দোয়া মুমিনদের হাতিয়ার। দোয়ার মাধ্যমে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়। এমনকি দোয়ার ফলে ভাগ্যও ঘুরে যায়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আমার কাছে দোয়া করো। আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব’ (সূরা মুমিন, আয়াত ৬০)।
আরবি দোয়া শব্দের অর্থ ডাকা, আহ্বান করা, প্রার্থনা করা, কোনো কিছু চাওয়া ইত্যাদি।
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ছাড়া আর কিছুই আল্লাহর সিদ্ধান্তকে বদলাতে পারে না।’ (তিরমিজি, হাদিস নম্বর ২১৩৯।) দোয়া সব ইবাদতের মূল।
দোয়া কবুলের অনেক শর্ত আছে। আল্লাহর উদ্দেশে একমাত্র তার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য খালেস দিলে দোয়া করতে হবে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা নবী-রাসূলদের কবুল করা বিভিন্ন দোয়া বর্ণনা করেছেন। নবীদের এসব দোয়া আল্লাহ কবুল করেছিলেন।
আজ আমরা জানবো কুরআনের কবুল হওয়া ৩টি দোয়া সম্পর্কে- প্রথমটি রোগমুক্তির দোয়া, দ্বিতীয়টি বিপদমুক্তির জন্য আর তৃতীয়টি সন্তান লাভের জন্য।
১. আল্লাহর নবী হজরত আইয়ুব (আ.) দোয়া করেছিলেন- আরবি উচ্চারণ: আন্নী মাচ্ছানিয়াদ্দুররু ওয়া আনতা আরহামুর রাহিমীন। অর্থ: হে আমার প্রতিপালক! আমাকে দুঃখ-ক্লেশ (ব্যাধি) স্পর্শ করেছে, আর তুমি তো শ্রেষ্ঠ দয়ালু। (সূরা আম্বিয়া: ৮৩)
এই দোয়া প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘অতঃপর আমি তার (সেই) আহ্বানে সাড়া দিলাম এবং তার দুঃখ-কষ্ট দূর করে দিলাম এবং তার পরিবরাবর্গ ফিরিয়ে দিলাম, আর তাদের সঙ্গে তাদের সমপরিমাণ আরও দিলাম আমার পক্ষ থেকে কৃপাবশতঃ আর এটা ইবাদতকারীদের জন্য উপদেশস্বরূপ।’ (সূরা আম্বিয়া: ৮৪)
২. হজরত ইউনুস (আ.) দোয়া করেছিলেন- আরবি উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নী কুনতু মিনাজ জোয়ালিমীন। অর্থ: তুমি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই; তুমি নির্দোষ আমি গোনাহগার। (সূরা আম্বিয়া: ৮৭)
এই দোয়া বর্ণনার পর আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘অতঃপর আমি তার (সেই) আহ্বানে সাড়া দিলাম এবং তাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিলাম। আমি এমনিভাবে বিশ্বাসীদেরকে মুক্তি দিয়ে থাকি।’ (সূরা আম্বিয়া: ৮৮)
৩. হজরত জাকারিয়া (আ.) দোয়া করেছিলেন- আরবি উচ্চারণ: রাব্বী লা তাযারনী ফারদান ওয়া আনতা খাইরুল ওয়ারিসীন। অর্থ: হে আমার পালনকর্তা! আমাকে একা রেখ না। তুমি তো উত্তম ওয়ারিস। (সূরা আম্বিয়া: ৮৯)
এই দোয়া কবুল হওয়া প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘অতঃপর আমি তার দোয়া কবুল করেছিলাম, তাকে দান করেছিলাম ইয়াহইয়া এবং তার জন্য তার স্ত্রীকে প্রসবযোগ্য করেছিলাম।’ (সূরা আম্বিয়া: ৯০)
ওপরের এ তিনটি দোয়া পরীক্ষিত ও গ্রহণযোগ্য। সুতরাং রোগমু্ক্তি, বিপদমুক্তি কিংবা সন্তান লাভের জন্য এসব দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া মুমিনের দায়িত্ব।
আজকালের খবর/ওআর