রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
ফেনীর পর কক্সবাজার, এক মাস না যেতেই ফের অস্বাভাবিক বৃষ্টি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১০:৪৯ AM আপডেট: ১৪.০৯.২০২৪ ১১:১১ AM
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে, গত ২১ আগস্ট ফেনীতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়। ওই দিন ২৪ ঘণ্টায় ৩১২ মিলিমিটার বৃষ্টির সঙ্গে ভারতের ত্রিপুরার রেকর্ড বৃষ্টি যোগ হয়। ফলে ওই এলাকায় তিন যুগের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। 

এর একমাস না যেতেই ফের অস্বাভাবিক বৃষ্টি দেখলো দেশ। এবার কক্সবাজার। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে; যা ওই অঞ্চলে ১৯৪৮ সালের পর সর্বোচ্চ রেকর্ড। 

বাংলাদেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছিল শ্রীমঙ্গলে ১৯৮১ সালের ১৮ জুলাই, ৫২০ মিলিমিটার। 

বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার কক্সবাজারে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো জেলায় ২৪ ঘণ্টায় চতুর্থ সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। আর কক্সবাজারের জন্য একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড এটি। এর আগে, ২০১৫ সালে ৪৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল সর্বদক্ষিণের জেলাটিতে।

অতিবৃষ্টি ও ঢলের কারণে পাহাড় ধসে দুই উপজেলায় মারা গেছেন ছয়জন।

জেলার কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল ছাপিয়ে প্লাবিত হয়েছে কক্সবাজার শহরও। অনেক জায়গাতে রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে।

বন্যার পূর্বাভাস

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে মৌসুমী বন্যা এবং বৃষ্টিপাত সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য জানানো হয়েছে শুক্রবার বেলা ১১টায়।

এতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, ফেনী ও গোমতী নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, অপরদিকে হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

আবহাওয়ার পূর্বাভাসের বরাত দিয়ে বলা হয়, দেশে এবং উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতার প্রেক্ষিতে, আগামী দুইদিন চট্টগ্রাম বিভাগের নদীসমূহের পানি সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।

এর ফলে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর জেলার কিছু কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র।

তাছাড়া, প্লাবনের শঙ্কা কক্সবাজার ও বান্দরবানের দিকে যতটা প্রকট ফেনী-নোয়াখালী অঞ্চলে ততটা নয়। 

পাহাড় ধসে দুই পরিবারের ৬ জনের মৃত্যু

কক্সবাজার সদরের ঝিলংঝা পাহাড় ধসে দুই পরিবারের মোট ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে এক পরিবারের তিনজন বাংলাদেশি এবং অপর পরিবারের তিনজন রোহিঙ্গা। এছাড়া পাহাড় ধসের ঘটনায় আরও একজন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ও শুক্রবার ভোরে এই পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। 
 
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার ঝিলংঝা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিককুল এলাকায় পাহাড় ধসে এক পরিবারের তিনজন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়। 

কক্সবাজারে বিপর্যস্ত জনজীবন, তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল

বৃষ্টির পর জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কক্সবাজারের জনজীবন। অতিবৃষ্টিতে কক্সবাজারের শতাধিক জনপদ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। একই সঙ্গে পাহাড়ি ঢল ও পানি প্রবেশ করে জেলার বেশকিছু গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। 

গতকাল পর্যন্ত পর্যটনের শহর কক্সবাজারের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। প্রধান সড়কসহ শহরের ৫০টি উপসড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন টেকনাফ ও উখিয়ায় অন্তত ১০০ গ্রামের মানুষ। টেকনাফ সদর, হোয়াইক্যং, হ্নীলা, বাহারছাড়া ও সাবরাং ইউনিয়নের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। উখিয়ার রাজাপালং, জালিয়াপালং, হলদিয়াপালং ও পালংখালী ইউনিয়নের আরও ২০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়া তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। 

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী বলেন, ভারী বৃষ্টিতে টেকনাফের অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অনেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাদের ত্রাণ তৎপরতা দেওয়া হচ্ছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিভীষণ কান্তি দাশ জানিয়েছেন, টানা বৃষ্টির কারণে কক্সবাজারের অনেক এলাকা পানির নিচে। কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। এছাড়া ঝিলংজায় পাহাড় ধসে নিহত তিনজনের পরিবারকে ৭৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান থেকে লোকজন সরিয়ে নেওয়ার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কাজ চলছে।

কক্সবাজারে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকরাও পড়েছেন চরম বিপাকে। অধিকাংশ পর্যটক অবস্থান করছেন হোটেল কক্ষে। আবার অনেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছুটছেন সাগরে। সাগরে লোনা জলে গা ভাসাচ্ছেন। 

পর্যটকরা জানান, সৈকতের বর্ষাকালীন সৌন্দর্য অন্যরকম। আবার অনেককেই বৃষ্টির কারণে বিরক্তি প্রকাশ করতেও দেখা গেছে। 

কক্সবাজার হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, টানা ভারী বর্ষণে হোটেল মোটেল জোনের অনেক হোটেলে পানি ঢুকেছে। প্রধান সড়কসহ অনেক সড়ক তলিয়ে গেছে। যার কারণে অনেক পর্যটক হোটেলে বন্দি। পর্যটকদের রুম ভাড়া ছাড় দেওয়া হচ্ছে। 

আজকালের খবর/ এমকে








http://www.ajkalerkhobor.net/ad/1724840661.gif
সর্বশেষ সংবাদ
পুরোনো সিন্ডিকেট বদলে নতুন সিন্ডিকেট হচ্ছে
ডিম-মুরগির দাম বাড়িয়ে ২৮০ কোটি টাকা লোপাট
ঐকমত্যের ওপর নির্ভর করবে নির্বাচনের টাইমলাইন : প্রেস সচিব
বৃষ্টি নিয়ে নতুন বার্তা দিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর
গণহত্যায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে: মাহফুজ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
দুর্গাপূজায় সারাদেশে দুই লাখের বেশি আনসার মোতায়েন হচ্ছে
সাংবাদিক হিসেবে কারো বিরুদ্ধে মামলা হোক আমরা তা চাইনা: শ্যামল
পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী তৎপর থাকবে: সেনাপ্রধান
সব বিভাগে ভারী বৃষ্টির আভাস, চট্টগ্রামে ভূমিধসের শঙ্কা
অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতার কারণেই কি দেশে ফিরবেন শেখ হাসিনা?
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft