ভারত জোড়া ন্যায় যাত্রায় বেড়িয়ে মধ্যপ্রদেশের মোরেনায় গিয়ে বিজেপিকে একহাত নিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তিনি ভারতে ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের হার তুলে ধরেছেন। উল্লেখ করেছেন যে, ভারতে বেকারত্বের হার তার প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও বাংলাদেশের তুলনায় দ্বিগুণ। কংগ্রেস সমর্থকদের সামনে গান্ধী বলেন, ‘বেকারত্ব গত ৪০ বছরে সর্বোচ্চস্তরে পৌঁছেছে’।
সোমবার মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার’ এক পথসভায় এসব কথা বলেন সাবেক কংগ্রেস সভাপতি।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে ভারতে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সি যে সব তরুণ কাজ খুঁজছেন, তাদের মধ্যে বেকারত্বের হার ২৩ দশমিক ২ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের সূচকে বিশ্বে যে ছয়টি দেশ একেবারে নিচের সারিতে রয়েছে, তার মধ্যে ভারত অন্যতম। এই ছয়টি দেশের মধ্যে ভারতের সঙ্গে রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া এবং আর্মেনিয়া, লেবানন, ইয়েমেন, ইরান। আর যে সব দেশে তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার কম, সেই তালিকার প্রথম দিকে রয়েছে যথাক্রমে থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া।
আইএলওর সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান উল্লেখ করে রাহুল বলেন, ‘গত ৪০ বছরের মধ্যে ভারতে বেকারত্বের হার সর্বকালীন শীর্ষে পৌঁছেছে। যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে বেকারত্বের হার ভারতে ২৩ শতাংশ, যেখানে পাকিস্তানে ১২ শতাংশ।
এই সামগ্রিক পরিস্থিতির জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদিকে দায়ী করে রাহুলের অভিযোগ, ‘মোদিজি জিএসটি এবং নোটবন্দি করে ছোট ব্যবসা ও ব্যবসায়ীদের শেষ করে দিয়েছেন। এর ফলে ভয়ঙ্কর রকম বেকারত্ব দেখা দিয়েছে।’
কংগ্রেসের অভিযোগ করেছে, ২০২২-এ তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার ২৩ দশমিক ২ শতাংশ ছিল। এর মধ্যে স্নাতকদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৪২ শতাংশ ছিল। মোদি সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, তখন তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার ছিল ২১ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০১৮ সারে তা বেড়ে ২৬ শতাংশে দাঁড়ায়। ২০১৯-এ কিছুটা কমলেও কোভিডের বছর ২০২০ সালে তা ৩০ শতাংশে পৌঁছায়। এখন কিছুটা কমলেও তা ২৩ শতাংশের উপরে।
কংগ্রেস আরো অভিযোগ করছে, বেকারত্বের হার গত চার দশকে সর্বোচ্চ বলেই ভারতীয় যুবকেরা কখনও রাশিয়ার ভাড়াটে সেনা হিসেবে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে, কখনও ইসরায়েল-প্যালেস্টাইন সংঘাতের মধ্যেই ইজরায়েলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এছাড়ও প্রতি ঘণ্টায় দেশে গড়ে ২ জন বেকার তরুণ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন।
সোমবার রাহুল গোয়ালিয়রে ভারতীয় সাবেক সেনা সদস্য এবং সেনায় ভর্তি হতে ইচ্ছুকদের সঙ্গে প্রায় চল্লিশ মিনিট কথা বলেন। সেনাবাহিনীতে স্বল্পমেয়াদি চাকরির অগ্নিপথ প্রকল্পের ‘অন্যায়’, সেনায় ভর্তি বন্ধ থাকা, এক পদ এক পেনশন এবং অগ্নিবীর সেনাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ নিয়ে কথাবার্তা বলেন রাহুল। ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে অগ্নিপথ প্রকল্প বিস্তারিত ভাবে পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের আশ্বাস দেন।
আজকালের খবর/এসএইচ