রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
জিয়ার সময় গুম-খুন ও বিনাবিচারে হত্যা শুরু হয়: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী
দিনাজপুর ব্যুরো
প্রকাশ: শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৫:৩৯ PM আপডেট: ২৩.০৯.২০২৩ ৬:৫১ PM
দিনাজপুরে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যাকারী জিয়ার গুম-খুন ও খালেদা জিয়ার অগ্নিসন্ত্রাসের ভূলুণ্ঠিত মানবাধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘মায়ের কান্না’ সংগঠনের উদ্যোগে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা সংসদ সদস্য নাহিদ এজাহার খান। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম মোজাম্মেল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রংপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি,  একুশে পদকপ্রাপ্ত মানবাধিকার কর্মী এসএম আব্রাহাম লিংকন, দীপ্ত টিভির সিইও ফুয়াদ হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতুফুজ্জামান মিতাসহ ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।

আলোচনা সভার পূর্বে গণদাবি-৭৭ এবং অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ নামক দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা নাহিদ এজাহার খান এমপি।

বক্তারা তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ১৯৭৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হাজার হাজার সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যকে হত্যা করে তাদের লাশ গুম করে। বক্তারা অন্যায়ভাবে ফাঁসি, কারাদণ্ড ও চাকরিচ্যুত করার অপরাধে খুনি জেনারেল জিয়ার মরণোত্তর বিচারের দাবি জানান।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল বলেন, কিছু দেশ আমাদের মানবতা ও মানবাধিকারের কথা বলে। কিন্তু ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল তখন কোথায় ছিল মানবতা?
তিনি জিয়াউর রহমানকে ‘খুনি’আখ্যায়িত করেন এবং তার সময় ‘গুম, খুন ও বিনা বিচারে হত্যা শুরু হয়’উল্লেখ করে বলেন, তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশে খুনের রাজনীতি শুরু করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২১ বার হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন। 

ট্রুথ কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতা এবং ১৯৭৭ সালে সেনা ও বিমান বাহিনীর গর্বিত সৈনিকদের হত্যাকারীদের মরণোত্তর বিচারের দাবি জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী। এছাড়া অবৈধ গুম ও খুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এ সরকারকে আহ্বান জানান তিনি।

‘গুম, খুন ও অগ্নি সন্ত্রাসকারী দল’যাতে করে আগামীতে আর কখনো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য সকলকে সজাগ থাকারও আহ্বান জানান আ ক ম মোজাম্মেল হক।

বিশেষ অতিথি হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি বলেন, খুনের রাজনীতি শুরু করেছেন জিয়াউর রহমান তার পথ ধারে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দেশে খুন, অগ্নিসন্ত্রাস, অরাজকতা সৃষ্টি চালিয়ে দেশকে অকার্যকর করার অপচেষ্টা চালিয়েছে।

জাতীয় সংসদ এলাকা থেকে জিয়ার কবর অন্যত্র সরানোর দাবি জানিয়ে সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা নাহিদ এজাহার খান এমপি  বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস, হত্যা, মানুষ পুড়িয়ে হত্যার দায়ে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় আনার দাবি জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে আগত ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা বলেন, বিদ্রোহ দমনের নামে ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান এক হাজার ১৫৬ জন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করে। জিয়ার মরণোত্তর বিচার ও সংসদ ভবন এলাকা থেকে তার কবর অপসারণের দাবি জানান।ভুক্তভোগীরা আরো বলেন, ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ঢাকায় জাপানি বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পরিকল্পিতভাবে একটি অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তৈরি করেন। পরবর্তী সময়ে তথাকথিত বিদ্রোহ দমনের নামে জিয়াউর রহমান একদিনের সামরিক আদালতে বিচার করে সেই রাতেই ফাঁসি সম্পন্ন করেন নিরপরাধ সামরিক সদস্যদের। রাতের আঁধারে কারফিউ দিয়ে ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর ও বগুড়া কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি কার্যকর করা হতো।

আজকালের খবর/ওআর