পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে সরকার ২০১৮ সালে কোটা বাতিল করেছিল। হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন কোটা পুনর্বহাল করার। সেটি আবার সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত করেছেন। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। সুতরাং সমাধানটা আদালতের মাধ্যমেই হতে হবে।
শনিবার (১৩ জুলাই) বিকালে বগুড়ার শহীদ টিটু মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন, জেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতৃবৃন্দকে সংবর্ধনা এবং মরণোত্তর সম্মাননা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যখন ছাত্রদল কোটা আন্দোলনকারীদের সমর্থন দেয়, যখন রিজভী সাহেব, গয়েশ্বর বাবু, মঈন খান এটার পক্ষে সোচ্চার হন, তখন বুঝতে হবে ডাল মে কুচ কালা হ্যায়। বুঝতে হবে এটার ভেতরে রাজনীতি ঢুকে গেছে। সুতরাং আমি ছাত্র-ছাত্রীদের অনুরোধ জানাব রাজনৈতিক অপশক্তির ফাঁদে যেন না পড়ে। সরকার তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তবে জনগণের ভোগান্তি বাড়ালে সরকারকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আশা করব তারা ক্লাসে ফিরে যাবে। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা করবে।
সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোটা সরকার পুনর্বহাল করেনি। সরকার বরং শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে বাতিল করেছিল। বাতিলের পর কোটাহীনভাবে সরকারি ও অন্যান্য চাকরিতে নিয়োগ হচ্ছিল। হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন কোটা পুনর্বহালের জন্য। সুপ্রিম কোর্ট সেটি স্থগিত করেছেন। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন।
তিনি বলেন, আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে বিচারাধীন বিষয়ে সরকার কোনও সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। তাহলে আদালতের অবমাননা হবে। আশা করছি, শিক্ষার্থীরা সড়কে ভোগান্তি সৃষ্টি না করে সুপ্রিম কোর্টের রায় হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন।
এসময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারি দল হিসেবে আমাদেরও দায়িত্ব আছে দেশে যাতে কেউ অশান্তি সৃষ্টি করতে না পারে। জীবনযাপনে যাতে কেউ ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে সেদিকে নজর রাখার দায়িত্ব সরকারি দলের নেতাকর্মীদেরও আছে। সুতরাং আপনারাও এ ব্যাপারে নজর রাখবেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি পরিবার উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ টানা চারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায়। এর প্রথম কারণ জননেত্রী শেখ হাসিনা। দ্বিতীয় কারণ দলের কর্মীরা। কর্মীরাই দলের প্রাণ। শেখ হাসিনার ওপরে যখনই হামলা হয়েছে তখনই কর্মীরাই মানববর্ম সৃষ্টি করে গ্রেনেড-গুলি থেকে রক্ষা করেছেন। দলের দুঃসময়ে অনেক নেতাই দল ছেড়ে চলে গেছেন, বেসুরে কথা বলেছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধাচারণ করেছেন। দলের সঙ্গে, শেখ হাসিনার সঙ্গে বেইমানি করেছেন। কিন্তু কর্মীরা কখনও বেইমানি করেনি। কাজেই সুবিধাবাদীদের চিহ্নিত করে তাদের হাত থেকে দলকে মুক্ত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) এসএম কামাল হোসেন, বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, বগুড়া-৬ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, বগুড়া-১ আসনের এমপি সাহাদারা মান্নান, বগুড়া-৭ আসনের এমপি ডা. মোস্তফা আলম নান্নু, বগুড়া-৩ আসনের এমপি খাঁন মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী বাঁধনসহ বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের আরও অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আজকালের খবর/বিএস