প্রকাশ: সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৩, ৬:৪০ PM আপডেট: ২০.১১.২০২৩ ৬:৪৫ PM

অপহরণের ১২ দিন পার হয়ে গেলেও এখনো ফেরেনি অপহৃত রাসেল। প্রশাসনের উদ্ধার তৎপরতা থাকলেও সন্ধান মিলছে না সফিকুল ইসলাম রাসেলের। কি ঘটেছে তার ভাগ্যে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তার পরিবার ও স্বজনরা। এ ঘটনায় আজ সোমবার সকালে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ ও রাসেল মুক্তি পরিষদ। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাসেলের মুক্তির দাবি জানিয়ে শহরের মূল পয়েন্ট শাপলা চত্বরে সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করে তারা।
সমাবেশ থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা কঠোর হরতাল পালনের ঘোষণা দেয় সংগঠন দুটি। একই সঙ্গে অপহৃত রাসেলকে ফিরিয়ে না দিলে বুধবার তিন পার্বত্য জেলায় ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। পরে আরো কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেয় সংগঠনগুলো।
চলতি মাসের ৯ নভেম্বর আটমাইল এলাকা থেকে নিখোঁজ হন রাসেল। বাগান দেখানোর কথা বলে তাকে অপহরণ করা হয়ে থাকতে পারে বলে পরিবার সূত্র জানায়। মূলত বাগান দেখার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হন গাছ ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম রাসেল।
এরপর আর ঘরে না ফেরায় বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ-খবর নেওয়ার এক পর্যায়ে তার পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করলে ভাইকে ফিরে পেতে দাবিকৃত অর্থ দেওয়ার পরও রাসেলকে ফিরিয়ে দেয়নি দুষ্কৃতকারীরা। অপহরণের দীর্ঘ ১২ দিন পার হয়ে যাওয়ায় তার পরিবারের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাসা বেঁধেছে। দুশ্চিতায় দিন কাটাচ্ছে রাসেলের পরিবার।
অপহৃত রাসেলের ভাই রাজিব জানান, প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও এখন পর্যন্ত কোনো সন্ধান দিতে পারছে না তার ভাইয়ের। থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। তাই প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় তার ভাইকে সুস্থভাবে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানান অপহৃত রাসেলের ভাই রাজিব।
এদিকে অপহরণের প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবিতে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে রাসেলকে অক্ষত অবস্থায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তির দাবি জানিয়ে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার পর ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
এ ঘটনার জন্য ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণাধীন আঞ্চলিক সংগঠনকে তার পরিবারের পক্ষ থেকে দোষারোপ করলেও তা অস্বীকার করেন সংগঠনের নেতারা। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ ও আতঙ্ক। অপহৃত রাসেলকে খাগড়াছড়ির কল্যাণপুরের বাসিন্দাবাচ্চু মিয়ার পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী।
গত ৯ নভেম্বর দুপুরের পর খাগড়াছড়ির আটমাইল এলাকার রুচি চন্দ্র কারবারিপাড়া এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করা হয় তাকে। এর মধ্যে শফিকুলের মোবাইল থেকে ফোন করে প্রায় দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ নেওয়ার পর থেকে আর যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় অপহরণকারীরা।
এ ঘটনায় খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিখোঁজ রাসেলের উদ্ধারে কাজ করছে। তদন্ত চলমান আছে এবং অপরাধীরা ছাড় পাবে না বলে জানিয়ে রাসেলের সন্ধানে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
আজকালের খবর/ওআর