প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১২:২৯ AM আপডেট: ০৫.০৯.২০২৪ ১২:৩৮ AM
‘আলো আসবেই’ শিরোনামে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের ফাঁস হওয়া স্ক্রিনশট নিয়ে দেশজুড়ে চলছে আলোচনা -সমালোচনা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে প্রায় ১৬০ জন আওয়ামীপন্থী অভিনয়শিল্পী, নির্মাতারা একজোট হয়েছিলেন এই গ্রুপে। সেখানে তাদের কথোপকথন জন্ম দিয়েছে এই আলোচনার। গ্রুপে অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস ছাত্রদের ওপরে গরম জল ঢালার পরামর্শ দিয়ে রয়েছেন তোপের মুখে।
এরই মধ্যে জানা গেছে, সরকার পতনের পরপরই তিনি কানাডা পাড়ি জমিয়েছেন। সেখান থেকে পুরো বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে।
নিচে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো
কেমন আছেন?শিল্পীদের এখন বেকায়দা অবস্থা। আমরা শিল্পীরাই শিল্পীদের পেছনে কথা বলছি।
‘আলো আসবেই’ নামে গ্রুপে আপনাদের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে। যেখানে আপনি ছাত্রদের ওপরে গরম পানি ঢেলে দিতে বলেছিলেন। এমনটা বলার কারণ কী?
আসলে গ্রুপ তো সবারই থাকে। আমাদেরও ছিল।
আমরা কিন্তু সেখানে কোনো বাজে কথা বলিনি। আমরা কিন্তু সব সময় বলেছি ছাত্রদের সঙ্গে বসেন। কথা বলেন। আমরা তো আর নীতিনির্ধারণী কেউ না। সেখানে বলা হয়েছে হাসপাতালে আগুন।
ওখানে কেউ ঢুকতে পারছে না। আমি বলেছি গরম জল দিলেই হয়। গরম জল তো কামান থেকে দেয়। জলকামান লিখি নাই আর কি। ওখানেই বোধ হয় মিসটেক হয়েছে। কামানে যে গরম জল থাকে সেটার কথা বলেছি।
কিন্তু এই যে আপনারা বিটিভি ও মেট্রো রেলের পাশে দাঁড়ালেন, উল্টোটা কি করা যেত না। ছাত্রদের পাশে তো দাঁড়াতে পারতেন?
সত্যি কথা হলো আমি তখন অসুস্থ ছিলাম। পাঁচ দিন কোনো খবর নিতে পারিনি। ইন্টারনেট যখন বন্ধ ছিল, তখন। ওই সময় যে বাচ্চাদের এত কিছু হয়েছে জানতান না। আসলে আমরা কেউ কিন্তু ছাত্রদের বিপক্ষে ছিলাম না। আমাদের মিডিয়ার লোকজন তাদের বিপক্ষে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছে। আমরা কিন্তু সন্ত্রাসীদের কথা বলেছি। ছাত্রদের কথা না।
ওখানে যে সন্ত্রাসীরা ছিল এটা কিভাবে নিশ্চিত হলেন আপনারা?
আসলে তোমরা যেমন সাধারণ মানুষ, আমরাও সাধারণ মানুষ। তোমরা যেভাবে শুনছো, আমরাও শুনেছি। আন্দোলন যারা করত তারা তো আগুন দেওয়ার কথা না।
ওই সময় কয়েকজন মন্ত্রী ঘোষণা দিলন এই আন্দোলন দমানোর জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট। এটা কি ছাত্রলীগের কাজ?
না না। আমি তো পলিটিক্যাল কথা বলব না। আমি এগুলো নিয়ে কিছু বলব না। আমি বলব, তখন লেখা হবে। আবার আগুন জ্বলবে। আমি মাফ চাই। এগুলো নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাই না।
আপনি তো কানাডায় আছেন। দেশে আসার পরিকল্পনা কবে?
এগুলো এখন আর না বলি।
এমনি জানতে চাওয়া আর কি?
এটা তো এমনি মনে হচ্ছে না। এখন কোনো কিছুই নরমাল লাগছে না। এখন কাউকে আপন মনে হচ্ছে না। দেখছি তো অনেক সাংবাদিকের বউ মন্ত্রীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে গান গাইছে। অনেক সাংবাদিক জাতীয় পুরস্কার পাইছে। তারা তো ধুমায়া লিখে গেছে। আমি আওয়ামী লীগ করছি ঠিকই, সেন্সর বোর্ডের মেম্বার ছিলাম, কিন্তু আমি তো কোনো নীতিনির্ধারকের জায়গায় ছিলাম না।
আপনাকে আর দুটি প্রশ্ন করি?
তার আগে বলো তুমি কি আমার পক্ষে লিখবা নাকি বিপক্ষে লিখবা?
আপনি যেটা বলবেন সেটাই লিখব।
আসলে হয় কি, বিতর্কিত হয় হয়, এমন কিছু লিখো না।
একটা কথা শোনা যাচ্ছে, আপনি নাকি বিটিভির মহাপরিচালক হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এটা কি সত্য?
নাহ। আমি বিটিভির ডিজি হতে চাই নাই। এটা তো হওয়া সম্ভব না। আমি ডিরেক্টর অব প্রগ্রাম হওয়ার জন্য বলেছিলাম আগের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীকে। উনি বলেছিলেন, এটা তো প্রধানমন্ত্রীর বিষয়। এইটুকুই। আমি আসলে কাজ করার জন্যই হতে চেয়েছিলাম।
এবার একটু আপনার মতামত নিতে চাই। আপনি তো আওয়ামী লীগের সমর্থক এবং খুব কাছের। এই পুরো আন্দোলনে এই দলটার কোনো ভুল কি আপনার চোখে পড়েছে?
(দীর্ঘশ্বাস) আমি এগুলো বলতে গেলে তো…। এসব নিয়ে বলা ঠিক না। কিছুই বলব না। অনেক সময় সত্য কথা বলা যায় না। বলা উচিতও না। আমরা শিল্পী হইতে পারি, আমাদের যে অনেক মর্যাদা আছে তা না। আমি কিন্তু বিএনপির সময়ও কোনো অ্যাওয়ার্ড পাইনি। ওই সময় বিটিভিতে বাবুল ভাইকে বলে দু-একটা কাজ করেছি। অনেকে ভাবছে আওয়ামী লীগ করেছি, অনেক টাকা-পয়সা পেয়েছি। কোথায় টাকা-পয়সা। অনেক সময় তো আমাদের সঙ্গে ঠিকমতো কথাও বলত না।
আপনাকে ধন্যবাদ।
তোমাকে ধন্যবাদ।
সূত্র : কালের কণ্ঠ
আজকালের খবর/ এমকে