গাজীপুরের শ্রীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে মাওনা হাইওয়ে থানা ও জেলা পুলিশ বক্সে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও অর্ধশতাধিক আহতের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের গাড়িসহ ছয়-সাতটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত মাওনা চৌরাস্তা পরিণত হয় এক রণক্ষেত্রে। এ সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়।
আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সকাল ১০টায় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও জনতা মাওনা চৌরাস্তা পল্লী বিদ্যুৎ মোর এবং উড়ালসড়কের নিচে অবস্থান নেন। সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা চালিয়ে খুনের প্রতিবাদ ও ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে তারা।
আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা মাওনা চৌরাস্তা ফ্লাইওভারের নিচে এসে বিক্ষোভ করতে থাকেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তারা বিক্ষোভ নিয়ে ওই এলাকা ছেড়ে গেলে সেখানে উপস্থিত হন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। শিক্ষার্থীরা ফিরে এলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা পিছু হটেন। অন্যদিকে ঘটনাস্থল থেকে পূর্ব দিকে শ্রীপুর রোডে বেশ দূরে অবস্থান নেয় পুলিশ। বিক্ষোভ মিছিলের একপর্যায়ে ফ্লাইওভারের নিচে থাকা মাওনা হাইওয়ে থানা-পুলিশ বক্স ও গাজীপুর জেলা পুলিশ বক্সে ভাঙচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় শ্রীপুর রোড থেকে একাধিক টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট ছুরে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ, কিন্তু সঙ্ঘবদ্ধ আন্দোলনকারীদের ধাওয়ায় পিছু হটতে বাধ্য হয় পুলিশ। এছাড়া মাওনা চৌরাস্তা-শ্রীপুর রোডে ভাই ভাই সিটির সামনে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় ভাই ভাই সিটি কমপ্লেক্সের গেটের ভেতর থেকে রাস্তায় এনে পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দেওয়া হয় এবং অপর একটি গেট ভেঙে ভেতরে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়ি এবং মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আন্দোলনকারীরা। পুলিশ পিছু হটে বিভিন্ন মার্কেটে আত্মগোপনে থাকলে আন্দোলনকারীরা তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করে, এক সময় আন্দোলনকারীরা বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মীর মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও তাদের ওপরও হামলা করে। মাওনা চৌরাস্তা যখন আন্দোলনকারীদের দখলে তখন আন্দোলনকারীরা বিকাল ৩টার দিকে আবার শ্রীপুর রোডে মাওনা হাইওয়ে থানায় আক্রমণ করে অগ্নিসংযোগ করার চেষ্টা করলে হাইওয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী এবং সাধারণ মানুষ আহত হয়।
এ আন্দোলনের ঘটনায় নিহতের কোনো সঠিক তথ্য না পাওয়া গেলেও অর্ধশতাধিক আহতের তথ্য পাওয়া গেছে। শ্রীপুর থানার ওসি আকবর আলী খানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, শিক্ষার্থীরা আমাদের উপর অ্যাটাক করেছে। থানার তিনটি গাড়ি পুড়িয়ে দিছে। এই মুর্হুতে কথা বলা সম্ভব হচ্ছে না, পরিস্থিতি খুব ভয়াবহ।
আজকালের খবর/ওআর