাকর্মী। তাদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই ময়লার টাকা নেওয়ার অভিযোগ ছিল, যার একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছিল। ওই অডিওতে ৫ আগস্টের পর থেকে তারা চাঁদাবাজি এবং ময়লার টাকা ভাগাভাগির মতো অপকর্মে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ করা হয়েছে গুলশান থানায়। বর্তমানে মার্কেটের সাধারণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আবারো যেকোনো সময় হামলার ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন না ধরায় তা সম্ভব হয়নি।
আজকালের খবর/এসআই/আরইউ