মো. রুহুল আমিন, লালমোহন

ভোলার লালমোহনে প্রতি সপ্তাহে দুই দিন বসে রঙ-বেরঙের কবুতরের হাট। যেখানে মিলে নানা জাতের কবুতর। প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পৌরশহরের কামারপট্টিতে বিগত কয়েক বছর ধরে নিয়মিত বসছে এ কবুতরের হাট। হাটের দিনগুলো উপজেলার বিভিন্নস্থান থেকে আসা কবুতর প্রেমিদের পদচারণায় মুখর থাকে। এখানে কেউ কবুতর আনেন বিক্রি করতে, আবার কেউ কিনেন সাধ্যের মধ্যে পছন্দের কবুতর।
জানা যায়, লালমোহন পৌরশহরের কামারপট্টিতে বসা কবুতরের হাটে পাওয়া যায় অন্তত ১০ জাতের কবুতর। যার মধ্যে রয়েছে- কিং, ময়ুরী, চিলা, মুক্ষি, লাক্ষা, সিরাজী, লাহোরী, গিরিবাজ, ইন্ডিয়ান বোম্বাই, এবং দেশি জাতের কবুতর। এর মধ্যে জাত অনুযায়ী প্রতি জোড়া কবুতরের সর্বনিম্ন দাম ৪০০ এবং সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা রয়েছে।
উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের নাজিরপুর এলাকার আব্দুল মালেক। তিনি বিগত কয়েক বছর ধরে কবুতর পালছেন। পৌরশহরের কবুতরের হাটে তিনি দুই জোড়া দেশি জাতের কবুতর বিক্রি করতে নেন। যার দাম দিয়েছেন ১২০০ টাকা। তার ওই এক জোড়া কবুতর ৯০০ টাকায় কিনে নেন এক ব্যক্তি।
লালমোহন পৌরসভার ওয়েস্টার্নপাড়া এলাকার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রাফি। হাটে আসেন কবুতর কিনতে। রাফি জানান, শখের বশে বাড়িতে কবুতর পালছি। বর্তমানে ১০ জোড়া কবুতর আছে। হাটে এসেছি নতুন করে আরো এক জোড়া কবুতর কিনতে।
পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড থেকে ৪ জোড়া কবুতর বিক্রি করতে হাটে আনেন মো. হাছনাইন নামের এক যুবক। তিনি বলেন, আমার কাছে কয়েক জাতের কবুতর রয়েছে। যার মধ্যে সর্বনিম্ন এক জোড়ার কবুতর ১৫০০ টাকা আর সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা। কবুতর একটি বাড়তি আয়ের উৎস। এ জন্য দীর্ঘদিন ধরেই কবুতর পালছি।
এদিকে লালমোহনের এই হাটে কবুতর কিনতে আসেন মো. আমির নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, খুব সহজে কবুতর পালন করা যায়। তাই পার্শ্ববর্তী লোকজনের দেখাদেখি নতুন করে কিছু কবুতর পালা শুরু করবো। এ জন্য লালমোহনের এই হাটে এসেছি কবুতর কিনতে।
লালমোহন কবুতর হাটের ইজারাদার মো. নাছির উদ্দিন জানান, প্রতি সপ্তাহে দুই দিন এখানে কবুতরের হাট বসে। প্রতি হাটে ৭০-৮০ জোড়া কবুতর বিক্রি হয়। টাকার হিসেবে সপ্তাহের দুই হাটে যার পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার টাকা। যেখান থেকে আমরা শতকরা ৮ টাকা হারে ইজারা নিয়ে থাকি।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. লোকমান বলেন, কবুতরকে বলা হয় শান্তির প্রতীক। সঠিকভাবে কবুতর পালন করলে কম পরিশ্রমে অধিক লাভবান হওয়া যায়। কবুতর পালতে গিয়ে কারো কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের দায়িত্বরত ব্যক্তিরা সব সময় তাদের পাশে থাকবে।
আজকালের খবর/ওআর