
কোটাবিরোধী আন্দোলকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। হামলায় গুরুতর আহত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বেশ কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন নিউ মার্কেট থানা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল হাসান ফাহাদ।
সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরের পর থেকে দফায় দফায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ২ শতাধিক আহত হন।
আহত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতারা।
গুরুতর আহতদের মধ্যে রয়েছেন- হামজা রহমান অন্তর, উপ-সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, মেহেদী হাসান কাব্য, উপ-প্রচার সম্পাদক - ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শহিদুল্লাহ হলের ছাত্র, সাবাত আল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক বিজয় ৭১ হল ছাত্রলীগ, মেহেদী হাসান শান্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল, জীবন আহমেদ ভূইয়া সহ সম্পাদক তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগ, মেহেদী হাসান উপ কারিগরি বিষয়ক সম্পাদক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও সভাপতি ঢাকা পলিটেকনিক।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন নিউ মার্কেট থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল হাসান ফাহাদ। তার দাবি, আন্দোলনকারীদের গুলিতে তিনি আহত হয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সামনে গুলিবিদ্ধ হন ফাহাদ। পরে গুলিবদ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে অস্ত্রোপচার শেষে সার্জারি বিভাগের ১০১ ওয়ার্ডের ৯ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ ফাহাদ পিপলস্ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেট থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।
ফাহাদ বলেন, কোটাবিরোধীরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে নানাভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এর প্রতিবাদে আজ আমাদের একটি প্রোগ্রাম ছিল। পরে আমরা খবর পাই আমাদের সহকর্মীকে শহীদুল্লাহ হলে আটকে রেখেছে কোটাবিরোধীরা। সেখানে গেলে কোটাবিরোধীদের একজন কোমর থেকে পিস্তল বের করে আমার বাম পায়ে গুলি করে।
এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ফাহাদকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে এলে অস্ত্রোপচার শেষে সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার বাম পায়ের রানে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পা থেকে গুলি বের করা হয়েছে।

এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ কোটা আন্দোলনকারীদের বিষয়ে বলেছেন, এটি কোটাবিরোধী আন্দোলন নয়। এটি রাষ্ট্রবিরোধী, সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্টকে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু নেতা এবং বাইরে থেকে বিএনপি-জামায়াতসহ অন্যরা সেখানে ইন্ধন দিচ্ছে।
তিনি বলেছেন, দেখুন গতকাল রাতে যে ধরনের স্লোগান দেওয়া হয়েছে, রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। সেই দেশে রাজাকারের পক্ষে স্লোগান, এটি রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান। এটি সরকার বিরোধী নয়, এটি রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান। একইসঙ্গে সেখানে সরকারবিরোধী, প্রধানমন্ত্রীবিরোধী স্লোগান দেওয়া হয়েছে। এতে স্পষ্ট আমরা যে বলেছিলাম আগে যে কোটা আন্দোলনের মধ্যে রাজনৈতিক অপশক্তি ঢুকেছে।
আজকালের খবর/বিএস