নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দিনটা পুরোপুরি বাংলাদেশের হতে পারতো। কিন্তু তৃতীয় সেশনে বেশ কিছু উইকেট হারানোর খেসারত দিতে হলো স্বাগতিকদের। তারপরও লেট অর্ডারের ব্যাটিং দৃঢ়তায় দিন শেষে ৯ উইকেটে ৩১০ রান নিতে পেরেছে বাংলাদেশ। সিলেটের উইকেটের যে অবস্থা তাতে করে প্রথম ইনিংসে চারশো রান করার আক্ষেপে পুড়তে হতে পারে নাজমুল হাসান শান্তর দলকে। এখন দেখার অপেক্ষা বুধবার দিনের শুরুতে কত রান স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পারেন তাইজুল-শরিফুল।
প্রথম দিনে উইকেটে যেমন টার্ন হচ্ছে, বোঝা যাচ্ছে পরের দিনগুলোতে স্পিনারদের আধিপত্য থাকবে। মঙ্গলবার বাংলাদেশের নয় উইকেটের সাতটিই তুলে নিয়েছেন কিউই স্পিনাররা। এই কারণে প্রথম ইনিংশে চারশো রান করতে পারলে সিলেট টেস্টে চালকের আসনে থাকা যেত। যদিও বাংলাদেশের হাতে এখনও একটি উইকেট আছে। তাইজুল-শরিফুল দৃঢ়তা দেখাতে পারলে চারশো না হোক অন্তত সাড়ে তিনশোর মতো রান স্কোরবোর্ডে জমা হলে মন্দ হবে না।
মঙ্গলবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ১৩তম অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হয়েছে শান্তর। অধিনায়ক হিসেবে টস ভাগ্যেও জিতেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই টস জিতে ব্যাটিংয়ের নেয় স্বাগতিক দল। বাংলাদেশের দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান মিলে দারুণ শুরু পেয়েছিলেন। সব কিছুই ঠিকমতো হচ্ছিল। ১৩তম ওভারে এজাজ প্যাটেলের বলে জাকির বোল্ড হলে ভাঙে ওপেনিং জুটি। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে জয় ও শান্ত প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছেন।
ক্রিজে গিয়ে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দেন শান্ত। নিজের রানের খাতা খোলেন ছক্কা মেরে। বাঁহাতি স্পিনার এজাজের ওপর-ই বেশি আক্রমণ করেন তিনি। কিউই এই স্পিনারের বলে তিনি তিনটি ছক্কা ও দুটি চার মেরেছেন। এজাজের ওপর শান্তকে চড়াও হতে দেখে গ্লেন ফিলিপসকে আক্রমণে আনেন টিম সাউদি। বোলিংয়ে এই পরিবর্তন তাদের এনে দেয় সাফল্য। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই দলকে উইকেট এনে দেন পার্টটাইম অফ স্পিনার ফিলিপস। ফিলিপসের ফুল টস ডেলিভারি ক্রিজ ছেড়ে উড়িয়ে খেলতে গিয়ে তালুবন্দী হন কেন উইলিয়ামসনের হাতে। তাতে ভাঙে ৫৩ রানের জুটি। এরপর সিলেট টেস্টের প্রথম সেশনে দুই উইকেট হারানো বাংলাদেশকে টানছিলেন মুমিনুল ও জয়। দুজনে যোগ করেন ৮৮ রান। দ্বিতীয় সেশনের শেষ বেলায় এসে এই দুই সেট ব্যাটার আউট হলে পথ হারায় বাংলাদেশ।
প্রথম দুই উইকেট হারানোর পর দারুণ ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন মুমিনুল হক ও মাহমুদুল হাসান জয়। তাদের বিদায়ের পরই মূলত ছন্দটা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় স্বাগতিকরা। জায়গা বানিয়ে কাট শট খেলতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন মুমিনুল। ৪টি চারে ৭৮ বলে ৩৭ রান করে ফেরেন সাবেক টেস্ট অধিনায়ক। এরপর স্কোরবোর্ডে আর ৪ রান যোগ হতেই দলের সর্বোচ্চ স্কোরার জয়ও সাজঘরে ফেরেন। ১৪ রানের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। ১৬৬ বলে ১১ চারে নিজের ৮৪ রানের ইনিংসটি সাজান এই ওপেনার।
মুমিনুল-জয়ের বিদায়ের পর দায়িত্ব পড়েছিল অভিজ্ঞ মুশফিকের কাঁধে। কিন্তু কয়েক দফা স্লগ সুইপ করতে গিয়ে আউট হতে হতে বেঁচে যাওয়া মুশফিক ভুল থেকে কিছুই শিখলেন না। আউট হয়েছেন ১২ রানে। এছাড়া অভিষিক্ত শাহাদাত হোসেন দিপু ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েও থেমেছেন ২৪ রানে। শেষ দিকে মেহেদী হাসান (২০), নুরুল হাসান সোহান (২৯), নাঈম হাসান (১৬) এবং তাইজুলের অপরাজিত ৮ ও শরিফুলের ১৩ রানের সুবাদে বাংলাদেশ ৩১০ রান সংগ্রহ করে প্রথম দিন শেষ করতে পারে।
আজকালের খবর/বিএস