স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে দুর্গাপূজায় তিনদিন ছুটির দাবি জানিয়েছেন জাতীয় হিন্দু মহাজোট নেতারা।
সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের শীর্ষ নেতাকর্মীরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ দাবি জানান।
স্বাক্ষাৎ শেষে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট ঢাকার সভাপতি ড. প্রভাস চন্দ্র রায় বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্বে যিনি আছেন, তার সঙ্গে আমরা পরিচিতির জন্য এসেছি। তিনি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাসহ সবার জানমালের নিরাপত্তায় যেসব কাজ করতে চান, আমরা কী চাই, সেসব জানাতে আমরা এসেছি। উনি আমাদের কথাগুলো সহানুভূতির সঙ্গে শুনেছেন। বলেছেন বাংলাদেশে উনারা যতদিন কাজ করবেন, ততদিন এ বিষয়টা উন্নত থেকে উন্নততর অবস্থায় নিয়ে যাবেন।
তিনি আরও বলেন, আগামীতে সংখ্যালঘু লোকদের ওপর নির্যাতন কীভাবে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা যায়, সেই পরামর্শের জন্য উনি আমাদের ডাকবেন, সহযোগিতা করবেন। আমরা কথা দিয়েছি, সংখ্যালঘুরা কীভাবে ওনাদের কাছ থেকে উপকৃত হতে পারেন, সেই পরামর্শ দেওয়ার জন্য আমরা তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবো।
এ সময় বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব পলাশ কান্তি দে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা যিনি রয়েছেন, আমাদের সঙ্গে এখন পর্যন্ত যে আলোচনা হয়েছে, তাতে আমরা অত্যন্ত খুশি ও সন্তুষ্ট।
তিনি আরও বলেন, বিগত কয়েকদিনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, উনারা সব বিষয়েই অবগত আছেন। উনারা দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন যেখানে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে উনারা তদন্ত করে বের করে যাই হোক না কেন তাদের শাস্তির আওতায় আনবেন।
হিন্দু জোটের মহাসচিব বলেন, ২০০০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিগত ২৪ বছরে সংখ্যালঘুদের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, তার একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা যায় কিনা। কারণ আমরা দেখেছি, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হলেই এ দল বলে ওই দল করেছে ওই দল বলে সেই দল করেছে। যেহেতু এখন রাজনৈতিক নিরপেক্ষ একটি সরকার রয়েছে, তারাই পারবে বিগত ২৪ বছরে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনে কারা জড়িত ছিল তাদের নাম প্রকাশ করতে এবং সেই সাহস উনাদের আছে। আমরা বলেছি এটা উনারা বলেছেন চেষ্টা করবেন।
তিনি আরও বলেন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন এবং সংখ্যালঘু কমিশনের বিষয়েও কথা হয়েছে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা যায় কিনা, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা যায় কিনা, যেহেতু এখন বাংলাদেশে আমরা সবাই বৈষম্যের বিরুদ্ধে আছি।
তিনি বলেন, যেহেতু অক্টোবর এ দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজার আগে এবং পরে বিগত ২৪ বছরে কোনো পূজা হিন্দুরা শান্তিপূর্ণভাবে করতে পারেনি। দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুরের মধ্য দিয়েই আমাদের পূজা শুরু করতে হয়। এসব বিষয়ে কথা বলেছি। এবার মন্ত্রণালয় কঠোরভাবে এসবের মনিটরিং করবে। দুর্গাপূজায় ছুটি তিনদিন করা যায় কিনা সেটা এবার থেকে উনারা দেখবেন। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক সরকারের আমলেই সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হয়েছে। আমরা আশা রাখি বর্তমান সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হবে না। আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে উনাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছি।
হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবির বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি তাদের কথা দিয়েছি এ বিষয়ে আমি অবশ্যই কথা বলবো। দুর্গাপূজা তাদের সবচেয়ে বড় পূজা। আমি তাদের বলেছি এ মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে আমি শক্তভাবে সুপারিশ করবো যাতে দুর্গাপূজায় তিন দিন ছুটি হয়। সেটা না হলেও একান্ত যেন দুদিন ছুটি হয়।
আজকালের খবর/বিএস