সহকর্মীদের সঙ্গে অসদাচরণসহ নানা অনিয়মে অভিযুক্ত ও বিতর্কিত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আব্দুস সামাদের অপসারণের দাবিতে ১০ম দিনের মতো বিক্ষোভ সমাবেশে উত্তাল রয়েছে অধিদপ্তরটি।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে চার থেকে পাঁচশ কর্মকর্তা ও কর্মচারী এতে অংশ নেন। দাবি আদায় না হলে আরো কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা।
বিক্ষুব্ধরা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কে ন্যূনতম কোনো ধারণা না থাকা এই কর্মকর্তা বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এ কারণে তাকে প্রাথমিক শিক্ষার মহাপরিচালকের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ হতে অনতিবিলম্বে অপসারণ করে তার পরিবর্তে একজন শিক্ষাবান্ধব ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাকে পদায়ন করতে হবে।
এছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০ আগস্ট প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে আসেন এবং মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু সভায় মহাপরিচালক তার নির্বাচিত কিছু ব্যক্তিকে নিয়ে গোপনে সব আয়োজন শেষ করেন। এছাড়া সভায় তিনি তার পছন্দের মাত্র ৬ জন ব্যক্তিকে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেন, যাদের সবার কাছ থেকেই সভার দিন সকালবেলা বক্তব্যের স্ক্রিপ্ট জমা নেন।
স্থানীয় বিতর্কিত সাবেক সংসদ সদস্য মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সুপারিশে মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে তিন মাস হতে চললেও তিনি ছয়-সাত বছর ধরে একই শাখায় কাজ করা এবং বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সুবিধাভোগীদের এখনো বদলি করেননি। সব বিতর্কিত, দুর্নীতিবাজ ও পদলোভী কিছু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তিনি তার মহাপরিচালক পদ ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা। বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষার মহাপরিচালকের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ হতে অনতিবিলম্বে অপসারণ করে তার পরিবর্তে একজন শিক্ষাবান্ধব ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাকে পদায়নের জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করে সমন্বয়ক মো. আব্দুর রাজ্জাক সিদ্দিকী বলনে, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বর্তমান ডিজিকে অপসারণ না করা হলে, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর হতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরসহ মাঠ পর্যায়ে সকল দপ্তরে (বিদ্যালয় বাদে) মহাপরিচালকের অপসারণের দাবিতে ব্যানার টানানো, ১ ঘণ্টার কর্মবিরতি ও কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন তিনি।
সমাবেশে অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মহাপরিচালকের অপসারণ চেয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। বক্তারা হলেন- নাসিমা বেগম (পরিচালক), আলেয়া ফেরদৌসী শিখা (উপপরিচালক), আব্দুল আলিম (উপপরিচালক), নুরুল ইসলাম (উপপরিচালক), এনামুল হক (সহকারী পরিচালক), সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট মো. আব্দুস আলিম, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার এস এম তকিবুল ইসলাম, কর্মচারীদরে সমিতির পক্ষ হতে মো. আব্দুল হালিম, খায়ের আহমদ মজুমদার (সাধারণ সম্পাদক), আব্দুল মতিন (সভাপতি), শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পদত্যাগের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনে মুখে গত কয়েকদিন ধরেই অফিসে আসছেন না ডিজি।
আজকালের খবর/ওআর