প্রথমবার ঢাকার লোকাল সিনেমায় কাজ করছেন কলকাতার বেকার নায়িকা সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবির নাম ‘ছায়াবাজ’। তাজু কামরুলের পরিচালনায় তার বিপরীতে নানাকাণ্ডে বিতর্কিত নায়ক জায়েদ খান। শুরু থেকে সবই ঠিক ছিলো কিন্তু হঠাৎ শুটিং ইউনিট নিয়ে সায়ন্তিকার অতি খবরদারির কারণে ঘটেছে বিপত্তি। এতে অখুশি প্রযোজক-পরিচালক। ফলে শুটিং ফাঁসিয়ে মাঝপথেই ফিরেছেন কলকাতায়। সেখানে গিয়ে নিজ দেশের গণমাধ্যমের কাছে শুটিং ইউনিট নিয়ে করেছেন আপত্তিকর মন্তব্য।
আনন্দবাজার সুবাদে জানা গেছে, নৃত্য পরিচালক মাইকেলকে ঘিরে নায়িকা চটেছেন। এ বিষয়ে মাইকেল এবং ছবির প্রযোজক মনিরুল ইসলাম নিজ নিজ বক্তব্য পেশ করেছেন।
খবরে বলা হয়- নৃত্য পরিচালক মাইকেল সায়ন্তিকার অনুমতি ছাড়াই হাত ধরেছেন! এখানেই তার আপত্তি। যদিও তিনি আনন্দবাজারকে বলেছেন এটাই তার ফিরে আসার আসল কারণ নয়। শুটিং ইউনিটকে তিনি অপেশাদার এবং অগোছালো বলেছেন। এগুলো ঠিকঠাক না হলে তিনি শুটিংয়ে ফিরবেন না।
আনন্দবাজার পত্রিকাকে তিনি জানালেন, নৃত্য পরিচালক মাইকেল নয়, তার চলে যাওয়ার মূল কারণ ছবির প্রযোজক। নায়িকার ভাষ্য, ‘প্রথমে অন্য মাস্টারজি এসেছিলেন নাচের দৃশ্য শুটিংয়ের জন্য। কিন্তু সেখানে টাকাপয়সা নিয়ে সমস্যার জন্য তিনি চলে যান। এর পর মাইকেল নামক বাচ্চা ছেলেটি আসে। মাইকেল আমার অনুমতি না নিয়েই হাত ধরে আমায় সরাতে গিয়েছিল। তখন আমি সকলের সামনেই বাধা দিই।’
‘তবে যাকে তিনি বাচ্চা বলছেন সেই মাইকেল তিরিশের ওপরে নৃত্যপরিচালনার অভিজ্ঞতা আছে। আর শুটিং সেটে দৃশ্য বুঝিয়ে দিতে গেলে স্পর্ষ লাগবেই এটাকে কাজের অংশই ধরে নিতে হবে। পেশাদার শিল্পীরা এটাকে সাধারণ ভেবে কাজ করেন। কিন্তু সায়ন্তিকা যেভাবে রিঅ্যাক্ট করছেন তাতে মনে হচ্ছে ঢাকার সিনেমার টেকনিশিয়ানের প্রতি তার শ্রদ্ধাবোধ নেই, এটা না থাকলে তাকে আমি অপেশাদার শিল্পী বলবো’- বলছিলেন কলকাতায় ৭০ ছবিতে নৃত্যপরিচালনার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সাইফুল ইসলাম।
ঘটনা প্রসঙ্গে মাইকেল জানান, দুপুর সোয়া দুইটায় ঘণ্টাখানেক সময় দিয়ে খাওয়ার জন্য সায়ন্তিকা-জায়েদ খানকে ছেড়ে দিই, কিন্তু তারা সেটে ফিরে পৌনে ছয়টার সময়! এটা কোনোভাবেই পেশাদারিত্বের সঙ্গে যায় না।
দুপুরের ব্রেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা সেটে না ফেরায় তাদের ঘিরে অন্যরকম আলোচনাও মিডিয়া পাড়ায় রটছে, তবে এ নিয়ে সমালোচনাকে পরিচালক গুজব বলে উড়িয়ে দেন।
এমন অবস্থায় বড় প্রশ্ন হলো, ‘ছায়াবাজ’ ছবিটির কাজ কি তবে অসম্পূর্ণই থেকে যাবে? এ বিষয়ে পরিচালক তাজু কামরুল জানিয়েছেন, নৃত্য পরিচালক মাইকেলের সঙ্গে যদি সায়ন্তিকা কাজ না করেন, তাহলে ছবির নায়ক-নায়িকাই পরিবর্তন করে ফেলবেন প্রযোজক।
অন্যদিকে সায়ন্তিকার মন্তব্য, ‘তিনি (প্রযোজক) যদি সঠিক পদ্ধতিতে কাজ করেন, তাহলে আমি নিশ্চয়ই ছবিটার কাজ শেষ করব। কিন্তু তার আগে আমাকে চিত্রনাট্য, শট ডিভিশন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জানাতে হবে।’
উল্লেখ্য, গত ৩০ আগস্ট ‘ছায়াবাজ’ সিনেমার শুটিং করতে ঢাকায় আসেন সায়ন্তিকা। তখন তাকে বিমানবন্দরে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করেন নায়ক জায়েদ খান। এরপর তারা কক্সবাজার গিয়ে অংশ নেন শুটিংয়ে। আট দিন শুটিং করে গত ৭ সেপ্টেম্বর কলকাতায় ফিরে যান সায়ন্তিকা। ফেরার আগ মুহূর্তে বিমানবন্দরেই জায়েদের সঙ্গে আরও একটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে যান নায়িকা। ‘টাইগার’ নামের সেই ছবি পরিচালনা করবেন কামরুজ্জামান রোমান, যদিও এ সিনেমার প্রযোজকের টিকিও খুঁজে পায়নি গণমাধ্যম!
আজকালের খবর/আতে