প্রকাশ: শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৮:০১ PM
কুষ্টিয়ার খাজানগরে যুবলীগ নেতাকে ডেকে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার মারধরের সময় পুত্রকে বাঁচাতে গিয়ে হামলা শিকার হয়ে দুটি দাঁত হারালেন যুবলীগ নেতার পিতা। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ৪নং বটতৈল ইউনিয়নের খাজানগরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় যুবলীগ নেতা ১৪ই সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়িক প্রতিহিংসার কারণে খাজানগর ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামকে একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা ও কৃষক লীগ নেতা বেশ কিছুদিন ধরে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। এরই একপর্যায়ে ঘটনার দিন ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে ৪নং বটতৈল ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামকে ডেকে নেন ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান ও সাবেক কৃষক লীগ নেতা সাইদুর রহমান। পরে তাকে ঘরের মধ্যে নিয়ে মিজানুর ও সাইদুর রহমানসহ পাঁচ-ছয়জন শফিকুলকে লোহার রড ও বাটাম দিয়ে মারধর শুরু করে গুরুতর আহত করে। পরে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন টের পেয়ে শফিকুলের পিতা বারেক শেখকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুত্রকে বাঁচাতে দ্রুত সেখানে ছুটে আসেন পিতা বারেক শেখ। এ সময় তাকেও বাটাম দিয়ে পিটিয়ে মেরে আহত করে এবং এক পর্যায়ে তার দুটি দাঁত ভেঙে যায়। পরে আশপাশের লোকজন দ্রুত উদ্ধার করে দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
এ ব্যাপারে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, শফিকুল আমার প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজার ছিল। সে দুর্নীতি করেছে। অনেক টাকা-পয়সার ঘাপলা করেছে। যে কারণে তাকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তাকে অল্প মারধর করা হয়েছে। তার বাবাকে কেউ মারধর করেনি। তিনি ওই সময় ঠেকাতে গিয়ে তার নিজের হাতের আঘাতে দাঁত পড়ে গেছে। সাবেক কৃষক লীগ নেতা সাইদুর রহমান বলেন, শফিকুল ইসলামকে ব্যবসায়ী প্রতিহিংসা বা রাজনৈতিক কোনো কারণে মারধর করা হয়নি। চাকরি করতে এসে সে দুর্নীতি করেছে তা অস্বীকার করায় তাকে হাল্কা মারধর করে স্বীকার করানোর চেষ্টা করা হয়। সে সময় তার পিতা ঠেকাতে গিয়ে আঘাত পেয়েছে। এই শফিকুল সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শী এবং এলাকাবাসী আরো ভালো বলতে পারবে। স্থানীয় কয়েকজন জানান, টাকা-পয়সা লেনদেন নিয়ে শফিকুল ইসলামের সঙ্গে বিরোধকে কেন্দ্র করে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। তবে শকিকুল ইসলাম এর বৃদ্ধ বাবাকে মারধর করে আহত করা এবং তার দাঁত ভেঙে দেওয়া উচিত হয়নি।
ঘটনার বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত চলছে, প্রকৃত ঘটনা জানার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বটতৈল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রমজান আলী দেওয়ান বলেন, আমাকে কেউ এখনো মারামারির কথা বলেনি, আপনার মুখেই শুনলাম। জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বটতৈল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ মমিন মণ্ডল বলেন, এই ঘটনাটি সম্পূর্ণ তাদের ব্যক্তিগত। সবারই দলের পদ থাকাই তৃতীয় পক্ষ ঘটনাটা আওয়ামী লীগের দলীয় ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করছে। যেহেতু তাদের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব তাই দলের স্বার্থে আমরা সবাই বসে সমাধানের চেষ্টা করবো ইনশাহআল্লাহ।
বটতৈল ইউনিয়নের আলোচিত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিন্টু ফকির বলেন, আমি ঘটনার বিস্তারিত শুনেছি তাই দল ও এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলার স্বার্থে সবাইকে নিয়ে বসে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
আজকালের খবর/ওআর