প্রকাশ: বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৩, ২:৩৪ PM
![](../2023/11/29/ak_1701246924.jpg)
গাছ আলু আঞ্চলিক ভাষায় ‘মেটে আলু কিংবা গড়ালু’ হিসেবেই পরিচিত। এক সময় বসতভিটার আনাচে কানাচে ও আশপাশের ঝোপঝাড়ে এটি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত। কালের বিবর্তনে নিরাপদ এই খাদ্য এখন অনেকটাই বিলুপ্তির পথে।
তবে আশার কথা হচ্ছে বিলুপ্তপ্রায় এই গাছ আলু চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি বিভাগ। চলতি মৌসুমে নওগাঁর মান্দা উপজেলায় ১০টি প্রদর্শনী প্লটে বাণিজ্যিকভাবে এই গাছ আলুর চাষ করা হয়েছে। এই চাষে প্রতি বিঘা জমিতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন কৃষকরা।
কৃষি বিভাগের কুন্দল কর্মসূচীর আওতায় জঙ্গল কিংবা বসতভিটার সেই গাছ আলু বানিজ্যিকভাবে চাষ করতে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী উপজেলার বিভিন্ন প্রদর্শনী প্লটে চাষ হওয়া এই গাছ আলুতে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন কৃষকেরা।
এরই মধ্যে এলাকার কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এসব প্রদর্শনী খেত। অনেক কৃষক তাঁদের জমিতে গাছ আলু চাষের আগ্রহ নিয়ে কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেছেন।
উপজেলার নুরুল্লাবাদ গ্রামের কৃষক আসলাম হোসেন বলেন, এক সময় গাছ আলু বসতভিটাসহ আশপাশের বনে জঙ্গলের পরিত্যক্ত গাছে ও বাঁশঝাড়ে লতানো আকারে জন্মাতো। খাদ্য হিসেবে মানুষের কাছে তেমন পরিচিতি ছিল না। তবে কিছু মানুষ এগুলো আগুনে পুড়িয়ে, অনেকে আবার রান্না করে খেতেন।
গাইহানা গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘কৃষি বিভাগের ব্যবস্থাপনায় আমি ২৩ শতক জমিতে গাছ আলুর চাষ করেছি। জমিতে বীজ আলু, সার, পরিচর্যাসহ আনুসাঙ্গিক খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। এই চাষ থেকে গাছের ওপরে কমপক্ষে ৩৫ মণ এবং মাটির নিচে আরও ১০ মণ আলু উৎপাদিত হবে। বর্তমান বাজার অনুযায়ী প্রতি মণ পাইকারী ১৬০০ টাকা হিসেবে আয় হবে ৬০ থেকে ৬২ হাজার টাকা। চাষের খরচ বাদে লাভ হতে পারে ৪৫ থেকে ৪৮ হাজার টাকা।’
জানতে চাইলে মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন বলেন, গাছ আলু মানুষের খাদ্য হিসেবে অনেক গুনগত মানের এবং পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। গাছ আলু চাষ করতে তেমন কোন ঝক্কিঝামেলা নেই। পরিচর্যাও তেমন করতে হয় না। সার ও কীটনাশকের ব্যবহার নেই বললেই চলে। এ কারণে এটি নিরাপদ খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। স্বল্প খরচ ও পরিচর্যায় গাছ আলু চাষ করে অধিক লাভ করা সম্ভব।
এই কৃষি কর্মকর্তা আরো বলেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী এ উপজেলায় অনেক কৃষক গাছ আলু চাষে এগিয়ে এসেছেন। কৃষকেরা এ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করলে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করবে কৃষি বিভাগ।
আজকালের খবর/এসএইচ