
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের মহাসচিব, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য, আগামী জাতীয় নির্বাচন- ৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন প্রত্যাশী ড. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল তার নির্বাচনী এলাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি প্রতিদিনই আসনের কোনো না কোনো এলাকায় রাজনৈতিক, সামাজিক কিংবা ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছেন। নিচ্ছেন দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের খোজ খবর। তারই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।
ফেঞ্চুগঞ্জ যুব সংঘের হলরুমে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দীন ইসকা।
এ সময় ডা. দুলাল বলেন, ‘আমি স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালি, বাঙালির রাখাল রাজা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। আমি স্মরণ করছি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ ৭৫ এর ১৫ই আগষ্টের কালো রাত্রে ঘাতকদের নির্মম বুলেটের আঘাতে আত্মদানকারী সকল বীর শহীদদের। আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি জাতীয় চারনেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী সকল শহীদদের, সম্ভ্রম হারানো মা-বোনদের। আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি বাঙালির স্বাধীনতার সঙ্গে জড়িত সব কটি যৌক্তিক আন্দোলনে আত্মহুতি দেওয়া সকল বীর শহীদদের। আমি স্মরণ করছি আমার বড় ভাই সাবেক সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা ইনামুল হক চৌধুরী বীরপ্রতীক ও সিলেট-৩ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য মরহুম মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েছ ভাইকে। আমি আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৩ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে সিলেট- ৩ আসনের অন্তর্গত দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত চষে বেড়াচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ‘দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের মাঝে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া’ ভিশন অনুযায়ী তারই নির্দেশনার আলোকে কাজ করে যাচ্ছি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার এ নির্দেশনার আলোকেই গত হওয়া শোকের মাস আগষ্টে আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৫ হাজার রোগীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসাসেবা প্রদান করি ও বিনামূল্যে ৮ লক্ষ টাকার ঔষধ প্রদান করি। এর আগেও এ ৩টি উপজেলায় বেশ কয়েকটি বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ প্রদান কার্যক্রমের আয়োজন করেছি। এছাড়াও আমি আরও বিভিন্ন মাধ্যমে অত্র উপজেলা গুলোসহ সিলেট ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় অসহায় রোগীদের আর্থিক সহযোগিতাসহ সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করেছি। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিগত বন্যায় দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের মাঝে খাদ্যসামগ্রী, রান্না করা খাবার ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ঔষধ প্রদান করি। বন্যা পরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে প্রায় শতাধিক পরিবারকে নগদ ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান প্রদান করি। এর আগে করোনা মহামারীতে সারাদেশের অসহায় লোকজনকে বিভিন্নভাবে সহযোগীতা করেছি। আপনাদের মাধ্যমেও অনেক রোগীকে সহযোগীতা করার সুযোগ আমি পেয়েছি। এছাড়াও আমার ব্যক্তিগত অর্থায়নে সিলেট বিভাগের চারটি জেলার থ্যালাসেমিয়া রোগীদের নগদ আর্থিক সহযোগীতা প্রদান করি। যা এখনো অব্যাহত রেখেছি। শীতের মৌসুমে সিলেট-৩ আসনের বিভিন্ন এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণসহ সিলেট-৩ আসনের বিভিন্ন উপজেলাসহ সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গরীব-অসহায় শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পড়ালেখার খরচ বহন করি। এছাড়াও সমাজের বিভিন্ন পীড়িত মানুষদের ভাগ্যোন্নয়নে আমার নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সিলেট-৩ আসনে অনুষ্ঠিতব্য গত উপ-নির্বাচনে আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে কাজ করেছি এবং আমার দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের কাছে মনোনয়ন লাভের জন্য আবেদন করি। দল আমাকে মনোনয়ন না দিলেও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে আমি দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিতে কাজ করেছি। আমি দলীয় মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান করে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে যোগদান করেছি। যার ছবি এবং ভিডিও আপনারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দেখেছেন। তৎকালীন সময় থেকে এখনো আমি সিলেট-৩ আসনের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছি। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার দলের সম্মানিত নেতৃবৃন্দের দোয়া ও সহযোগীতা নিয়েই আমি আমার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আমি মনে করি আমার দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন লাভের সকল যোগ্যতা আমার রয়েছে। আমি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই জনপদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এক আমূল পরিবর্তন সাধণ করতে পারবো। এই জনপদের রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট সহ সকল অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধনে আমার নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন নন-এমপিও ভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভূক্ত করে এই জনপদের শিক্ষা বিস্তারে আমূল পরিবর্তন সাধন করতে পারবো। আপনারা জানেন যে, সরকারী চাকুরীর সুবাদে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আমার নিয়মিত যাওয়া-আসাতে এসব কিছুই আমার জন্য সহজতর হয়ে গেছে। আপনাদের যেকোন দাবি-দাওয়া নিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে তা বাস্তবায়ন করার মতো সামর্থ্য আমি রাখি। দীর্ঘ চাকুরীর অভিজ্ঞতাকে পূজি করে আপনাদের উন্নয়নে আমার সবটুকু দিয়ে কাজ করে যাবো।’
ডা. দুলাল আরোও বলেন, ‘সর্বোপরী সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইনামুল হক চৌধুরী বীরপ্রতীকের সহোদর হিসেবে একথা নিশ্চিত করে বলতে পারি, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে একজন আইন প্রণেতা হিসেবে যা কিছুই আপনাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট তাতেই সর্বদা একনিষ্ঠ হয়ে আপনাদের স্বার্থ হাসিলে আপনাদের একজন সেবক হিসেবে কাজ করবো।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্য নিজ নিজ স্থানে প্রতিষ্ঠিত। আমারও পরিবারে দেওয়ার নাই, নেওয়ারও নাই।সুতরাং আমার দ্বারা আপনাদের বিন্দুমাত্র হক নষ্ট সুযোগ নাই। মতবিনিময় শেষে উনার নিজ উদ্যোগে প্রেস ক্লাবের সকল সদস্যদের বিনামূল্যে হেপাটাইটিস -বি পরিক্ষা করানো হয়।’
মতবিনিময়ের খবর পেয়ে বিভিন্ন লোকজন চিকিৎসা সেবা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আসলে উনাদেরকে পরামর্শ প্রদান করেন তিনি।
মত বিনিময়ে ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, দক্ষিন সুরমা উপজেলার আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আজকালের খবর/ওআর