টানা সাত ঘণ্টা ধরে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানোর পর কর্মসূচি থেকে সরে গেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সিজিপিএর শর্ত শিথিল করে তিন বিষয় পর্যন্ত মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিয়ে পরবর্তী বর্ষে যাওয়ার সুযোগ চেয়ে আজ রবিবার বেলা ১২টার দিকে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেন একদল শিক্ষার্থী। একপর্যায়ে গরমের কারণে ৮ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে ২৯ অগাস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করে রাস্তা ছেড়ে দেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারীদের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাকা কলেজের রুবেল মাহমুদ বলেন, “অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। মানোন্নয়নের বিষয়ে আগামী ২৯ অগাস্ট প্রধান সমন্বয়কের সঙ্গে সাত কলেজের অধ্যক্ষদের একটি মিটিং রয়েছে। মিটিং শেষে পজিটিভ রেজাল্ট না আসলে আমরা আবারও কঠোর আন্দোলনে যাব।”
জানতে চাইলে সরকারি সাত কলেজের সমন্বয়ক অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য্য বলেন, “তাদের একটি দাবি ছিল তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার জন্য সময় কম। তাই আজকে নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আপাতত তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। পরবর্তীতে সেটা জানানো হবে।”
ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া এও বলেন, “প্রমোশনের বিষয়টা নিয়ে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। আগামী পরশু দিন আমাদের মিটিং আছে। আমরা আশা করছি, সেই মিটিংয়ে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে আসব।”
এদিকে অবরোধ কর্মসূচির কারণে মিরপুর রোডের সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে আজিমপুর এবং আজিমপুর থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি অভিমুখী সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দেওয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো শিক্ষার্থীকে প্রথম বর্ষ থেকে দ্বিতীয় বর্ষে যেতে ন্যূনতম সিজিপিএ ২, দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় বর্ষে সিজিপিএ ২.২৫ এবং তৃতীয় থেকে চতুর্থ বর্ষে যেতে সিজিপিএ ২.৫ পেতে হবে। তা না হলে ওই শিক্ষার্থীকে আবারও আগের বর্ষে থাকতে হবে।
সিজিপিএর এই শর্ত শিথিল করে তিন বিষয় পর্যন্ত মানোন্নয়ন পরীক্ষা নিয়ে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশনের দাবিতে গত তিন মাস ধরে আন্দোলন করছেন সাত কলেজের স্নাতকের ২০১৭-২০১৮, ২০১৮-২০১৯, ২০১৯-২০২০ ও ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী ওসমান গণি বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে পরবর্তী বর্ষের প্রস্তুতি নিয়েছি এবং ইনকোর্স ও টেস্ট পরীক্ষা সম্পন্ন করেছি। অনেকের ফল খারাপ হয়েছে। অর্থাৎ প্রমোশনের জন্য নির্ধারিত সিজিপিএ ২ পাননি। তাই আমরা নির্ধারিত সিজিপিএর শর্ত শিথিল করে তিন বিষয় পর্যন্ত মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন চাই।"
আজকালের খবর/ওআর