প্রকাশ: বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১:৩৩ PM
![](../2024/02/14/ak_1707896083.jpg)
এক যুগ ধরে রোজ দুপুরে ভালবেসে প্রায় তিন শতাধিক কবুতরকে খাবার খাওয়ান পাখিপ্রেমী আশরাফুল ইসলাম (৫৫)। তিনি দিনাজপুর জেলার বিরামপুর পৌর শহরের নতুন বাজারের কাঁচামালের আড়ৎদার।
জানা যায়, ২০১১ সালের কোনো এক দুপুরে আশরাফুল তার নিজের কাঁচামালের আড়ৎ এর সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। দেখলেন একটি কবুতর খাবার খুঁজে বেড়াচ্ছে। এ সময় কবুতরটিকে তিনি খেতে দেন। পরদিন দেখেন একই সময় আরো তিনটি কবুতর খাবার খেতে আসে। তিনি তাদের খেতে দেন। এরপর দিনদিন তার কাচামালের আড়ৎ এর সামনে বাড়তে থাকে কবুতরের সংখ্যা। প্রতিদিন বেলা ১২টার দিকে কবুতরগুলি এসে খাবারের জন্য ভিড় করতে থাকে আড়ৎ এর সামনে। তিনি স্ব-যত্নে তাদের খাবার দেন, খাবার খেয়ে পাখিগুলো চলে যায়। এভাবেই দিনের পর দিন কবুতরগুলোর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে পাখিপ্রেমী আশরাফুল ইসলামের।
আজ বুধবার দুপুরে সরেজমিনে গেল দেখা যায়, প্রায় তিন শতাধিক কবুতর খাবারের জন্য ভিড় করছে। আর পাখিপ্রেমী আশরাফুল স্ব-যত্নে অনেক ভালোবেসে কবুতরগুলোকে খাবার দিচ্ছেন। আর তা দেখতে তার ‘দয়াল ভান্ডার’ কাঁচামালের আড়ৎ এর সামনে বাজার করতে আসা অনেক মানুষ ভিড় করছেন।
কথায় কথায় আশরাফুল বলেন, প্রায় ১২ বছর আগে একটি কবুতরকে খাবার দেই। পরদিন খেয়াল করি একই সময় আরো তিনটি কবুতর খাবার খেতে জড়ো হয়। দিনদিন এমনিভাবে বাড়তে থাকে কবুতরের সংখ্যা। এখন তা বেড়ে তিন শতাধিক এ দাঁড়িয়েছে। কবুতরগুলোকে প্রতিদিন আমি প্রায় তিন কেজি গম খেতে দেই। সেই সঙ্গে খাবার খাওয়াই কিছু কাক এবং বিড়ালকেও। এতে সব মিলে দিনে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা এবং মাসে ৫ হাজার টাকার ওপরে খরচ হয়।
বাজার করতে প্রভাষক মেফতাহুন নাহার কবিতা বলেন, কবুতরগুলো দেখতে খুব ভালো লাগছে। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে অনেক শব্দ করলেও কবুতরগুলো উড়ে যায় না। দোকানের সামনে তারা শান্তভাবে খাবার খেয়ে আবার উড়ে যায়। আমি বাজার করতে আসলে সময় পেলেই মুগ্ধ হয়ে কবুতরগুলোর খাবার খাওয়া দেখি।
বিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিপুল কুমার বলেন, পাখিপ্রেমী আশরাফুল ইসলাম নিঃস্বার্থভাবে পশুপাখিকে প্রতিদিন খাবার দেন। এটি তার প্রকৃতির প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা ও মহতী উদ্যোগ। কবুতর তো সুখের পায়রা। যেখানে কবুতর ভালোবাসা পায়, সেখানে যায়। কবুতরগুলো তার কাছে ভালোবাসা পাচ্ছে।
আজকালের খবর/ওআর